Site icon The Bangladesh Chronicle

Government arrested over 5000 under new terrorism sweep

18274_f1

গ্রেপ্তার ছাড়িয়েছে ৫০০০ : আদালতে স্বজনদের ভিড়, উৎকণ্ঠা

একেকটি প্রিজন ভ্যান আদালতপাড়ায় প্রবেশ করতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন স্বজনরা। খুঁজছেন নিজেদের পরিবারের সদস্যকে। স্বজনদের খোঁজ করতে যাওয়া অনেকে বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তাদের স্বজনকে ধরে নেয়ার পর আর সন্ধান পাচ্ছেন না। সংশ্লিষ্ট থানায়ও পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য আদালতে খুঁজতে এসেছেন। গতকাল দিনভর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানার সামনে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ভ্যান থেকে নামানোর সময় আসামিকে দেখে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা স্বজনদের কেউ কেউ কাঁদছেন। কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সিএমএম হাজতখানার সামনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন এক বৃদ্ধা। সঙ্গে এক কিশোর। ওই বৃদ্ধা জানান, তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছেলের নাম আলতাব হোসেন। শাহবাগ থেকে গতকাল দুপুরে আলতাবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজনীতি করেন না। তার নামে কোনো মামলা নেই। এলাকার মানুষের কাছে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত আলতাব পুরান ঢাকায় কাপড়ের ব্যবসা করেন। গ্রেপ্তারের সময় তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় যাচ্ছিলেন। গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে নাতিকে নিয়ে ছুটে এসেছেন তিনি। বারবার টেলিফোনে খোঁজ নিচ্ছিলেন আলতাবের স্ত্রী ইয়াসমিন। স্বামীকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই তার। কাজল নামক এক পুলিশ কনস্টেবলের মাধ্যমে বৃদ্ধা নিশ্চিত হন তার ছেলে ভেতরে রয়েছেন। মিরপুরের বাগবাড়ি এলাকা থেকে স্বপন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে দারুস সালাম থানা পুলিশ। স্বপনকে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ ছিল না বলে জানান তার মা। এমনকি স্বপনের নামে আগে কোনো মামলা ছিল না। গুলিস্তান থেকে আমান উল্লাহসহ অন্তত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পল্টন থানা পুলিশ। আমান একজন শ্রমিক। কারখানা থেকে ব্যবসায়ীদের মালপত্র মাথায় বহন করে দোকানে পৌঁছে দেন তিনি। আমানের ভাই নিয়াজ জানান, মালামাল বহন করে ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনে টুকরি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন আমান। বেলা প্রায় ১১টা। হঠাৎ পুলিশের ভ্যান থামে ওই এলাকায়। রাস্তা থেকে পথচারীদের ধরে ধরে উঠানো হয় ভ্যানে। পথচারীদের সঙ্গে ভ্যানে উঠানো হয় আমানকে। পরে কয়েকদিন আগের দায়ের করা লুটপাট, ভাঙচুরের দায়ে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। একইভাবে ইমন, রিয়াদ, মোর্শেদ ও আবু হানিফ নামে পথচারীদের ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান নিয়াজ। দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান শুরুর পর এমন অবস্থা চলছে সর্বত্রই।
বুধবার রাতে ডেমরা থানার সুকুশী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সবুজ মিয়াকে। স্বজনদের অভিযোগ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা সবুজকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু গ্রেপ্তারের তিনদিন পর গতকাল তাকে আদালতে হাজির করে বলে জানান সবুজের মা আনোয়ারা বেগম। গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানার সামনে আলাপকালে তিনি বলেন, তিনদিন পর্যন্ত তিনি ছেলের কোনো খোঁজ পাননি। থানায় গেলে পুলিশ তাকে আদালতে যেতে বলে। কিন্তু বৃস্পতিবার আদালতে সবুজকে আনা হয়েছে কি-না তা অনেক চেষ্টা করেও জানতে পারেননি। আজ (গতকাল) এসে তিনি জানতে পেরেছেন সবুজকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তবে, কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার ও আদালতে হাজির করা হয়েছে তা তিনি জানেন না।
মুগদার মাণ্ডা এলাকা থেকে বুধবার রাত ১২টায় গ্রেপ্তার করা হয় হুমায়ুনকে (৩০)। হুমায়ুনের স্ত্রী সুমী আক্তার স্বামীকে একনজর দেখার আশায় গতকাল প্রায় সারাদিন ঢাকা সিএমএম আদালতের হাজতখানার সামনে অধীর অপেক্ষায় ছিলেন। আলাপকালে তিনি জানান, স্বামী হুমায়ুন কমলাপুর স্টেডিয়াম ও তার আশপাশ এলাকায় শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন কাজ করেন। বুধবার রাত থেকে স্বামী হুমায়ুনের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না তিনি। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে জানতে পারেন তাকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় থানার পুলিশ। এরপর পুলিশের কাছে গেলে তাকে আদালতে যেতে বলা হয়। সুমি জানতে পারেন হুমায়ুনের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলা করেছে পুলিশ। সুমি আক্তার বলেন, আমার স্বামীর নামে কোনো মামলা নেই। কোনো দিন কারও সাত-পাঁচেও ছিলেন না। কিন্তু স্বামীকে ছিনতাই মামলার আসামি করা হয়েছে শুনে তিনি মুষড়ে পড়েছেন। হুমায়ুনের দুই বন্ধু মনির ও সুজন জানান, বুধবার হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করার পর তারা স্থানীয় পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের পাত্তা দেয়নি। এমনকি কিসের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাও তারা বলেনি। পরে জানতে পারেন তাদের বন্ধুকে ছিনতাই মামলায় আসামি করা হয়েছে। হুমায়ুনের নামে এর আগে কোনো মামলা ছিল না বলে জানান মনির ও হুমায়ুন।
বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন রাজধানীর ইব্রাহীমপুর এলাকার মোহাম্মদ আলী (১২)। গতকাল ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানার সামনে ছেলের অপেক্ষায় ছিলেন মা নূরজাহান বেগম (৫৫)। তিনি দাবি করেন, মোহাম্মদ আলী স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। ছেলে দুদিন নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার তিনি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় গিয়ে জানতে পারেন মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এমনকি তার কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে- এমন অভিযোগে মোহাম্মদ আলীর নামে মামলাও করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। গতকাল ছেলের জামিনের আশায় আদালতে এসেছেন নূরজাহান বেগম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, দুদিন ছেলের কোনো খোঁজ পাইনি। শুনছি পুলিশ না কি ধরপাকড় করছে। আমার ছেলেরে আরো দুদিন আগে ধরে আজ (গতকাল) আদালতে হাজির করেছে। আমার ছেলে ঘর থেইক্যা বাইর হইলেও আমার অনুমতি ছাড়া বাইরে যায় না। স্কুলে পড়া একটা বাচ্চা ছেলে না কি ইয়াবার ব্যবসা করে।
ঢাকার আদালতপাড়ার বেশ কজন আইনজীবী মানবজমিনকে বলেন, চলমান সাঁড়াশি অভিযানের দুদিন আগে থেকেই গ্রেপ্তারকৃত অনেকের স্বজনরা তাদের কাছে এসেছেন। এক্ষেত্রে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে, সাঁড়াশি অভিযানের দুদিন আগেই পুলিশের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে, ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যেহেতু উচ্চ আদালতের বিধি-নিষেধ রয়েছে, তাই পুলিশ এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে বলে মনে করেন আইনজীবীরা। ঢাকা বারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ নাজমূল হোসেন বলেন, ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যেহেতু উচ্চ আদালতের কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে তাই চলমান সাঁড়াশি অভিযানের ক্ষেত্রে পুলিশ কিছু কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। এক্ষেত্রে সাঁড়াশি অভিযানের ঘোষণার আগেও অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গ্রেপ্তারকৃত স্বজনদের অনেকেই এসে আমাদের জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার ছাড়িয়েছে ৫,০০০
দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪৮ জন সন্দেহভাজন জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে ৪৭ জন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জাম’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ- জেএমবির সদস্য এবং অপরজন একজন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম- এবিটির সদস্য। এর আগে প্রথম ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ৩৭ জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিল পুলিশ সদর দপ্তর। ৪৮ ঘণ্টায় মোট ৮৫ জন সন্দেহভাজন জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার করা হলো। রাজধানী ঢাকায় জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে কোনো জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার হয়নি। তবে ঢাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানামূলে ৯৩ জন, নিয়মিত মামলায় ৫৬ জন ও মাদক সংক্রান্ত ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, জঙ্গি সদস্য ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক উদ্ধার ও অন্যান্য মামলায় মোট ২ হাজার ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলে ১ হাজার ৪৯৬ জন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার মামলায় ৪১ জন এবং মাদক উদ্ধার মামলায় ৩৯১ জন এবং অন্যান্য মামলায় ১৫৬ জন রয়েছেন। জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ১৯২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুদিনের অভিযানে মোট ৫ হাজার ৩২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ঢাকা রেঞ্জের টাঙ্গাইল জেলায় ১ জন, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ময়মনসিংহ জেলায় ২ জন, জামালপুর জেলায় ১ জন, শেরপুর জেলায় ১ জন, রাজশাহী রেঞ্জের রাজশাহী জেলায় ৩ জন, চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলায় ৪ জন, নওগাঁ জেলায় ৬, পাবনা জেলায় ১ জন, সিরাজগঞ্জ জেলায় ১ জন, বগুড়া জেলায় ৫ জন, জয়পুরহাট জেলায় ৬ জন, খুলনা রেঞ্জের খুলনা জেলায় ১ জন, নড়াইল জেলায় ১ জন, সাতক্ষীরা জেলায় ২ জন, রংপুর রেঞ্জের রংপুর জেলায় ১ জন, গাইবান্ধা জেলায় ১ জন, নীলফামারী জেলায় ১ জন, দিনাজপুর জেলায় ১ জন, ঠাকুরগাঁও জেলায় ১ জন, পঞ্চগড় জেলায় ২ জন, সিলেট রেঞ্জের হবিগঞ্জ জেলায় ১ জন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের কুমিল্লা জেলায় ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১ জন, আরএমপি, রাজশাহীতে ১ জন এবং সিএমপি, চট্টগ্রামে ১ জন জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া বরগুনা জেলায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে ২টি শুটারগান, ১ রাউন্ড গুলি, ৫০০ গ্রাম গান পাউডার, ১৭টি ককটেল, ২টি ১২ বোরের বন্দুকের কার্তুজ, ৯টি চাপাতিসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ উগ্রপন্থি বই উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮১টি মোটরসাইকেল আটক করা হয়েছে।
সিলেট অফিস জানায়, সিলেটে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ১৫ জন জামায়াত-শিবির কর্মী। শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করে। সিলেট মহানগর পুলিশের আওতাধীন ৬ থানা পুলিশ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে মহানগর উত্তর ও বাকি ৫ জন আসামিকে মহানগর দক্ষিণ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মহানগর দক্ষিণ এলাকা থেকে ২ জন শিবির কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে, সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা জানিয়েছেন, সিলেট জেলা পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে জামায়াত-শিবিরের ১৩ জন নেতাকর্মী রয়েছেন। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা।
স্টাফ রিপোর্টার ও মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ সুমন (৩০) কে গ্রেপ্তার করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ। গতকাল ভোর রাতে তার গ্রামের বাড়ি বড়লেখা উপজেলার পাকশাই এলাকার একটি মসজিদ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, শিবির সভাপতি বাড়ির পাশের মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে মসজিদ থেকে শিবির সভাপতিকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মৌলভীবাজর জেলা জামায়াতের আমীর মো. আবদুল মান্নান, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, মৌলভীবাজার শহর শিবিরের সভাপতি মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও জেলা শিবিরের সেক্রেটারি আবদুল মুমিত।
ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানের তৃতীয় দিনে জামায়াত-শিবিরের ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত জেলার ৬ থানায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শামছুল আলম সরকার জানান, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সারা দেশে পুলিশের সপ্তাহব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দাগনভূইয়ায় ১৭ জন, ফেনী সদর ও ফুলগাজীতে একজন করে। এদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক, ওয়ারেন্টভুক্ত, বিস্ফোরক মামলা, নাশকতা, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক মামলার আসামি রয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান: রাজশাহীতে বিশেষ অভিযানে চার জেএমবি সদস্যসহ ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত থেকে রোববার বিকাল পর্যন্ত বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও রাজপাড়া জোনের সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত অভিযানে মোট ৬০ জন আটক হয়েছে। এর মধ্যে বোয়ালিয়া থানা ১৯ জন, রাজপাড়া থানা ২০ জন, শাহ্‌ মখদুম ১১ জন, মতিহার থানা ৬ জন এবং ডিবি পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে জেএমবি সদস্য রয়েছে ১ জন, শিবিরকর্মী ৪ জন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ২২ জন এবং বাকি ৩৩ জন অন্যান্য। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এসি। অপরদিকে জেলার ৯ থানায় মোট ৯০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এর মধ্যে বাগমারা উপজেলা থেকে ৩ জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে জানান, গত ৬০ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে ১১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কক্সবাজার পুলিশ। বৃহসপতিবার রাত ১২টা থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে এ পর্যন্ত ১১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ৩৬ ঘণ্টায় ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করা হয় আরও ১৬ জনকে।
