রাকিব হাসনাত , বিবিসি বাংলা, ঢাকা ।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা আইএমএফ’র দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় পেতে সংস্থাটি বাংলাদেশকে যেসব শর্ত দিয়েছিলো তার মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্তই বাংলাদেশ পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ নির্ধারিত সময়ে না পেলে দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরও জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যদিও সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশাবাদী যে যেসব কারণে দুটি খাতে শর্ত পূরণ হয়নি সেগুলো পর্যালোচনার পর আইএমএফ’র দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেতে সমস্যা হবে না।
গুরুত্বপূর্ণ দুটি শর্ত ছিলো- সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ অন্তত ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের নেট রিজার্ভ থাকা এবং অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায় অন্তত ৬১ হাজার কোটি টাকা হতে হবে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই স্বীকার করেছে যে এসব বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ।
এমনি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ ছাড় দেয়ার আগে পর্যালোচনা করতে ঢাকায় এসেছে আইএমএফ এর একটি মিশন এবং বুধবার তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে বৈঠক করেছে।
বৈঠকের পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, “বেশ কিছু বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অর্জন থাকলেও দুটি বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে— নির্ধারিত রিজার্ভ সংরক্ষণ ও নির্ধারিত হারে ট্যাক্স রেভিনিউ অর্জন। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে আইএমএফ মিশনকে অবহিত করা হয়”।
আইএমএফ এর এই দলটি দুই সপ্তাহ বাংলাদেশে থেকে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক শেষে ১৯শে অক্টোবর সমাপনী সভায় অংশ নিয়ে ফিরে যাবে। এরপর তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই সংস্থাটি ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য পূরণের শর্ত দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছিলো সংস্থাটি এবং ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার ফেব্রুয়ারিতে পেয়েছিলো বাংলাদেশ।
কিন্তু এখন গুরুত্বপূর্ণ দুটি শর্ত পূরণ না হওয়ার কারণে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
যদিও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সম্প্রতি বলেছেন মূল্যস্ফীতির চাপ ও রিজার্ভ সংকট উত্তরণে আর্থিক খাতের দরকারি সংস্কার নির্বাচনের পর নতুন সরকার করবে। তবে আইএমএফ-র ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে কোন বাধা নেই বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি।
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর অবশ্য বলছেন, “বাংলাদেশ নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে সময় চাইলে আইএমএফ-র দিক থেকেও পাল্টা বক্তব্য আসতে পারে। তারা হয়তো বলতে পারে যে ঠিক আছে তাহলে নতুন সরকার আসার পরে সিদ্ধান্ত হোক,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
তবে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলছেন, “তবে আমার ধারণা দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ সংস্থাটি আটকে দেবে-এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা কম”।
যদিও অর্থনীতিবিদ গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন কোন কারণে কিস্তির অর্থ পিছিয়ে গেলে সেটি জ্বালানি খাতে বড় প্রভাব ফেলবে, পাশাপাশি পণ্য সরবরাহ ও মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আইএমএফ-এর চাওয়া
ঋণ পেতে আইএমএফ-এর চাপে পড়ে গত বছরের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী দেশে প্রথমবারের মতো প্রকৃত রিজার্ভ কত আছে সেটি প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সে হিসেবে দেশে তখন রিজার্ভ ছিল ২৩. ৫৬ বিলিয়ন ডলার।
অথচ করোনা মহামারির মধ্যেই ২০২১ সালের অগাস্টে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উন্নীত হয়েছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলারে। কিন্তু এরপর থেকে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমেই আসছে এবং রিজার্ভ ধরে রেখে বাড়ানোর জন্য সরকারের কোন উদ্যোগই কার্যকর ফল দিচ্ছে না।
