জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিকে কখন তলব করা হবে ?

Minar Rashid

মাওলানা নিজামীর মৃত্যুদন্ড নিয়ে জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং আরও কিছু দেশ উদ্বেগ জানিয়েছে । মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আগে তা স্থগিতের আহ্বানও জানিয়েছিল । সর্বশেষ খবর হলো , তুরস্ক তার রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে ।

প্রথম আলো সহ সম ঘরানার পত্রিকাগুলো আলবদর নেতার ফাঁসি হয়েছে বলে শিরোনাম দিয়েছে । কিন্তু এই কিছিমের শিরোনাম বা সম্বোধন বিশ্বের নামী দামী বিশ্ব মিডিয়ায় দেখা যায় নি । অধিকন্তু এদের সম্বোধনে মওলানা নিজামীর প্রতি এক ধরনের সমীহ লক্ষ্য করা গেছে । তাকে একজন ইসলামিস্ট নেতা অথবা সবচেয়ে বড় ইসলামী দলের নেতা হিসাবে সম্বোধন করা হয়েছে ।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এদের কারো প্রতি সরকারের কোন রাগ , গোস্বা বা প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না । সরকারের ক্ষোভ জমা হয়েছে শুধু পাকিস্তানের উপর । অথচ নিজামীর মৃত্যুদন্ড নিয়ে পাকিস্তানের নিন্দা জানানোর চেয়ে জাতিসংঘ বা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ ও প্রশ্ন উত্থাপন আমাদের সরকারের জন্যে অধিকতর ক্ষতির কারণ হয়েছে । তজ্জন্যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হলেও জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিকে এখনও তলব করা হয় নি ।
প্রথম আলো সহ সরকার বান্ধব পত্রিকা গুলোর চালাকিও ধরা পড়ে যাচ্ছে । নিজামীর মৃত্যুদন্ড নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিটা প্রতিক্রিয়া নিয়ে সাথে সাথে সংবাদ শিরোনাম করলেও এব্যাপারে জাতিসংঘ সহ অন্যদের প্রতিক্রিয়া বেমালুম চেপে যাচ্ছে ।
পাকিস্তানের মানবাধিকার নেত্রী আসমা জাহাজ্ঞীরের অনেক বক্তব্য নিয়ে এর আগে এই ‘প্রথম আলো’ রা অনেক নাচানাচি করেছে । তিনি জানিয়েছেন , এই ফাঁসি কার্যকর হলে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে বিভাজিত হয়ে পড়বে । পাকিস্তানের উদ্বেগ ও নিন্দা নিয়ে প্রথম আলোদের ঘুম হারাম হয়ে গেলেও সেই একই দেশের এক উদারবাদী নেত্রীর এই মন্তব্যগুলি প্রথম আলোরা বেমালুম চেপে যাচ্ছে । কারণ এই কথাগুলি দেশের মানুষকে নাড়া দিয়ে ফেলবে ।
পুরো বিষয়টি নিয়ে সরকারের এক ধরনের নৈতিক পরাজয় স্পষ্ট হয়ে পড়েছে । অনেক মিডিয়া ট্রায়াল এবং কায়দাকানুন করেও এযাবৎ ফাঁসিতে ঝুলানো একজনের মুখ থেকেও প্রাণভিক্ষার আবেদন বা সে ধরণের কাকুতি মিনতি ম্যানেজ করা সম্ভব হয় নি । এটা হলে বিশেষ চেতনার জন্যে অত্যন্ত উপাদেয় খাবার হত । সরকার যেটাকে সর্বোচ্চ সাজা মনে করেছে , মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা এটাকেই তাদের জীবনের সর্বোচ্চ সফলতা গণ্য করেছে ।

অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলাই উত্তম জেহাদ । সেই উত্তম জেহাদটি এদেশে জাতি সংঘ , হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ অন্যান্যরা যতটুকুন আন্জাম দিয়ে যাচ্ছে – তার হাজার ভাগের এক ভাগ করার সাহস দেখাতে পারছে না এদেশের হেভি ওয়েট রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা গণ ।