অধিকার চাইতে গেলেই ‘রাজাকার’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের শক্তি’—এসব বলে জাতিকে অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যখনই আপনি অধিকার চাইবেন, কেউ বলবে ষড়যন্ত্র করছে, কেউ বলবে উসকানি দিচ্ছে, কেউ বলবে রাজাকার, কেউ বলবে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের শক্তি।’
আমীর খসরু যোগ করেন, এগুলোকে মূলধন করে অনেক দিন জাতিকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এগুলোকে আর মূলধন করার সুযোগ নেই। নতুন প্রজন্মের কাছে এগুলো আর গ্রহণযোগ্য নয়। নতুন প্রজন্ম সে কথাটাই বোঝাতে চাচ্ছে, সে বক্তব্যটাই দিচ্ছে।
আজ সোমবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘দেখলাম লাঠিপেটা করা হচ্ছে। ছাত্রলীগ আক্রমণ করছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বহিরাগতরা আক্রমণ করছে। এটা সারা দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে, সারা বিশ্ব দেখতে পাচ্ছে। ছাত্রলীগের হামলা ও ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
আমীর খসরু বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তাদের পরিবার আছে, তাদের আত্মীয়স্বজন আছে, বন্ধুবান্ধব আছে। সবাই কিন্তু একটি ন্যায়সংগত সমাধান আশা করছে। সেটা না করে আপনি যদি লাঠিপেটা করেন, মিথ্যা মামলা করেন, তাহলে তো সমাধান সম্ভব নয়। মূল সমস্যা হচ্ছে দখলদার সরকার। যদি নির্বাচিত সরকার থাকত, এর যৌক্তিক সমাধান খুবই সহজ হতো।’
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘আগামী দিনে আপনি বাংলাদেশকে একটি মেধাভিত্তিক দেশ গড়তে চান নাকি মেধাহীন, দলীয় লোকদের দিয়ে দেশ গড়তে চান, সবাইকে নিয়ে দেশ গড়তে চান? নাকি সংকট তৈরি করে দেশে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চান, সেটি ঠিক করতে হবে। দেশ তো কোনো গোষ্ঠীর হতে পারে না।’
কর্মসূচি বোধ করছে জনগণ
এর আগে গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়। এতে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ফারুক হাসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বিএনপির পক্ষে আমীর খসরু ছাড়াও দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল মঙ্গলবার গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক হবে।
গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠকের পর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, চরম দুর্নীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চমূল্য—সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তারা কিন্তু রাজনীতিকদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে চায়।
শিগগির কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘সব কর্মসূচি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক কর্মসূচি হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কর্মসূচি পালন করব।’
গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ফারুক হাসান দেশের মূল সংকট সার্বভৌমত্বের সংকট বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে করা চুক্তিগুলোর কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা জেনেছি, আর কয়েক দিন পরে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের ট্রেন যাবে। এটাকে কীভাবে থামানো যাবে, সে ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’
prothom alo