সবশেষ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত সাতাশে সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ ছিলো ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। যদিও অর্থনীতিবিদদের মতে নেট রিজার্ভ এখন ১৮ বিলিয়ন ডলারেরও কম।
অথচ আইএমএফ এর শর্ত অনুযায়ী চলতি অর্থ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ রিজার্ভ থাকার কথা ২৫ বিলিয়ন ডলারের মতো।
অর্থনীতিবিদ গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন ঋণ পর্যালোচনার ক্ষেত্রে বড় বিষয় হতে পারে রিজার্ভ।
“রিজার্ভ কম এটা একটা দুর্বলতা। কিন্তু লোন রিভিউর ক্ষেত্রে দেখার বিষয় হবে রিজার্ভ আরও খারাপ পরিস্থিতি বা পতনের দিকে যাবে কী-না। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সুনির্দিষ্ট নিশ্চিয়তা দিতে হবে যা রিজার্ভের পতন ঠেকানো নিশ্চিত করবে,”বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
তবে এর মধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সংস্থাটির কাছে সময় বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া বুধবারের বৈঠকেও রিজার্ভ ধরে না রাখতে পারার কারণ তুলে ধরে বাড়তি সময় চাওয়া হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রগুলো জানিয়েছে।
যদিও রিজার্ভ নিয়ে সরকারের কিছু নীতির সঙ্গে আইএমএফ-র অবস্থান নিয়ে আগে থেকেই মতভেদ রয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
বিশেষ করে রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ বিভিন্ন তহবিলে যে অর্থ দিয়েছে সরকার সেগুলোর পাশাপাশি পায়রা বন্দর ও উড়োজাহাজ কিনতে বাংলাদেশকে বিমানের জন্য যে অর্থ দেয়া হয়েছে সেগুলো রিজার্ভের হিসেব থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে অনড় রয়েছে আইএমএফ।
ঢাকায় এখন আইএমএফ মিশনের কাছে এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান আগেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে রিজার্ভসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের কাজটি করবে সামনের নির্বাচনের পর গঠিত সরকার।
সরকারি বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে এখন আইএমএফ মিশনকে বোঝানো হচ্ছে যে বাংলাদেশের এখন মূল ব্যস্ততা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে। আর দুটি খাতে শর্ত পূরণ না হলেও অনেকগুলো খাতে শর্ত পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। সেগুলো বিবেচনায় নিয়েই দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করার অনুরোধ করছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় কিস্তি পেতে সমস্যা হবে ?
অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন মনে করেন, রিজার্ভ ও রাজস্ব আহরণসহ অনেকগুলো বিষয়ে লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হলেও ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
যদিও মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট মোকাবেলা, খেলাপি ঋণ এবং জ্বালানি তেলের দাম ছাড়াও চলতি সফরে আরও যেসব বিষয়ে আইএমএফ-এর উদ্বেগ আছে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের সাথে।
বিশেষ করে সংস্থাটির সাথে জ্বালানি তেলের বিশেষ করে বিপিসি যেসব জ্বালানি বিক্রি করে সেগুলোর দাম নির্ধারণের জন্য একটি ফর্মুলা ঘোষণা করার কথা থাকলেও বাংলাদেশ এখনো তা করতে পারেনি। এ নিয়ে আইএমএফ এর মধ্যেই তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
“এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আবার কিছু ক্ষেত্রে নেয়া পদক্ষেপ সঠিক ছিলো না। ডলারের দাম বাজার ভিত্তিক হয়নি। খেলাপি ঋণ নিয়েও উদ্বেগ আছে আইএমএফ-এর,” বলছিলেন মি. হোসেন।
এখন উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষ যেসব বিষয়ে লক্ষ্য অর্জিত হয়নি আর যেসব বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার পদক্ষেপ নিতে পারেনি সেগুলো নিয়ে নতুন পরামর্শ আসতে পারে আইএমএফ-এর দিক থেকে।
মি. হোসেন বলছেন, “এখন তারা হয়তো বলবে তোমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারোনি। তোমাদের পলিসি কাজ করেনি। সুচিন্তিত পদক্ষেপ না। তারা অনেক উদ্বেগ প্রকাশ করবে। তাগিদ দিবে। কিন্তু মনে হয় না দ্বিতীয় কিস্তি আটকাবে”।
আহসান এইচ মনসুর বলছেন সরকারের পদক্ষেপ ও নীতিগুলো কতটা কার্যকর হচ্ছে বা সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে কী-না বা কখন নিতে যাচ্ছে- এসব গুলো ঋণ পর্যালোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে আইএমএফ-এর কাছে।
