ঢাকা
চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পাওয়ার আগেই বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার কিছু সংস্কারে হাত দিয়েছে। আর এসব সংস্কারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আইএমএফের সফররত উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ। মৌলিক এসব সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিও আইএমএফের ডিএমডি গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাতটায় আইএমএফের ডিএমডি অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহর সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ কথা বলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বা আইএমএফের ডিএমডি কেউ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।
সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কী সংস্কারে হাত দিয়েছে, যাতে আইএমএফ সমর্থন করছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈঠকে অংশ নেওয়া সূত্রগুলো জানায়, ভর্তুকি কমাতে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির চিন্তাও রয়েছে সরকারের। রিজার্ভের গণনাপদ্ধতি আইএমএফের চাওয়া অনুযায়ী করা হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম মাসে মাসে সমন্বয় করার ঘোষণাও দিয়েছে সরকার।
এসব কাজে আইএমএফ খুশি। তবে সংস্থাটি আরও চায় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব আয় সন্তোষজনক পর্যায়ে বাড়ুক এবং খেলাপি ঋণ কমুক। কিস্তি দেওয়ার সময় এ ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপগুলো বিবেচনায় রাখবে আইএমএফ।
বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতির সাম্প্রতিক গতি-প্রকৃতি এবং বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বিশদ আলোচনা হয়েছে। বৈশ্বিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সুদের হার বৃদ্ধি, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর করণীয় বিষয়ও উঠে আসে আলোচনায়।
বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে আইএমএফ যে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ দিতে প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছে, বৈঠকে এ জন্য সংস্থাটির প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। আইএমএফ থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য এরই মধ্যে কিছু সংস্কারকাজে হাত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। আর এগুলোকে সমর্থন করছে আইএমএফ। অর্থমন্ত্রী এ সমর্থনের জন্যও আইএমএফকে ধন্যবাদ জানান। বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সম্পদের পর্যাপ্ত সংকুলান নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে বরাবরের মতো আইএমএফসহ সব উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ।