Unfortunate Ziad trapped in the pipe while the entire country is trapped by BAKSAL

পাইপের চিপায় হতভাগা জিয়াদ, বাকশালের চিপায় ওর দুর্ভাগা দেশ

রানা প্লাজায় ষোল-সতের দিন আটকে থাকার পর অবিশ্বাস্যরূপে সতেজ থাকা রেশমাকে নিয়ে যখন সাংবাদিকেরা উল্টাপাল্টা প্রশ্ন শুরু করে দেন তখন এক কর্তা ব্যাক্তি ধমক দিয়ে বলেছিলেন, Don’t play foul.
যতদূর মনে পড়ে, এই ধমক খাওয়ার পর সুবোধ সাংবাদিকেরা এই অপ্রিয় বিষয়টি নিয়ে আর কোন ফাউল খেলা খেলেন নি।

এই ধরনের ধমক খেলে মানুষের মুখটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মনটি আগের মতই খোলা রয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে জনগণ আরো সন্দেহপ্রবণ হয়ে পড়ে। সে কারনেই শিশু জিয়াদের ঘটনায় অনেকেই রেশমার ঘটনার ছায়া দেখা শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে দেখা গেলো, এটি ছিল আসলেই একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা। খোলা পাইপে পড়ে গিয়ে সাড়ে তিন বছরের জিয়াদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে ।

এই দেশটির আসলেই কোন মা বাপ নেই। আমাদের জীবনের কোথাও যেন কোন ঢাকনা নেই। সর্বত্র মৃত্যুকূপ ও খোলা পাইপ আমাদেরকে গিলে খাওয়ার জন্যে হা করে আছে।

একটি পরিত্যাক্ত পাম্পের এই পাইপটির মুখটি খোলা অবস্থায় রাখা হলো কেন ? এর জন্যে কে বা কারা দায়ী? রুট কজ এনালাইসিসটি কারা করবে ?

জীবনের আটষট্টি বসন্ত পেরিয়ে সদ্য বিয়ে করা রেলমন্ত্রী তার নব বধূকে ফেলে রেখে এই পাইপের মুখে বসে থেকে পাহারা দিবেন এমন আশাও দেশবাসী করে না। তারপরেও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়।

প্রাক্তন এক মন্ত্রীর আওতাধীন শত শত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটির জেটিতে চোরা চালানের অস্ত্র খালাস হওয়ায় সেই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফাঁসীর আদেশ দেওয়া হয়েছে। কাজেই যে মন্ত্রণালয়ের গাফিলতিতে জিয়াদ আজ এই মৃত্যকূপে পড়েছে, তার আজ কী হওয়া উচিত ? ? ?

সরকারী বাহিনী অত্যাধুনিক ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে পাইপের ভেতরে টিকটিকি ও ব্যাঙ ছাড়া অন্য কিছুই খুঁজে পায় নি। অথচ উদ্ধারকাজ পরিত্যাক্ত ঘোষণার আধা ঘন্টার মধ্যেই সাধারন জনগণ সেই জিয়াদের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।

এই দেশে তাহলে সরকারের দরকার টাই বা কি?
এই চরম গাফিলতিটি কার ?
এই ছোট্ট শিশুর লাশটি দেখে মনটা আসলেই খারাপ হয়ে গেছে।
এই প্রশ্নগুলি অনেকের মনেই উথ্থিত হলেও তা কারো পক্ষেই উচ্চারন করা সম্ভব নয়। কারন হতভাগা জিয়াদের মতই ওর মাত্র সাড়ে তিন বছরের যাপিত জীবনের এই দেশটিও সত্যিই এক মাইনকা চিপায় পড়ে গেছে।
সরকার দেশের বিরোধী দলকে ছাত্রলীগ, পুলিশলীগ ও বিচারপতিলীগ দিয়ে এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। এখন সংবাদ পত্র তথা মিডিয়া বিরোধী দলের অপর পাটিও মাটির উপরে তুলে হাটার পরামর্শ দিচ্ছে।
সরকার বিরোধীদলের সমাবেশ বন্ধ করার কুমতলবে পুলিশলীগকে দিয়ে গাজিপুরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। প্রথম আলো ও কালের কন্ঠ সহ মূল ধারার সংবাদ পত্রগুলি শিরোনাম করেছে – পিছু হঠেছে বিএনপি। অথচ জাতির জন্যে আজ শিরোনামটি হওয়া উচিত ছিল – গণতন্ত্রের অশনি সংকেত বা এই ধরনের কোন শব্দ দিয়ে।

