তৃণমূলে উন্নয়ন

তৃণমূলে উন্নয়ন

০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সম্প্রতি কয়েকটি প্রকল্প, দু’টি সেতু এবং কয়েকটি ট্রেন সার্ভিসসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে তৃণমূলের সাধারণ জনগণের উন্নতিকে ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন সরকারপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সাধারণ মানুষের উন্নয়ন না ঘটলে প্রকৃত উন্নয়ন হতে পারে না। তাছাড়া বাংলাদেশের জনবিন্যাস এমন, এখানে সাধারণ মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এসব মানুষের আয় রোজগার বৃদ্ধি পেলে এবং তাদের জীবনে সুখ স্বাচ্ছন্দ্য এলে সেটাই প্রকৃতপক্ষে এ দেশের জাতীয় উন্নয়নের সূচক হিসেবে ধরা যেতে পারে। এর প্রতিই আসলে সরকারপ্রধান গুরুত্ব আরোপ করেছেন। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর হতে চলল আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। স্বাধীনতার অন্যতম লক্ষ্য ছিল একটি শোষণ বঞ্চনামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। সে পথে আমরা হাঁটছি না, তা বলা যাবে না। কিন্তু যতটা দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে পথচলা উচিত ছিল, ঠিক তত গতি নিয়ে চলতে পারিনি। আর এ পথ চলার ক্ষেত্রে যারা জনগণের দিশারী ছিল, তারা সঠিক পথের দিশা দিতে পারেননি। সেই দিশারীদের দুর্বলতা আর ক্ষমতার অভাব তো ছিল বটেই, সেই সাথে বোধ-বিবেচনার ঘাটতি আর দূরদর্শিতার অভাবও ছিল। এমন সব কারণে আমাদের সমাজে সৃষ্টি হয়েছে নানা বৈষম্য। সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান এই ধারণাকে আরো জোরালো করেছে। দেখা গেছে, আয়-রোজগারের ক্ষেত্রে নিম্নবিত্ত জনগণের অবস্থা নিম্নগামী হয়েছে; পক্ষান্তরে বিত্তবানদের অর্থবিত্ত এবং তাদের সংখ্যা স্ফীত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি হচ্ছে, স্থান কাল পাত্রভেদে এমন কিছু ঘটতে দেয়া যাবে না। সব নাগরিকের জন্য পাঁচ মৌলিক অধিকার- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সংস্থান করা রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। গত প্রায় ৫০ বছর ধরে প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে যদি গাফিলতি না হতো, তৃণমূল সাধারণ মানুষের জন্য এখন আর দুঃখ প্রকাশের এতটা প্রয়োজন হতো না। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের অতীত থেকে আজ অবধি যারা প্রশাসন পরিচালনা করেছেন তাদের অক্ষমতার কারণেই দেশের মানুষের এমন পরিণতি। শুধু অতীত নয়, যারা এখন রাষ্ট্রের প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তাদের পক্ষেও এই দায় এড়ানো সম্ভব হবে না। এ কথা অস্বীকার করার কোনো পথ নেই যে, জনগণের সৎ যোগ্য সক্ষম ও পরীক্ষিত ব্যক্তিদের বাছাই এবং তাদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করার ক্ষেত্রে যে পথ পদ্ধতি, তা এখন আর সাধারণ মানুষের হাতে নেই। সেটা পেশিশক্তির নিয়ন্ত্রণে। এই অপশক্তি আর্থিক মদদ এবং আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়ে আসছে প্রশাসন ও ক্ষমতাশালীদের কাছ থেকে। এর ফলে সমাজের সাধারণ নিয়ম যে, জনগণই হচ্ছে সব কিছুর নিয়ামক। সে ধারণা ও চেতনার আজ বিলুপ্তি ঘটেছে। এতে এক অস্বাভাবিক শূন্যতার সৃষ্টি হবে এবং ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা দেখা দেবে। দেশের বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের ক্রমে পিছিয়ে পড়ার যত কারণ তার অন্যতম হচ্ছে সমাজে বিরাজিত যে অবস্থা তাতে সমাজপতিরা সাধারণের কাছ থেকে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা ষোলো আনা তুলে নিচ্ছেন। আর বিনিময়ে তৃণমূল জনগণ পাচ্ছে বঞ্চনা। এমন দৃষ্টিভঙ্গি সমাজ ও রাষ্ট্রের সংহতিকে বিনষ্ট করবে, আর তা মানুষের মধ্যে ক্ষোভ হতাশা সৃষ্টি করছে। এতে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব হয়ে উঠবে না।

দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর এখন যে আর্থিক সঙ্গতি, তাদের পক্ষে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে বেঁচে থাকার জন্য নিতান্ত সাধারণ প্রয়োজনটুকুও পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন দৈন্যে সাধারণ মানুষের জীবনের হিসাব-নিকাশই শুধু ওলটপালট করে দিচ্ছে না, জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করবে। এই আর্থিক অবস্থানে থাকার কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষের পক্ষে আর কোনো ভোগ্যপণ্য ক্রয় করার সামর্থ্য থাকতে পারে না। এমনটি স্বপ্নেও ভাবার উপায় নেই। অথচ তাদের ক্রয়ক্ষমতা যদি বৃদ্ধি পেত, অন্ন বস্ত্রের সংস্থানের পর তারা পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধির জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারত। ফলে দেশে ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী শিল্পের চাকা সামনে অগ্রসর হতো। বস্তুত মানুষের আয়-রোজগার বৃদ্ধি পেলেই তাদের জীবনমান বৃদ্ধির কথা তারা ভাবে। এমন ভাবনা শিল্পের সমৃদ্ধি আনতে সক্ষম। মানুষের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য এলে তার দোলা শিল্পের বিকাশেও লাগবে। বিষয়টি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। জাতীয় নেতৃত্ব এই সহজ বিষয় উপলব্ধি করেন না তা নয়। কিন্তু তার পরও কেন অগ্রগতি হচ্ছে না এটি ভাবনার বিষয়। এমন প্রশ্ন হতে পারে- জনগণের সমৃদ্ধির কথা আগে বিবেচনা করতে হবে, না শিল্প কাঠামো তৈরির প্রসঙ্গকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই প্রশ্নের উত্তর খুব কঠিন নয়; বরং এর সহজ উত্তর হচ্ছে- দুটোকেই সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিতে হবে। আর কিভাবে সে পথে চলা সম্ভব? এই প্রশ্নের সমাধান অবশ্যই দিতে পারবেন পরিকল্পনাবিদ আর অর্থশাস্ত্রের পণ্ডিতরা। দেশের এত প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও বহু গুণী তৈরি হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, নিরলস একক প্রচেষ্টা আর সাধনা তাদের বিশ্বমানের বিশেষজ্ঞে পরিণত করেছে। তাদের জ্ঞান অভিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নকে সামনে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এখানেও প্রশাসনের জ্ঞানীদের সম্মান করতে, চিন্তার মুক্ত স্বাধীনতা দিতে হবে, বুঝতে হবে তাদের অভিমান অভিযোগকে। জাতীয় উন্নয়ন অগ্রগতির সাথে তাদের সম্পৃক্ত করতে না পারলে সেটি দেশের জন্য হবে অপরিসীম ক্ষতি। যোগ্য ও গুণীদের কাজের সুযোগ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে। সেখানে তারা শুধু কাজ নয়, সম্মান ও স্বীকৃতি দুটোই পান। দেশের এমন গুণীদের দেশের কাজে সংযুক্ত করতে না পারলে তখন বিদেশ থেকে অনেক কম যোগ্য ব্যক্তিদের অনেক বেশি অর্থকড়ি দিয়ে আনতে হয়। এমন ‘বিশেষজ্ঞদের’ কাজের ধরন ও মান নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে এটি তো মেনে নিতেই হবে যে, তারা কাজ করে ঠিকই তবে সেই কাজে আন্তরিকতা আর হৃদয়ের স্পর্শ কতটুকু থাকে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকাটা স্বাভাবিক। দেশের ছেলেকে দিয়ে জাতির আকাক্সক্ষা যতটুকু পূরণ হতে পারত, বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিদের থেকে তা আশা করা ঠিক নয়। এটি আমাদের নেতাদের বুঝতে হবে।

