Site icon The Bangladesh Chronicle

Imran Sharker’s behavior – a subject of complaints by the parents of children

P1_imran_2

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূনসহ আরও কয়েকটি স্কুলে কথিত শাহবাগি ইতিহাস বয়ান করতে গিয়ে নাস্তিক ও কয়েকটি মামলার আসামি ব্লগার ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে কয়েকজন ব্লগার গতকাল চরম অসভ্যতা দেখায়। দেশের নারী শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক পর্যন্ত প্রবেশ করতে না পারলেও ক্ষমতার জোরে সেখানে ডা. ইমরানসহ তার সহযোগীরা প্রবেশ করে। নবম ও দশম শ্রেণীর ধর্মশিক্ষা ও অন্য দুটি ক্লাস বাতিল করে ইমরানের দল ছাত্রীদের কাছে বিকৃত এবং বিভ্রান্তিকর ইতিহাস বয়ান করে। তারা প্রতিষ্ঠানটির মেয়েদের ক্লাসে ঢুকে অনেক মেয়ের সঙ্গে ইচ্ছার বিরুদ্ধে করমর্দন করে। বিতর্কিত এ ব্লগার সোমবার রাত ১১টায় শাহবাগে প্রদীপ জ্বালানো কর্মসূচিতে মেয়েদের অংশগ্রহণের নির্দেশ দেয়। তার এসব অসভ্য কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। তারা নিজের মেয়ের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সরকারের ছাত্রছায়ায় মেয়েদের স্কুলে বিতর্কিতদের এ ধরনের অনুপ্রবেশের জন্য তারা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে নিন্দা জানান। ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হলে কঠোরভাবে প্রতিহত করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন। গতকাল দৈনিক আমার দেশ-এর কাছে অনেক অভিভাবক প্রশ্ন রাখেন, ‘ডা. ইমরানের এতো শক্তির উত্স কোথায়? মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অসভ্যতা দেখানোর সাহস পেলো কোত্থেকে?’
জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর শাহবাগে নির্মিত মঞ্চ থেকে ডা. ইমরান ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এ সময় সে ২৫ মার্চ সারাদেশের স্কুল-কলেজে বাংলা পাঠ্যবই থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে শোনানো ও এ ব্যাপারে আলোচনা করতে শিক্ষকদের নির্দেশ দেয়। কথিত বিচারক ও দ্বৈত শাসকের ভূমিকায় আবির্ভূত হওয়া ডা. ইমরানের নির্দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ কর্মসূচি পালন করেনি। এ খবর পেয়ে ডা. ইমরান তার দলবলসহ ভিকারুননিসা নূন স্কুল, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ রাজধানীর আরও কয়েকটি স্কুলে যায়। স্কুল কর্তপক্ষের অনুমতি না নিয়েই তারা ভেতরে প্রবেশ করে। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ব্লগারদের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটির হলরুমে গতকাল দুপুরে শিক্ষার্থীদের সমবেত করানো হয়। এ সময় তাদের ধর্ম ও অন্য দুটি ক্লাস হওয়ার কথা ছিল। স্কুল শিক্ষিকা সঙ্গীতা ইমাম হলরুমে ব্লগারদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গীত ইমাম আওয়ামীপন্থী অভিনেতা হাসান ইমামের মেয়ে বলে জানা যায়। কয়েক ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানায়, ‘সোমবার রাত ১১টায় শিক্ষার্থীদের শাহবাগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইমরান নির্দেশ দেয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, ব্লগার ইমরান তার বক্তৃতায় মেয়েদের ইতিহাস জানার তাগিদ দিতে গিয়ে বলেন, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের বুদ্ধিজীবী দিবস। তখন সমবেত শিক্ষার্থীরা সমস্বরে হেসে ওঠে। মিলনায়তনে গুঞ্জন ওঠে—নষ্ট-ভ্রষ্টদের এটাই কি ইতিহাস পাঠ? এরপর পেছন থেকে অন্য এক ব্লগার ইমরানকে খোঁচা দিয়ে জানায়, ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস। তখন সে আবার এটা সংশোধন করে ১৪ ফেবু্রয়ারির স্থলে ১৪ ডিসেম্বর উল্লেখ করে।’ ভিকারুননিসা নূন স্কুলে কথিত ইতিহাস শিক্ষা দেয়ার জন্য ব্লগার ইমরান সরকারের নেতৃত্বে কয়েকজন ব্লগার গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় স্কুল ক্যাম্পাসে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক আমার দেশকে বলেন, ‘মেয়েদের স্কুলে যেখানে অভিভাবকরাই প্রবেশ করতে পারেন না, সেখানে কিভাবে প্রবেশ করে নাস্তিক মাদকাসক্ত ব্লগাররা মেয়েদের সঙ্গে করমর্দন করে? স্কুলে প্রবেশ করে ভুল ইতিহাস শিক্ষা দেয় কি কিভাবে?’
ডা. ইমরান তার নাস্তিক ব্লগারদের নিয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে উপস্থিত হয়ে যখন ইতিহাস নসিহত করে, তখন সাংবাদিকদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে কথিত ইতিহাস শিক্ষাদান শেষে সব মেয়ে হলরুম থেকে ক্লাসে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ভিকারুননিসার অফিসরুমে ব্লগাররা কথা বলে সাংবাদিকদের সঙ্গে।
এছাড়া গতকাল বিকাল থেকে শাহবাগিরা শাহবাগের মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সন্ধ্যায় একাত্তর সালের ২৫ মার্চের কালোরাত স্মরণে মৌন পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১১টায় শাহবাগ থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। শহীদ মিনারে রাত ১১টা ২৯ মিনিট থেকে ১১টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে ব্লগাররা। এ কর্মসূচির নাম দেয়া হয় ‘ফিরে যাই একাত্তরে’। আজ বিকাল চারটায় শাহবাগে সমাবেশের আয়োজন করছে শাহবাগিরা।
জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্টস ফোরাম নামের একটি সংগঠনের নামে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানীর শাহবাগে কথিত এ আন্দোলন শুরু হয়। তবে প্রথম দিন থেকেই এর নেতৃত্বে আছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিক বিভিন্ন বাম দলের নেতারা। আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের নেতারা প্রথম দিন থেকেই এতে সংহতি জানান।

Source: Amar Desh

Exit mobile version