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, কিশোরগঞ্জে শহর জামায়াতের আমীর একেএম সানাউল্লাহ (৪৫) সহ ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে শহরের হয়বতনগর এলাকায় সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দল বিশেষ অভিযান চালিয়ে জামায়াতের এই নেতাকে আটক করে। এদিকে সাঁড়াশি অভিযানের সময় ২৫ পিস ইয়াবাসহ সদর উপজেলার ভাস্করখিলা গ্রামের রাজিব মিয়া (২৪), গাইটাল নামাপাড়া এলাকার চার জুয়াড়ি বাদল মিয়া (৩৫), জুয়েল মিয়া (৩২), হারুন মিয়া (৪০) ও ওমর আলী (৪০), গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত গাইটাল নামাপাড়া এলাকার বরজুল মিয়া (৩০) ও বড়বাগ গ্রামের উজ্জ্বল (২৫) কে আটক করে পুলিশ।
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি গোলাম রব্বানীকে পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক করা হয়েছে। গতকাল পৌর সভার ধানাটা আন-নূর মাদরাসা কোচিং শাখা থেকে আটক করা হয়। পুলিশ ও মাদরাসা সূত্রে জানা গেছে-সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি।
নাটোর প্রতিনিধি জানান, পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তিন জামায়াত কর্মীসহ ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় ২৩টি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়। শনিবার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নিয়মিত মামলা ও ওয়ারেন্ট রয়েছে। এ ছাড়াও সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না নিয়ে সড়কে মোটরসাইকেল চলাচলকারীদের তল্লাশি করা হয়। এ সময় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ২৩টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১ জামায়াত নেতাসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১০ই জুন দুপুর থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত চাঁদখানা ইউনিয়নের জামায়াতের এক ওয়ার্ড সভাপতি ইদ্রিস আলীসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন- উপজেলার চরকালকিনি এলাকার বাসিন্দা সইজল মাঝি (৩৫), জাফর আহাম্মদ (৩২), শেখ ফরিদ (৩৩) মতিন মাঝি (৪৮) ও চরকাদিরা এলাকার আবদুল মালেক (৫২)।
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল থেকে জানান, গতকাল টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থান থেকে ৬৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে শনিবার রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে আকরামুল ইসলাম (২৬) নামে একজনকে জেএমবি সদস্য অভিযোগে আটক করা হয়।
বগুড়া থেকে সংবাদদাতা জানান, বগুড়ায় ৫ জেএমবি সদস্য, জামায়াত-শিবিরের ৮ নেতাকর্মীসহ মোট ৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৪ ঘণ্টার অভিযানে জেলার ১২ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে জানান, গাজীপুরে শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে গত রাতে নগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে পাবনার চাটমোহরের বাসিন্দা ফরিদ হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলিসহ ম্যাগাজিন, চাকু, হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপারের ধারণা, দেশে সাম্প্রতিক যে গুপ্তহত্যা চলছে, তারই ধারাবাহিকতায় গুপ্তহত্যার পরিকল্পনা নিয়ে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া দুজন গাজীপুরে এসেছিল।
