ত্যাগী ও যোগ্যদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি
- কামাল উদ্দিন সুমন, নারায়ণগঞ্জ
- ১৪ জানুয়ারি ২০২১
গত ১০ জানুয়ারি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের পুর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি। ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান তার স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি এবং পুত্র অয়ন ওসমানকে যথাক্রমে ১, ২ ও ৩ নং সদস্য হিসেবে রাখা হয়। শামীম ওসমানের স্থায়ী ঠিকানা ফতুল্লা হওয়ার এবং সম্মানস্বরূপ কমিটিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া রাজনীতিতে তার স্ত্রী ও পুত্রকে আনুষ্ঠানিক পদ দেয়া হয় এই প্রথম।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিতে বুধবার আবেদন করেন তিনি।
বিষয়টি বুধবার রাতে নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত ৷
তারা জানান, এমন চিঠি দিয়ে শামীম ওসমান ও তার পরিবার আবারো মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। শামীম ওসমান প্রমাণ করেছেন ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি কতটা আবেগ ধারণ করেন। আমরা তার এ আবেগকে সম্মান জানাই। তবে বিষয়টি আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের পর প্রকাশ পায় ওই কমিটির ১নং থেকে ৩নং কার্যকরী সদস্যের তালিকায় রয়েছেন শামীম ওসমান, তার স্ত্রী ও জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী সালমা ওসমান লিপি ও জ্যেষ্ঠ সন্তান ইমতিনান ওসমান অয়ন।
এর পরপরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে রাজনীতিতে শামীম ওসমানের স্ত্রী ও পুত্রের আনুষ্ঠানিক অভিষেক হওয়া অনেক ইতিবাচক ভাবে নেন।দলীয় পদ ছাড়াও লিপি ওসমান ও অয়ন ওসমান অনেক সামাজিক কল্যাণমুলক কাজ করে আসছেন।
তবে শামীম ওসমান চাচ্ছেন না এ মুহূর্তে তার পরিবারের সদস্যরা সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত হন।
তবে বুধবার ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগকে দেয়া শামীম ওসমানের ওই চিঠিতে কার্যকরী সদস্য হিসেবে তিনিসহ স্ত্রী ও ছেলের নাম রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি লিখেছেন, ‘আমি ও আমার পরিবার মনে করছি, ফতুল্লা থানা এলাকায় আমাদের চেয়েও ত্যাগী, যোগ্য ও রাজপথের অসংখ্য সক্রিয় নেতাকর্মী রয়েছেন। যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে আমাদের মাতৃতুল্য জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য লড়াই করছেন। আমরা মনে করি, ওই তিনটি কার্যকরী সদস্য পদে আমাদের পরিবর্তে উল্লেখিত ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে আপনারা তিনজনকে নির্বাচন করে তাদের মূল্যায়িত করলে আমরা আরও বেশি আনন্দিত হব।’
শামীম ওসমান এমপি জানান, ‘কর্মীরাই দলের প্রাণ। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন- আমাদের চেয়েও যোগ্য ও ত্যাগ শিকার করা বহু নেতাকর্মী রয়েছেন, যাদের মূল্যায়ন করা উচিত।’
জানা গেছে, শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম। প্রত্যক্ষ রাজনীতি না করলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় রয়েছেন তিনি।
অপরদিকে আওয়ামী লীগে কোনো পদে না থেকেও বিভিন্ন সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আলোচিত হয়েছেন শামীম ওসমানের স্ত্রী সালাম ওসমান লিপি। বিশেষ করে করোনাকালে তার কল্যাণমূলক ভূমিকা উঠে এসেছে জাতীয় গণমাধ্যমেও।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ওসমান পরিবারের বর্ণাঢ্য ইতিহাস রয়েছে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে এ পরিবারটির অবদান ছিল অবিস্মরণীয়।
শামীম ওসমান ১৯৯৬, ২০১৪ এবং সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।