- অনলাইন প্রতিবেদক
- ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০
বর্তমান সরকারকে ‘পুতুল সরকার’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আধিপাত্যবাদের পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা শুধুমাত্র তাদেরই এজেন্ডা এখানে বাস্তবায়িত করছে। তাদের সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করা, এটাই হবে আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে আসুন আমরা সবাই একসাথে কাজ করি।
খালেদা জিয়ার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বুধবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়া অবদানের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশনেত্রী একজন ক্যারিজমেটিক লিডার। তিনি তো ছিলেন হ্যামিলনের বংশীবাধক। লন্ডন খেকে আসলেন, রোহিঙ্গারা এসে গেছে তখন। আমরা তাকে বললাম আপনার একবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিজিট করা দরকার। তিনি রাজী হলেন। আমরা কক্সবাজারে গেলাম। পথে পথে লক্ষ লক্ষ মানুষ যাওয়ার সময়ে এবং ফেরার সময়েও।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রীকে নতুন করে উজ্জীবিত করেছে যে মানুষের তার সাথে আছে, এখনো আছে। আমার বিশ্বাস এই মানুষগুলোকে সংগঠিত করে আমরা যদি রাজপথে নামতে পারি, আমরা যদি জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে এই গণতন্ত্র বিরোধী সরাতে পারব।
বিএনপি বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রপোগান্ড শুরু হলো। আমাদের দেশে ২/৩টা প্রখ্যাত পত্রিকা তারা একই সুরে কথা বলতে শুরু করলো। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা লক্ষ্য করলাম যে, বেশ কয়েকটি দেশের ডিমপ্লোমেটরা টুইজডে ক্লাব বলে একটি ক্লাব তৈরি করলো। সেই ক্লাবে আবার একটা আন্দোলন শুরু হলো মিলিতভাবে যে যোগ্য প্রার্থীর.. । সবই একই সূত্রে গাঁথা ছিলো যে, বিএনপি যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে, স্বাধীন সার্বভৌম স্বতন্ত্র অবস্থানে আছে। এই সরকার যদি থাকে এদের প্রতিনিধিরা যদি সংসদে আসে তাহলে তাদের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ এখানে বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে না।’
‘তারই ফলোশ্রুতিতে আমরা দেখেছি, তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিভিন্ন নাটক তৈরি করেছে, বিভিন্নভাবে আমাদের এখানে ১/১১’র সেনা সমর্থিত সরকার তৈরি হয়েছে, তার পরে দেখি যে, দুই বছর সম্পূর্ণ অসাংবিধানিকভাবে সরকার নিয়ে গেছে এবং তারপরে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেছে যে নির্বাচনটা ছিলো ষড়যন্ত্রমূলক। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একবারের জন্যও মাথা নত করেননি।’ বললেন ফখরুল।
উল্লেখ্য ১/১১‘র সরকারের আমলে ২০০৭ সালে ২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এর পর থেকে এই দিবসটি বিএনপি কারাবন্দি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘১/১১ ’র সরকার দেশে বিরাজনীতিকরণের জন্য এসে্ছি্লো। দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা ও মাইনাস টুয়ের নামে মাইনাস ওয়ান অর্থাত বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করাই তাদের উদ্দেশ্য। আজকে যারা ক্ষমতায় তারা সেই ধারা্বাহিকতার সরকার।’
তিনি বলেন, মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার যেমনিভাবে গায়ের জোরে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় ছিলো, আজকের সরকারও গায়ের জোরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে এবং একই কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের অধিকার হরণ করছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করছে এবং দেশকে একটা অন্ধকার গহবরে ফেলে দিয়েছে। এর ধরাবাহিকতায় দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে যেতে হয়েছে। এটা ষড়যন্ত্রের অংশ, একই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজকে বিদেশে অবস্থান করছে, সেই ষড়যন্ত্রের বিএনপির নেতা-কর্মী কেউ নেই যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই। এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে দলকে সংগঠিত করে রাজপথে নামতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য রাখেন। এসময় লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাথে যুক্ত ছিলেন।