শহীদুল আলমের মুক্তি চেয়ে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিবৃতি: যা বললেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ইনু

শহীদুল আলমের মুক্তি চেয়ে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিবৃতি: যা বললেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ইনু

BBC Bangla ২৭ অগাস্ট ২০১৮

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু

 

ছবির কপিরাইট BBC BANGLA
Image caption তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত বাংলাদেশী আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

ভারতীয় একটি ম্যাগাজিন আউটলুক ইন্ডিয়া বলছে, অমর্ত্য সেন বলেছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ এবং মি. আলম এই কাজটাই বহু বছর ধরে দক্ষতা ও সাহসের সাথে করে আসছেন।

বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে মি. আলমকে আটক করা হয়েছে।

এর আগেও আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত বহু শিল্পী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক এবং নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্বরা তার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন।

এসব দাবিকে সরকার কতটা গুরুত্ব দেয়?

বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এ প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলাকে বলেন, শহিদুল আলম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক নামকরা যেসব ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন তারা বাংলাদেশের বাস্তবতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত হননি।

আরো পড়ুন:

শহীদুল আলমের মুক্তির দাবি নোবেলজয়ীদের

কেন বাংলাদেশের শহীদুল আলমের পাশে ভারতের রঘু রাই?

যেসব ছবির মাধ্যমে আলোড়ন তোলেন শহিদুল আলম

ছবির কপিরাইট AFP
Image caption পুলিশ হেফাজতে শহিদুল আলম।

“শহিদুল আলম গণমাধ্যমের একজন কর্মী এবং নামকরা চিত্রগ্রাহক। যারা বিবৃতি দিচ্ছেন তারা সঠিক অবস্থা জানলে হয়তো দ্বিতীয়বার চিন্তা করতেন বিবৃতি দিবেন কিনা।”

“জনাব শহিদুল আলম তিনবার প্রকাশ্যে সরাসরি টেলিভিশনে এসে এবং ফেসবুকে লাইভে এসে উনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে উস্কানি প্রদান করেছেন এবং উত্তেজনাকর কথাবার্তা বলেছেন, যা দেশের আইনের পরিপন্থী।”

শুধু শহিদুল আলমের বিষয়ে নয়, বাংলাদেশের নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং খ্যাতনামা ব্যক্তিরা যখন কোন বিবৃতি দেয়, তখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কোন চাপের মধ্যে পড়ে কিনা?

এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু বিদেশীদের বিষয় নয়, দেশের অভ্যন্তরে যদি কোন বুদ্ধিজীবী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা কোন রিপোর্ট উত্থাপন করে তাহলে সরকার সেগুলো গ্রাহ্য করার চেষ্টা করে, কোন চাপের মধ্যে পড়েনা।

“যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন হচ্ছে, সাজা হচ্ছে, তখনো বহু দেশের রাষ্ট্রপতি ফোন করে আমাদের অনুরোধ করেছে সাজা না দেবার জন্য।…. তারা একেবারে জঘন্য যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ওকালতি করেছেন। এতে মনে হয়েছে বহু সময় বিদেশীরা আমাদের দেশের বাস্তব আইনও জানেন না এবং যার সম্পর্কে বিবৃতি দিচ্ছেন তার অবস্থানও জানেন না।”

কিছু বিদেশী সংস্থা প্রায়ই বাংলাদেশ সম্পর্কে বিবৃতি দেয়, একথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কড়া সমালোচনা করেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের ‘বাস্তব অবস্থার তোয়াক্কা করেনা’ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

“বছরের পর বছর একই বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন, কাটিং এন্ড পেস্টিং-এর মতো।”

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বলে বিভিন্ন পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেগুলো খারিজ করে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে তিন হাজারের বেশি খবরের কাগজ প্রকাশিত হয় এবং ৪১ টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী।

হাসানুল হক ইনু উল্লেখ করেন, ছাত্র বিক্ষোভের সময় শহিদুল আলম ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়েছেন।

ছাত্র বিক্ষোভ সম্পর্কে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সে সময় নারী লাঞ্ছনা এবং হত্যাকাণ্ডের কোন ঘটনা ঘটেনি।

” মিথ্যা তথ্য দিলে তাঁর বিরুদ্ধে যদি কোন আইনগত ব্যবস্থা কেউ নিয়ে থাকে, তাহলে সেটা মত প্রকাশের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নয়।”