কালো বিড়ালের হলুদ উচ্ছাস
‘ধরা খাইছে’ শব্দ যুগলের প্রতি একটা বিশেষ টান বা স্পর্শ অনুভব করেন ‘বাম পচে আওয়ামী লীগ হওয়া’ সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। এসব কথা বলার সময় একজন জাতীয় নেতার ব্যক্তিত্বের চেয়ে গ্রাম্য ভাঁড়ের বডি ল্যাঙ্গুয়েজটি তার অবয়বে বেশি ফুটে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্রে এক বাংলাদেশীর শাস্তি নিয়ে মহা উৎফুল্ল সুরঞ্জিত। নিজের নিজস্ব ভঙ্গিতে শরীর দুলিয়ে বলেছেন, খালেদা- তারেক ধরা খাইছে।
বিষয়টি নিয়ে হলুদ মিডিয়া ও কালো বিড়ালদের এই উচ্ছাস ও প্রচারনার ধরন দেখে অনেক প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
আমেরিকান কোর্ট বলেছে যে একজন বাংলাদেশী পলিটিশিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এফবিআইয়ের কাছ থেকে জানতে এই লোকটি একজন এজেন্টকে ঘুষ দিতে চেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের হলুদ মিডিয়া এটাকে জয় এবং তার পরিবারকে অপহরনের প্রচেষ্টা হিসাবে তুলে ধরেছে। আমেরিকার কোর্ট সেই পলিটিশিয়ানের নাম প্রকাশ করেনি অথচ এরা তা নিশ্চিন্তে প্রকাশ করেছে।
যে বিএনপি নেতার ছেলের কথা বলা হয়েছে সেই নেতাকে তুলে ধরা হয়েছে যুক্ত রাষ্ট্রের জাসাসের সহ সভাপতি হিসাবে । আমার জানামতে অনেক ভাগে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির মূল দলের কোন কমিটি নেই। সেখানে জাসাসের মত সহযোগী সংগঠনের সহ সভাপতির মত পদটিকে আজ বিরাট বড় নেতা বানিয়ে ফেলা হয়েছে।
জাসাসের কেন্দ্রীয় সভাপতির বিএনপি হাই কম্যান্ডের কাছে কতটুকু এক্সেস আছে তা নিয়েই সন্দেহ আছে। সেখানে এমন মাপের একজন নেতার ছেলেকে বিএনপি হাই কম্যান্ড এমন একটি গুরুত্ব পূর্ণ কাজের দায়িত্ব দিয়েছে তা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হবে।
প্রায় বিশ বছর এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। আমেরিকান ইন্টেলিজেন্স ও এফবিআইয়ের গঠণ ও কর্মকান্ড সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে। বিএনপি মাঝে মাঝে বোকার মত কাজ করলেও এতটুকু স্টুপিড হওয়ার কথা নয়।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো কাজটি করার আগেই এই তথাকথিত সহ সভাপতি তনয় ধরা খেয়েছে । ‘ বিএনপির হাই কম্যান্ডের নির্দেশে এই কাজ করেছে’ এটাই হলো পুরো মিশনের চৌম্বক অংশ। কাজেই বিএনপি না আওয়ামীলীগের খেদমত করেছে এই সহ-সভাপতি তনয়, সেই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এই কথাটুকু বলার জন্যেই কি কোথা থেকে এই সহসভাপতি তনয়কে এই দায়িত্বটি দেওয়া হয়েছিল? কালো বিড়ালদের এই হলুদ উচ্ছাসটি দেখে সন্দেহটি আরো ঘনীভূত হয়েছে।
‘ধরা খাইছে ‘ কিছিমের শব্দ সমূহের প্রতি এই কালো বিড়ালের বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। পরম স্রষ্টা তাই তাকে এমন ধরা খাইয়েছেন যে সেখান থেকে আর ছুটতে পারে নি। করুণভাবে আটকে গেছে। নিজের এপিএসের ড্রাইভার সত্তর লাখ টাকার চটের ব্যাগ নিয়ে সোজা পিলখানায় ঢুকে পড়েছে। মন্ত্রীত্ব টিকে গেলেও উজিরে খামাখা বা দফতরবিহীন হিসাবে লটকে ছিলেন অনেক দিন। ঘেন্না-পিত্তি- লজ্জা শরম গিলা কলিজা কিছু আছে কি না সন্দেহ আছে।
তার এই ধরা খাওয়ার সাথে মিল রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার অতি সাম্প্রতিক একটি ঘটনার।
যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত ডেইলি মেইল অন লাইন গত ২৮শে ফেব্রুয়ারীর সংখ্যায় জানিয়েছে, Toyboy becomes stuck inside his married lover after suffering ‘penis captivus’ during sex… then crowd gathers to see after rumours it was caused by husband casting a black magic spell
ঘটনার বিবরন থেকে জানা যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ২২ বছরের এক নাগর (Toyboy) তার ৩৪ বছর বয়স্কা বিবাহিতা প্রেমিকার সাথে রোমাঞ্ছে জড়িয়ে পড়ে। প্রেমিকার স্বামী ব্যবসার উদ্দেশ্যে অন্য শহরে গেলে তারা ভাড়াটে এক এপার্টমেন্টে মিলিত হয়। কিন্তু পরস্পর থেকে আর বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। তাদের চিৎকারে আশেপাশের সব মানুষ জড়ো হয়। সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে যে প্রতারিত স্বামী এক ওঝার মাধ্যমে স্ত্রীর প্রাইভেট পার্ট মন্ত্র দিয়ে বেঁধে রেখে গিয়েছিল । ফলে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে এই নাগর আটকা পড়ে। এখন স্বামী এসে না ছুটালে এই নাগরকে এমন করেই আটকে থাকতে হবে। স্বামী এসে নাগরের পাছায় লাথি দিয়ে ছুটিয়েছিল কি না এব্যাপারে অবশ্য ডেইলি মেইল কিছু বলে নি।
যদিও মেডিকেল সাইন্সে এই ধরনের আটকে যাওয়া অবস্থাটির একটি ব্যাখ্যা রয়েছে । অন্যান্য বিজ্ঞানের মত এখানেও কীভাবে ঘটনাটি ঘটে তার একটা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু কেন হয় বা কার ইশারা বা নির্দেশে এমন হয় তা আর বলা হয় না। মানব মনের এই কৌতুহলটির সুযোগ গ্রহন করে বিভিন্ন প্রজাতির ওঝারা।
কাজেই ফাও খাওয়া এই ধরনের সকল নাগর এবং শুটকির বাজারের পাহারাদার কালো বিড়ালদের এমন করুণভাবে ধরিয়ে দেওয়ার জন্যে এক মহাশক্তি পেছনে কাজ করছে তা এই টয়বয় বা কালো বিড়ালরা উপলব্ধি করতে পারে না।