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, দৌলতপুরে বিএনপি দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহের ভালুকায় জেএমবি সন্দেহে রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিকসহ (৫৫) সাজাপ্রাপ্ত তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা পুলিশ। শনিবার রাতে চলতি অভিযানের অংশ হিসেবে এসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শিবগঞ্জ (চাঁপাই নবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর বাগবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগজিন ও ১২ রাউন্ড গুলিসহ দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান. নবীনগর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে উপজেলার ১৪ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রয়ের ২৪৯০ টাকাসহ মো. মনির মিয়া (২৭)-সহ মোট ৬ জনকে আটক করে। শনিবার সন্ধ্যায় পৌর এলাকার আলিয়াবাদ গ্রামের পানের দোকান থেকে মো. মনির মিয়াকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, চৗদ্দগ্রামের কনকাপৈত ইউপির জামায়াত সমর্থিত সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মজুমদারসহ ওয়ারেন্টভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আটক অপর দুজন হলেন ঘোলপাশা ইউনিয়নের আমানগন্ডা গ্রামের মৃত আলী মিয়ার পুত্র নুরুল ইসলাম (৫০) ও চিওড়া ইউনিয়নের শফিকুর রহমানের পুত্র জাফর আহমেদ (৩৪)। শনিবার বিকাল থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে জানান, সাঁড়াশি অভিযানের তৃতীয় দিনে সাভারের আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত-শিবিরের পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ সময় একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়। গতকাল ভোর রাতে আশুলিয়ার সিন্দুরিয়া মাদরাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে কথিত এক জেএমবি ও ১১ জামায়াত কর্মীসহ ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযানকালে সদর উপজেলার চাপড়ি গ্রাম থেকে ১টি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। শনিবার রাত ১২টার পর থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে শাহীন মোহাম্মদ কিংকং নামে এক জেএমবি সদস্যকে পুলিশ আটকের দাবি করছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে সদর উপজেলা থেকে ৮ জন, কালীগঞ্জ থেকে ৭ জন, মহেশপুর থেকে ৭ জন, কোটচাঁদপুর থেকে ৬ জন, হরিণাকুন্ডু থেকে ৫ জন ও শৈলকুপা উপজেলা থেকে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটে পুলিশ ৯টি থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি, জামায়াত কর্মী ও বিভিন্ন মামলায় আসামিসহ ৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ায় ১৭ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীসহ ৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, শনিবার রাতভর জেলার ৭টি থানা এলাকায় যৌথ অভিযানে দৌলতপুর থানায় ৪ জামায়াত কর্মীসহ ১২, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকার মনোহরদিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আমিরুল ইসলামসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া কুষ্টিয়া মডেল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পৌরসভার ২০নং ওয়ার্ড জামায়াতের আমির ইফতেখার হাসানসহ ১১ জন, মিরপুর থানায় ৩ জামায়াত কর্মীসহ ৮ জন, ভেড়ামারা থানায় বিভিন্ন মামলায় ৬ জন, কুমারখালী থানায় ৪ জামায়াত-শিবির কর্মীসহ ১০ জন, খোকসা থানায় ২ জামায়াত কর্মীসহ ৬ জন ও কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশ ২ জামায়াত-শিবির কর্মীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী মুর্শেদা (৩০), মনি (৩০), সোহেল (৩০) ও আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল ছিনতাইকারীচক্রের প্রধান সাগর (৩৫)-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, অভিযানের তৃতীয় দিনে ১ জেএমবি সদস্যসহ ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ৩ দিনে গোটা জেলায় মোট ৬৯ জনকে আটক হলো। সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আমজাদ হোসেন (৪৫) নামের ১ জন জেএমবি সক্রিয় সদস্য রয়েছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত পুলিশের এ অভিযানে নীলফামারী সদরে ৪ জন, ডোমারে ১ জন, কিশোরীগঞ্জ ৫ জন এবং সৈয়দপুরে ৫ জনসহ মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়।
গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গতকাল জামায়াত নেতাসহ আরো ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, অভিযানের তৃতীয় দিনে গতকাল খুলনা মহানগরীতে ৫ ছাত্রশিবির নেতাসহ মোট ৩৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ জামায়াত, শিবির, বিএনপি নেতাকর্মীসহ আটক করছে ৬৮ জনকে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) মুখপাত্র সহকারী পুলিশ কমিশনার শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু জানান, মহানগর ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ, খেলাফত মসলিস মহানগর যুগ্ম সম্পাদক নুর আলম শিকদার, দৌলতপুর ছাত্রশিবির সাবেক সভাপতি মিন্টু হোসেনসহ মোট ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। খুলনা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, জেলার ৯টি থানায় মোট ৬৮ জন আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির ৩ এবং জামায়াত শিবিরের ৯ জন রয়েছে।