“এসব বিষয়ে সংস্থাটি পরিপূর্ণ সন্তুষ্ট না হতে পারলে এখন কিস্তি প্রাপ্তি আটকে যাওয়াটাও অসম্ভব বিষয় নয়। যদিও বিষয়টি নির্ভর করছে বাংলাদেশ কোন বিষয়ে কী ব্যাখ্যা দেয় এবং তাদের কর্মপরিকল্পনা কী তার ওপর,” বলছিলেন তিনি।
গবেষক ও অর্থনীতিবিদ ডঃ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন রিজার্ভের ক্ষেত্রে আইএমএফ দেখতে পারে যে রিজার্ভ লক্ষ্য অর্জন না হলেও সেটি সামনে আরও কমতে পারে কী না তার ইঙ্গিত আছে কী না।
“বাস্তবতা হলো এখন রিজার্ভ স্থিতিশীলও রাখা যাচ্ছে না। বরং পতনের দিকেই আছে। তাই এটি লোন রিভিউর ক্ষেত্রে বড় বিবেচনায় থাকবে বলে মনে হয়। সেক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে আইএমএফ এমন কিছু পদক্ষেপ চাইতে পারে যাতে রিজার্ভের পতন ঠেকানোর নিশ্চয়তা পাওয়া যায়,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন মি. মোয়াজ্জেম।
‘টেনশন তৈরি হবার আশঙ্কা’
তবে তারপরেও যদি কোন কারণে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেতে বিলম্ব হয় বাংলাদেশের তাহলে জরুরি আমদানি ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরও অনেক কাটছাঁট করতে হতে পারে বা এ নিয়ে অর্থনীতিতে নতুন করে টেনশন তৈরি হতে পারে বলেও আশংকা আছে।
বিশেষ করে জ্বালানি খাতে এখন বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ১৫-২০ মিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করতে হয়। ঋণ পেতে বিলম্ব এলে জ্বালানির এই খরচ কমাতে গিয়ে লোডশেডিং আরও অনেক বাড়াতে হতে পারে।
“পাশাপাশি পণ্য আমদানি এখন যা কমিয়ে আনা হয়েছে, আইএমএফ’র অর্থ পেতে বিলম্ব হলে আরও কৃচ্ছতা দরকার হতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
বিশ্লেষকরা বলছেন পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ার উদাহরণ রয়েছে। বিশেষ করে আইএমএফ যে প্রক্রিয়ায় কাজ করে তাতে তারা তাদের প্রতিটি শর্তের ক্ষেত্রে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করে না।
প্রসঙ্গত, আইএমএফর দলটি চলতি মাসে ঢাকায় কাজ শেষ করার পর ওয়াশিংটন ফিরে গিয়ে তাদের প্রতিবেদন সংস্থার বোর্ডে উত্থাপন করবে। এরপর সেখানে তারা নিজেরা পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করবে এবং পাশাপাশি আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে এমনিতেই দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেতে ডিসেম্বর পার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
রাজস্ব আহরণে ব্যর্থতা
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তির অর্থ ছাড়ের পর থেকেই বড় আলোচনা ছিলো আইএমএফ এর শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে কি-না।
সংস্থাটির নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছর অন্তত চার লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করার টার্গেট অর্জন করতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরকে। এর মধ্যে প্রথম তিন মাসে সাড়ে ৬১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের যে প্রতিশ্রুতি ঋণ প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশ দিয়েছিলো তা অর্জনেও বেশ পিছিয়ে আছে এনবিআর।
এর আগে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিলো। সবমিলিয়ে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে এগার শতাংশ কম রাজস্ব আদায় হয়েছিলো গত বছর।
আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম তিনমাসে ৬১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের প্রতিশ্রুতি পূরণেও পিছিয়ে আছে এনবিআর।
বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য জানিয়েছে নির্ধারিত হারে ট্যাক্স রেভিনিউ অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে বুধবারের বৈঠকে আইএমএফ মিশনকে অবহিত করা হয়েছে। সফররত মিশনটির সাথে বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
তবে গণমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যেসব সংস্কারের পরামর্শ সংস্থাটি বাংলাদেশকে দিয়েছিলো সেগুলো কার্যকরে জোরালো পদক্ষেপ এখনি নির্বাচনের আগে নিতে সরকার উৎসাহী নয়।
তবে সরকারের দিক থেকে একাধিকবার সংস্থাটি আশ্বস্ত করা হয়েছে যে নির্বাচনের পর নতুন সরকার এসে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া শুরু করবে। এখন ঢাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের সময়ও একই বার্তা মিশনটিকে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।