সাধারণ মানুষের অবস্থা না ফিরলে তারা যে কেবল একাই দুঃসহ যাতনা আর বঞ্চনার শিকার হবে শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রের দরিদ্র নাগরিক হিসেবে সমাজে অবহেলার পাত্র তো হবেই। সেই সাথে যে রাষ্ট্রের নাগরিক তারা, সে রাষ্ট্রও বিশ্ব সমাজে করুণার পাত্রে পরিণত হবে। এমন রাষ্ট্রের সরকারেরও ঘরে বাইরে মর্যাদা থাকে না। তাই এমন হেনস্থা হওয়া থেকে উত্তরণের একটাই পথ। সেটা হলো রাষ্ট্র ও নাগরিকদের অবস্থার পরিবর্তন। আর এ জন্য একে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। যে সম্পদটুকু আমাদের রয়েছে তার সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। কোথাও যেন কোনো ফাঁকফোকর না থাকে। অথচ এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দুর্ভাগা। প্রতিদিন এমন বহু খবর বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায় যে, দুর্নীতিবাজরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করছে। আর এই দুরাচারীরা অবাধে তাদের দুষ্কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে প্রশাসন নীরব। রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে আইন তাদের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারে না। এই বাস্তবতার কারণে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ এখন শীর্ষ পর্যায়ের একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি দেশে দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরু করা হয়েছিল। আর এই অভিযানে আটক হয়েছিল মাত্র গুটিকতক ব্যক্তি, যারা ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা। সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং কাউকে রেহাই দেয়া হবে না। কিন্তু কিছু দিন পরেই অজ্ঞাত কারণে সে অভিযান মুলতবি হয়ে যায়। ধারণা করা হয়, এতে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ভাবমর্যাদায় আঘাত লাগবে; তাই এই অভিযান কোনো পরিণতিতে পৌঁছতে সক্ষম হলো না।

বাংলাদেশের ঘোষিত রাষ্ট্রনীতি হচ্ছে, জনগণের জীবনমান ও মর্যাদাকে সমুন্নত করা। এই নীতি বাস্তবায়ন করা হবে বলে ঘোষণা এসেছে ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষ থেকে। অতীত থেকে আজ পর্যন্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য যদি সত্যিকারভাবে কাজ করা হতো তবে সর্বসাধারণের উন্নয়নের কথা নিয়ে এভাবে হতাশা প্রকাশ করতে হতো না। আরেকটি বিষয় স্মরণ করা যেতে পারে যে, দেশে এখন যারা ক্ষমতাসীন, তারা বিভিন্ন সময়ে এককভাবে সর্বাধিককাল রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা দেশের হাল বদলের জন্য কতটুকু কী করতে পেরেছেন সেটি বিবেচনায় আসা অসঙ্গত নয়। এ ব্যাপারে দায়িত্ব পালনে উদাসীনতার অভিযোগ তো আছেই, সেই সাথে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ব্যাপারটি না বললেই নয়। দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অনেক প্রতিশ্রুতি দেশের মানুষকে দিয়ে থাকে। তাছাড়া সভা সমাবেশে বিভিন্ন দাবি দাওয়া পূরণের অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছেÑ এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায় না। সময় এলে আবার একই ইস্যুগুলো নিয়ে একই কথা পুনরাবৃত্তি করা হয়। বস্তুত এমনটি ছলনার পর্যায়েই পড়ে। উপরে বলা হয়েছে যে, জনগণের প্রতি যে অঙ্গীকার করা হয় তা নিছক ‘বাত কি বাত’ অর্থাৎ নিছক বলার জন্যই বলা। এর পাশাপাশি আরো একটি বিষয় রয়েছে। সেটি হলো, যাদের এভাবে মানুষ ঠকানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া অভ্যাস, তারা এতটাই আত্মসচেতন যে নিজেদের এবং তাদের অনুগামী পার্শ্বচরদের তরক্কির ব্যাপারে হুঁশিয়ার। এই ভাগ্যবানরা নিজেদের আরাম আয়েশের ব্যাপারেই শুধু সতর্ক নয়, সেই সাথে ক্ষমতা আর প্রতিপত্তি অর্জনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। আর এ জন্য তাদের যে তৎপরতা লক্ষ করা যায়, সেটা সমাজে উত্তাপ উত্তেজনা সৃষ্টি করে থাকে। এদের এমন ভূমিকার জন্য যারা সত্যিকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের যোগ্য তাদের পক্ষে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব করার আর কোনো সুযোগ হয় না। এ কারণেই সমাজে যোগ্য সৎ নিষ্ঠাবান নেতৃত্বের অভাব।

