বিএনপি যাতে জ্বালাও-পোড়াও না করতে পারে, সে জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) এত দিন বলেছে নির্বাচন হতে দেবে না। এখন যখন মনে করছে নির্বাচন হয়ে যাবে; তাহলে কী করা যাবে? আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের দিকে বাংলাদেশে এমন অবস্থা করবে, দুর্ভিক্ষ ঘটাবে। এটা হচ্ছে তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা। এটা শুধু দেশের না, বিদেশি একটা প্ররোচনাও আছে। যেভাবেই হোক দুর্ভিক্ষ ঘটাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল শুক্রবার সকালে নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন। তাঁর এই বক্তব্য ফেসবুক লাইভে প্রচার করেন বাবুল আহমেদ নামের একজন স্থানীয় নেতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কাদের হাতে পড়েছি। তারা এত দিন বলেছে ইলেকশন হতে দেবে না।…শিডিউল ঘোষণা করতে পারবে না। আমরা শিডিউল ঘোষণা করলাম। এখন বলছে, ইলেকশনের দিন ভোটাররা যাতে যেতে না পারে।’ তিনি বলেন, ভোটারদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। তারা জ্বালাও-পোড়াও করতে পারে। সেটার জন্য প্রতিটি এলাকার সব কর্মীকে সজাগ থাকতে হবে। যারা আগুন দিতে যাবে, তাদের ধরে পুলিশে দিতে হবে।
বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখনো তারা জ্বালাও-পোড়াও করছে। এদের শিক্ষাটা বোধ হয় ইসরায়েলের কাছ থেকে, যারা প্যালেস্টাইনের ওপর আক্রমণ করছে। তারা ক্ষমতায় থাকাকালে নিজেরা সমানে অর্থ কামিয়েছে। কিন্তু মানুষকে কোনো দিন শান্তিতে থাকতে দেবে না, এটাই তাদের চরিত্র।
কোটালীপাড়াবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মা-বাবা, ভাই-বোন সবাইকে হারিয়েছি। আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের আস্থা, বিশ্বাস সবচেয়ে বড় পাওয়া। যাদের নমিনেশন দিয়েছি, তারা আসন পায় একটি। আমার হলো ৩০০ আসনের দায়িত্ব। তাই আমি বলতে পারি, আমার মতো সৌভাগ্য কারও নেই যে এলাকা নিয়ে ভাবতে হয় না, চিন্তাও করতে হয় না; যেটা আপনারা করেন।’
মতবিনিময় সভায় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি। সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খোন্দকার, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন (জুয়েল), শেখ সারহান নাসের (তন্ময়), যুবলীগের নেতা শেখ ফজলে নাঈম, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাব উদ্দিন আজম, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখসহ দলের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দিনের সফরে সড়কপথে বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জে আসেন। তিনি গতকাল ঢাকায় ফেরেন।
আচরণবিধি মেনে প্রধানমন্ত্রীর সফর
বাসসের খবরে বলা হয়, নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর নিজ জেলার টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া সফর করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে গোপালগঞ্জ যান। টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছার পরপরই তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া করেন।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিকেলে বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অন্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সমাধিতে দোয়া ও ফাতেহা পাঠ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধি থেকে হেঁটে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবনে যান।
প্রথম আলো