বর্তমান অবসথার প্রেক্ষাপটে এই সাংঘাতিকদের কথামতো বিএনপি পিছু না হঠে যদি সামনে এগিয়ে যেতো এবং তাতে যদি শত শত মানুষ আহত বা নিহত হতো তাহলে এরাই শিরোনাম করতো, জঙ্গীদের সহযোগীতায় বিএনপির তান্ডব। ক্ষমতার জন্যে বিএনপি পাগল হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

এই সব সাংঘাতিকদের কাছে প্রশ্ন, বিএনপি বা বিরোধী দল এখন কী করবে ? সামনে অগ্রসর হলে সেটা তান্ডব হয়ে যায় আর ধৈর্য্য ধরে বিকল্প উপায় অবলম্বন করলে টিটকারী দেয়, হেডম বা হিম্মত নেই।

অথচ সরকারের ফ্যাসিবাদি আচরনের বিরুদ্ধে এই সাংঘাতিকরা কখনই শক্তিসালী অবস্থান গ্রহন করে না। দুয়েকটা ব্যাপারে সরকারের সমালোচনা করে কিন্তু যখনই এই অবৈধ সরকারের অস্তিত্বের প্রশ্ন আসে তখন অন্ধভাবে এই সরকারকে সমর্থন করে যায়। বার বার বিরোধী দলের আন্দোলন সম্পর্কে জনগণকে এই ভাবে বিভ্রান্ত ও হতাশ করে রাক্ষস সরকারের আয়ূ বাড়াতে চায়।

এদের উস্কানীমূলক শিরোনাম দেখে মনে হয় এরা বাইরের প্রভুর ইশারায় দেশকে একটা গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। তা না হলে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদি আচরনের বিপরীতে বিরোধীদলের ধৈর্য্য ও প্রজ্ঞার প্রশংসা না করে এভাবে শিরোনাম করতো না।

এদেশের একজন অতি সাধারন নাগরিক হিসাবে সাংবাদিক সমাজের প্রতি আবেদন রাখছি , আপনারা সাংবাদিক নামক এই গুটিকয় সাংঘাতিকদের হাত থেকে এই দেশটিকে বাঁচান। নিজের চাকুরি বাঁচানোর জন্যে কিংবা অন্য কোন সামান্য লোভে এই দেশটিকে বাকশালের ভয়ানক পাইপটিতে ফেলে দিবেন না।

একটি সামান্য প্লেট ওই পাইপটির মুখে ওয়েল্ডিং করে রাখলে যেমন করে এই জিয়াদের জীবনটি আজ বিপন্ন হতো না। তেমনি বাকশাল নামক রাক্ষুসে পাইপটির মুখটি এখনও বন্ধ করে দিলে আমাদের গণতন্ত্র সেই পাইপের মাইনকা চিপায় আটকা পড়বে না।
সাংবাদিক নামের এই গুটিকয় সাংঘাতিকদের বিপরীতে দেশের সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন পাঠক গোষ্ঠী এগিয়ে আসলে এই কাজটি মোটেও কঠিন হবে না।

Minar Rashid

1 COMMENT

  1. I congratulate the author for writing about this painful event so insightfully and revealing a much bigger political crisis that has engulfed the entire nation.

    Ziad’s death and government’s total incompetence in rescuing the child and its arrogantly unkind treatment of Ziad’s father at a time when he needed compassion is a clear indication that this government is not only shamelessly useless but dangerously uncaring. What is also shocking is that nothing seems to move our Mukti-Judder Chetona inspired media and the so-called civil society – the gatekeepers of every society – to take this failing murderous government to account.

    Ill luck for Bangladesh is this that as long as it remains enslaved from within, no one can save it from the moral rot it is infected with!.

Comments are closed.