তৃণমূলে যে সাধারণ মানুষ রয়েছে তারা শুধু হতদরিদ্রই নয়, সমাজের অন্য যত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা থেকেও তারা বঞ্চিত। এই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য আরেকটি ‘অভিশাপ’ হচ্ছে তাদের পরিবারের কর্মক্ষম সদস্যদের বেকারত্ব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) যে পরিসংখ্যান রয়েছে বেকারত্ব নিয়ে, সেখানে দেশে বেকারের সংখ্যা চার কোটির উপরে। এই বিপুল জনশক্তি জাতীয় জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই অবদান রাখতে পারছে না। স্বাভাবিক কারণেই তাদের জীবনে রয়েছে দুঃসহ এক যাতনা। এই বেকারত্ব ঘোচাতে তাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না সমাজ বা রাষ্ট্র। এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে আত্মকর্মসংস্থান করার জন্য যদি সরকারি সহায়তা থাকত তাহলে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা নিজের জীবনকে শুধু নয়, সমাজ রাষ্ট্রের জন্যও অবদান রাখতে পারত। সেজন্য আজ যখন তৃণমূলের উন্নয়নের বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে, তখন সেটি আশার কথা বটে। কিন্তু তার জন্য বাস্তব উদ্যোগ আয়োজন থাকতে হবে।

সমাজে এখন যে বৈষম্য বঞ্চনা বিরাজ করছে সেটা নীতি-নৈতিকতার বিচারে শুধু অন্যায় নয়, অপরাধ। এই অন্যায়ের শিকার এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী। আর এই অপরাধ করছে যারা, তারা একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী। অথচ ঘুরেফিরে ক্ষমতা আর কর্তৃত্ব করে যাচ্ছে এরাই। আজকে তৃণমূলে ভাগ্য পরিবর্তনের কথা হচ্ছে। তখনই সেটি সফল সম্ভব হবে যখন প্রতিশ্রুতির প্রতি বিশ্বস্ত হওয়া যাবে এবং নীতিনির্ধারণ করে সে আলোকে কাজ করা হবে। এ জন্য যে নীতির দরকার, তা প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশ যখন যাত্রা করেছিল তখনই রাষ্ট্রের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও নীতিনির্ধারণ করে গেছেন পূর্বসূরিরা। এখন শুধু সেই নীতির একনিষ্ঠ অনুসরণ এবং সে আলোকে কর্ম নির্ধারণ দরকার। নীতি ও কর্ম নির্ধারণ নিয়েও তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সমস্যাটা জটিল হবে সে ক্ষেত্রে, যেখানে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে সেই জনগোষ্ঠীর মনমানসিকতা আর বোধ বিবেচনা নিয়ে। তাদের দিয়ে তো অতীতে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তাহলে আজ কিভাবে সেটি সম্ভব হবে? উচ্চপর্যায়ে শতভাগ আন্তরিকতা থাকলেও, সেটি নিচে নেমে এলে সেখানে কতটা আন্তরিকতা বজায় থাকবে, সেটিই আসল প্রশ্ন।

ndigantababor@gmail.com