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, সখীপুরে ধর্ষণ মামলার আসামি শামীম আল মামুনসহ (২০) চার মাদকসেবী ও এক সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে উপজেলার পাহাড় কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত অন্য চার মাদকসেবী হলো একই গ্রামের সোহেল রানা (২১), আবদুল লতিফ (১৮), আমিনুল ইসলাম (২৪) ও আবদুল আলীম (১৮)। অন্যদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাকিব খানকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড় জেলায় দুই জেএমবি সমর্থক, শিবিরের সাবেক এক নেতাসহ আরো ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে আটক হওয়া জেএমবি’র দুই সমর্থক হলো দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের খুটামারী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিক (২৯) ও খুটামারী কামাতপাড়া গ্রামের আয়নাল হক (৩০)। গতকাল দুপুরে সদর থানা পুলিশ শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি ও ৫ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আবু বক্কর ছিদ্দিককে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া পুলিশ বোদা উপজেলা থেকে দুজন ও দেবীগঞ্জ উপজেলা থেকে এক শিবিরকর্মীকে আটক করেছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে আটকের সংখ্যা দাঁড়াল ৯২ জনে।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ৪৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে জামায়াত-শিবিরের তিনজন কর্মী রয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত জেলার আটটি থানায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা সদর থানায় ১৯ জন, কলারোয় থানায় ৫ জন, তালা থানায় ৫ জন, কালিগঞ্জ থানায় ৪ জন, শ্যামনগর থানায় ৫ জন, আশাশুনি থানায় ৪ জন, দেবহাটা থানায় ২ জন এবং পাটকেলঘাটা থানায় ৪ জন।
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে জানান, পুলিশের বিশেষ অভিযানে যশোরে জামায়াত-বিএনপির ২২ নেতাকর্মীসহ ৮৪ জন আটক হয়েছে। যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, শনিবার রাতভর পুলিশের বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে যশোরের নয় থানা এলাকা থেকে এদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে জামায়াত ও শিবিরের ১৮ জন এবং বিএনপির ৪ জন নেতাকর্মী রয়েছে।
বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনা জেলায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিরাব রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্ততারকৃতদের মধ্যে একজন তালিকাভুক্ত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে আমতলী থানায় ৭ জন, তালতলীতে ৯ জন, সদর থানায় ১১ জন, বেতাগী থানায় ৩ জন, পাথরঘাটা থানায় ১১ জন এবং বামনা থানায় ২ জন।
স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে জানান, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে মুক্তাগাছার রামপুর থেকে মুকলেছুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু মোহাম্মদ ফজলুল করিম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা একজন সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, রংপুরে এক জেএমবি সদস্যসহ ৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত আট উপজেলায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কাউনিয়া উপজেলার জাহিদুল ইসলাম নামে এক জেএমবি সদস্য রয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার নোয়াখালী থেকে জানান, তৃতীয় দিনে নোয়াখালীতে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীসহ ৫৮ জনকে আটক করা হয়েছে। শনিবার রাত থেকে রোববার বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। আটককৃতদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের ১২ জন ও বিএনপির একজনসহ ৯ উপজেলার বিভিন্ন থানায় ৫৮ জন রয়েছে। তবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, পাবনার চাটমোহরে জামায়াতের দুই নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। আটককৃত দুজন হলো উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মাহ আলমের ছেলে ও ২নং ওয়ার্ডের জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আসলাম আলী (২৯) ও জামায়াত কর্মী বিলচলন ইউনিয়নের সোনাহারপাড়া গ্রামের আছের উদ্দিন মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০)।

Source: Amardesh

Exit mobile version