You will have to agree to suffer some loss in order to get relief from robbers

Minar Rashid

ডাকাতের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে ফসলের সামান্য ক্ষতি মেনে নিতেই হবে

গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় ব্লেসিংস বা আশীর্বাদটি হলো – গণতন্ত্র শাসক শ্রেণীকে বিনয়ী করে তুলে।
অন্যদিকে গণতন্ত্র না থাকলে বা গণতন্ত্র ঠিকভাবে কাজ না করলে শাসকগণ দাম্ভিক,বেয়াদব ও বেপরোয়া হয়ে পড়ে। তখন শাসক শ্রেণীর ভাষা আর ডাকাতের ভাষায় কোন পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না।
এক গৃহস্থ নিজের গরুটি বিক্রি করতে না পেরে বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসে। সেই রাতেই বাড়িতে ডাকাত এসে হাজির । গরু বিক্রি হয় নি জেনে ডাকাত হতাশ হয়ে পড়ে। গৃহস্থকে পেটায় আর বলে, ‘ তুই গরু বিক্রি করিস নি কেন?
গৃহস্থ জবাব দেয়, দাম খুব কম ছিল।
আরো জোরে আঘাত করে ডাকাত বলে, টাকা কম পড়লে তো আমার পড়তো, তোর তো কোন ক্ষতি হতো না ? ‘

ডাকাতের কথায় মশকরা থাকলেও তাতে যুক্তি আছে।
এই ডাকাতের মতই জনগণের সাথে মশকরা করছেন বর্তমান শাসক শ্রেণী । পুলিশ দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। বালির ট্রাক দিয়ে অবরুদ্ধ করেছেন, গেইটে তালা মেরেছেন, পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করেছেন। তারপরেও মুখে বলছেন অন্য কথা। একজন ক্লাস ওয়ানের ছেলেও স্পষ্ট বুঝতে পারছে যে তাদের প্রধানমন্ত্রী ঢাহা মিথ্যে কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রীর কথা বলার ঢং আর উপরোক্ত ডাকাতের কথা বলার ঢংয়ে কোনই পার্থক্য নেই। কারন দুজনেই জানে যে তাদের কথার জবাব দেওয়ার কোন উপায় গৃহস্থ বা জনগণের নেই।
পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাটিই ডাকাতি হয়ে গেছে। এমন ডাকাতি আর কোথাও হয় নি। ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোন ভোটেরই প্রয়োজন পড়ে নি। বাকি আসনগুলিতে শতকরা ৫ জনও ভোট দিতে যায় নি। তারপরেও এই ডাকাতের ঘরের ডাকাতেরা বলেন, চল্লিশ ভাগ ভোট পড়েছে।

অন্য আরেক লুঙ্গি পড়া ডাকাত বলেছেন , বেগম জিয়া নিজের বাসা সংস্কারের জন্যে ইট বালুর ট্রাক এনে বাড়ির সামনে জড়ো করেছেন।

কাজেই কোন সন্দেহ নেই যে পুরো জাতি একটা ডাকাত দলের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে এবং ইতিহাসের এক ক্রান্তিলগ্নে এসে আমরা দাঁড়িয়েছি। বলা যায় ১৯৭১সালে গণতন্ত্রের জন্যে এই ভূ-খন্ডে যে সংগ্রামটি শুরু হয়েছিল তা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এই সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছি। এখন হয় জয়, নয় তো মৃত্যু।
১৯৭১ সালে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে কিছু সংখ্যক ডাকাত ছিনতাই করতে চেয়েছিল।আয়ূব-ইয়াহিয়া-মোনায়েম নামক সেই ডাকাতরা এদেশ থেকে বিদায় নিলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনও বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। আয়ূব- ইয়াহিয়া- মোনায়েম খানদের নাম শুনলেই এরা তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। কিন্তু মজার কথা হলো এই খাঁন সাহেবদের চিন্তা চেতনা ও মানসিক কাঠামোটিই এরা হুবহু ধারন করে আছে।

১৯৭১ সালে নির্বাচিত জন প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে কিংবা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করেছিলেন জেনারেল ইয়াহিয়া খাঁন। জনগণের রায়ে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা অর্পন করলে ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তানের অখন্ডতা হুমকির মুখে পড়তো এই ছিল তখন তাদের অজুহাত।

এখন সেই একই চিন্তা ভাবনা ভর করেছে বর্তমান শাসক গোষ্ঠির উপর। তারাও মনে করছে এদেশে উদার গণতন্ত্রকে ঠিকভাবে কাজ করতে দিলে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদ চলে আসবে। উভয় গ্রুপের চিন্তা চেতনা ও মন মানসিকতায় কী চমৎকার মিল !

আমাদের স্বাধীনতার পর পর পাকিস্তানের এক কার্টুনিস্ট একটি কার্টুন আঁকেন। তাতে দেখা যায় ইয়াহিয়া খাঁনকে একদিকে একটি মেটার্নিটি সেন্টারে ভর্তি করা হচ্ছে এবং নয় মাস পর অন্য দিক থেকে বাংলাদেশ নামক একটি শিশুর জন্ম হচ্ছে। এই কার্টুনের কারনে উক্ত কার্টুনিস্ট শাসকশ্রেণীর রোষানলে পড়েছিলেন।