১৮ জুন ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমদ বলেছেন, দেশবাসী ভোট, পার্লামেন্ট হারিয়েছে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন হারিয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হারিয়েছে। শেষমেশ হারাতে বসেছে জীবন ও দেশের স্বাধীনতা। যারা গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ নাগরিক স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে তারা বর্তমান মারাত্মক দুর্দিনের মধ্যে দিনযাপন করছে।
রোববার (১৮ই জুন) দুপুরে নয়া পল্টন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জনগণ কর্তৃক ধিকৃত হয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতির টালমাটাল অবস্থার সৃষ্টি করে সহিংসতা আর হত্যাকেই শ্রেষ্ঠ সমাধান হিসেবে মনে করছে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী মানুষদের বিরুদ্ধে সরকারী ক্যাডাররা এখন ‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’, ‘টার্গেট কিলিং’য়ে মেতে আছে। সন্ত্রাসকে জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি বলে মনে করছে। এরা হত্যা, জখম নিষ্পন্ন করে কয়েকদিন পর আবার আরেকটি খুন-জখমের জন্য উন্মাদ হয়ে ওঠে। অবৈধ সরকারের দুঃশাসনের প্রোডাক্ট হচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাস তাদের মানসিক-ব্যাধি।’
তিনি বলেন, ‘দুই দিন আগে জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম আওয়ামী লীগের নেতা মাহমুদুল আলম বাবু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সত্য সংবাদ প্রকাশের কারণে তাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। প্রথমে নাদিমসহ দু’জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ১৭ই মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে বাবু চেয়ারম্যান। মামলাটি আদালতে খারিজ হয়ে গেলে মাহমুদুল আলম বাবু চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথায় আঘাত করার পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। একদিকে সরকারী ক্ষমতা, অন্যদিকে উর্ধ্বতন একজন পুলিশ কর্মকর্তার ভাই হওয়ায় বাবু চেয়ারম্যান এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। মৃত্যু যেন তার কাছে খেলা।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা আগেই জানিয়েছিলাম চট্টগ্রামের তারুণ্যের সমাবেশ থেকে বাড়ি ফেরার পথে মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে নির্যাতন ও গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণের ঘটনা। সেখানে নির্যাতনের খবর পেয়ে নুসরাতের মা কোহিনুর বেগম ছুটে গেলে তাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদ হোসেন ও ডিউটি অফিসার সঞ্জয় কুমার সাহা তার অভিযোগ গ্রহণ না করে উল্টো নাদিয়া নুসরাতের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের একটি গায়েবি মামলায় তাকে জড়িত করে। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গ্রেফতার করা হয়। একটি মনুষ্যত্বহীন সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই নারীরা আজ আতঙ্কের এক ভয়াল বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বাস করছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।