আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসানীতি, তলে তলে সবার সঙ্গে আপস হয়ে গেছে। নির্বাচন হবে, খেলা হবে। অক্টোবর থেকে খেলা শুরু। আগামী মাসে সেমিফাইনাল, জানুয়ারিতে ফাইনাল।
মঙ্গলবার সাভারের আমিন বাজারে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, এক সেলফি দিল্লিতে আরেক সেলফি নিউ ইয়র্কে। শেখ হাসিনা আর পুতুলের সঙ্গে জো বাইডেনের সেলফিতে দিল্লিতে বাজিমাত, এরপর নিউ ইয়র্ক। আমেরিকারও দিল্লিকে দরকার। দিল্লির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আছে। আমরা দিল্লির সঙ্গে আছি। প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের মাধ্যমে ভারসাম্য করে ফেলেছেন।
আর কোনো চিন্তা নেই। নির্বাচন হবে। যথাসময়ে শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম বুড়িগঙ্গায় পড়ে গেছে। আগামী মাসে খেলা শুরু হবে। বিএনপি ফাউল করছে। তারা ফাউল করলে হলুদ আর লাল কার্ড খাবে। তারা নাকি খালেদাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি এতদিন কোথায় ছিল। খালেদা বছরের পর বছর জেলে ছিলেন তখন ফখরুল তার জন্য একটি আন্দোলনও করতে পারলেন না। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশে ইনশাআল্লাহ হবেই। সুষ্ঠু নির্বাচন হবেই। অবাধ নির্বাচন হবেই। ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন হবেই। নিষেধাজ্ঞার পরোয়া আমরা করি না। আমরা ভিসানীতির পরোয়া করি না। তিনি বলেন, আমরা ঠিক আছি। আমরা তো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। তাহলে কেন ভিসানীতি? কেন নিষেধাজ্ঞা? কেউ নিষেধাজ্ঞা দেবেন না। নিষেধাজ্ঞার হুমকি-ধমকির দিন শেষ। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেখেন না ফখরুলের গলার আওয়াজ নরম হয়ে গেছে। আহারে বেচারা ছুটে ছুটে ঠাকুরগাঁও যায়। ঠাকুরগাঁও গিয়ে খোঁজে লোকজন আছেনি। লোকজন আস্তে আস্তে কেটে পড়বে। লোক আর থাকবে না। বিএনপির এ লাফালাফি, বাড়াবাড়িতে জনগণের কোনো লাভ নেই। তারা আবারও চুরি করবে, আবারও লুটপাট করবে, আবারও দুর্নীতি করবে, আবারও বিদ্যুতের জায়গায় খাম্বা দেবে। এসব উদ্দেশ্য নিয়ে বস্তায় বস্তায় টাকা বানাবে। এজন্যই এত লাফালাফি। যদি কোনোভাবে ক্ষমতায় বসা যায়। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র গিলে খাবে। এরা বিদ্যুৎ গিলে খাবে। এরা ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে গিলে খাবে। এরা ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে গিলে খাবে। এরা ক্ষমতায় গেলে আবারও দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, তারেক রহমান মুচলেকা দিয়েছিলেন আর রাজনীতি করবে না। আরে কাপুরুষ সাহস থাকলে বাংলার মাটিতে আসেন। মায়ের অসুস্থতার জন্য আন্দোলন করবেন তো ঢাকার মাঠে এসে আন্দোলনের ডাক দেন। সাহস না থাকলে আন্দোলনের কথা কেন বলিস। কাপুরুষের আন্দোলন কোনো দিনও সফল হবে না। আওয়ামী লীগ কখনো হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়াকে একবারও কি কেউ হত্যা করতে গেছে? কারণ আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী না, বিএনপি হত্যার রাজনীতি করে বলেই শেখ হাসিনাকে ২০ বার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের উন্নয়নে আস্থা রেখেছে দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া এ দেশের জনগণ আর কিছু চায় না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জরিপই বলছে শতকরা ৭০ জন মানুষ নৌকায় ভোট দেবে। নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির আন্দোলনের দম ফুরিয়ে গেছে, তারা যত ষড়যন্ত্র করুক না কেন যথাসময়েই নির্বাচন বাংলাদেশে হবেই। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নীতির পরোয়া আমরা করি না।
দেশের মানুষ নিত্যপণ্যের দামের কারণে কষ্টে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি, এটা সারা দুনিয়াতেই বেশি। তবে নির্বাচনের আগে তা কমে আসবে। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
সমাবেশে ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : মানব জমিন