নেপাল_বাংলাদেশ_সম্পর্কে_নতুন_মোড়

লাদাখ ইস্যুতে চীন-ভারত-নেপাল ত্রিমাত্রিক দ্বন্দ্ব চললেও নেপাল-বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের দুরত্ব ঘুচেছে।বাংলাদেশের প্রায় ৮০০০ টির ও অধিক মুল্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা কাল ১ জুলাই ২০২০ হতে কার্যকর হতে যাচ্ছে।একই সাথে নেপাল থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আনা,বাণিজ্য এবং ট্রানজিট সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে নেপাল-বাংলাদেশ-ভারত ত্রিপাক্ষিক আলোচনা চলমান থাকলেও বর্তমানে তা কিছুটা শ্লথ রয়েছে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নিজের স্বার্থ আদায়ে ভারত-নেপালের মাঝে মিডলম্যান বা নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে হবে।চীন-ভারত দ্বন্দ্ব নিরসনেও বাংলাদেশ অনন্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে।
এরই মধ্যে অনেকাংশে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব প্রশমিত হয়েছে।বাংলাদেশ-নেপাল শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয় সামরিক দৃষ্টিকোন থেকেও
১.দ্বিপাক্ষিক মহড়ায় অংশ নিতে পারে।যদিও এ ব্যপারে এখনো কাংখিত অগ্রগতি হয়নি।
২.উভয় দেশের সামরিক পর্যায়ের সম্পর্ক এখন যথেষ্ট উষ্ম।নেপালের সামরিক সদস্যবৃন্দ বাংলাদেশের সামরিক ইনস্টিটিউট গুলোতে প্রশিক্ষণ এবং উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।
৩.প্রয়োজনের তাগিদে পরস্পরকে সহায়তা করবার মত মানসিকতা বিনির্মাণে উভয় দেশই একে অপরের দুর্যোগ মোকাবেলায় অংশ নিতে পারে।
৪.বিদ্যুৎ আমদানি,নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ,বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানী,ট্যুরিজম,ট্রানজিট সহ নানা ইস্যুতে ভারতের “দাদাগিরি” কমাতে উভয় দেশ কূটনৈতিকভাবে “চেষ্টা চালানোর” পাশাপাশি “চীনকেও” একটি “ট্রাম্পকার্ড” হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।এছাড়া,শুল্ক সমস্যা নিয়েও ভারতের সাথে আলোচনা প্রয়োজন,প্রয়োজন নিরাপত্তাও।যাতে ভারত-নেপাল সম্পর্কের অবনতি হলেও নেপালে ভারতের ভুখন্ড ব্যবহার করে পণ্য আমদানি-রফতানি সচল রাখা যায়।
BIMSTEC কিংবা BRI এর মত সংস্থাগুলো সফল না হওয়ার পেছনে নানাবিধ কারন রয়েছে।SAARC নিজেও তার জায়গা ধরে রাখতে পারছেনা।যার দরুন নিজ স্বার্থে বাংলাদেশকে এসব সংস্থা এড়িয়ে নিজেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য,নেপাল চট্টগ্রাম,মংলা,মাতারবাড়ি,পায়রা বন্ধরের সুবিধাগ্রহণে আগ্রহী।একই সাথে উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট, সৈয়দপুর,রাজশাহী বিমান বন্দরের আধুনিকীকরণ বাংলাদেশ-নেপাল বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে ভুমিকা রাখবে।বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী অধিদপ্তর চাইলে Bangladesh Machine Tools Factory নির্মিত ক্ষুদ্রাস্থ,রকেট লঞ্চার,গ্রেনেড,সংযোজিত টয়োটা সামরিক যান সহ বেশ কিছু সরঞ্জাম নেপালকে উপহার হিসেবে দিতে পারে।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা হিসেবে বাংলাদেশ নিজেই একটি অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে আগ্রহী।এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া,আফ্রিকা এর বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোতে নিজের প্রভাব বলয় বৃদ্ধি করা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পন্থা হতে পারে।
নেপালীরা ২০১৫ সালের ভয়াবহ ভুমিকম্পে বাংলাদেশের সহায়তাকে আজো মনে রেখেছে।সামান্য কূটনৈতিক সদিচ্ছা নেপাল-বাংলাদেশ সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় পৌছে দিতে পারে।
ছবি ক্রেডিট:??