এস আলম গ্রুপ এই সরকারের মানিব্যাগ: মান্না

 আমার দেশ
৮ আগস্ট ২০২৩

গণতন্ত্র মঞ্চের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না

গণতন্ত্র মঞ্চের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না

নিজস্ব প্রতিনিধি

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘১ বিলিয়ন ডলার সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে এস আলম গ্রুপ। এত অল্প সময়ে, এত টাকা এস আলম গ্রুপের পক্ষে আসলে কি আয় করা সম্ভব! এ ঘটনা তদন্ত করার জন্য দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। কেন তদন্ত করতে দুই মাস দরকার? এই দুই মাসে কি তাহলে কাগজপত্র তৈরি করা হবে যে, ওটা পাচার ছিল না বরং বৈধ ছিল? আসলে এই সরকার লুটেরাদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক। এস আলম গ্রুপ এই সরকারের মানিব্যাগ।’

মঙ্গলবার (৮ই আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন-গণজাগরণ-গণ-অভ্যুত্থানের পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমেরিকার দুর্নীতিবিরোধী প্রধান বাংলাদেশ সফর করছেন। এই সরকারের টাকা পাচারের কাহিনী ইউরোপ-আমেরিকাসহ এখন বিশ্বের সবাই জানে। এত দিন যে লুটপাটের বন্যা চলেছে, এখন তা আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে। আমেরিকা এখন বলছে, দুর্নীতি-পাচার বন্ধ করুন, বিরোধীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করুন।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিকে আমরা জাতীয় দাবিতে পরিণত করতে পেরেছি। বিশ্বের দু-তিনটি দেশ বাদে অধিকাংশ দেশ এই সরকারকে কর্তৃত্ববাদী সরকার মনে করে। এই সরকার তো বয়ান তৈরি করেছে গণতন্ত্রের চেয়ে উন্নয়ন ভালো। তো সেই উন্নয়ন এখন আমরা চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতায় দেখতে পারছি। খালেদা জিয়া, তারেক-জোবাইদার মামলার রায় হতে সময় লাগে না। কিন্তু সাংবাদিক সাগর-রুনির মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১০২ বার পিছিয়েছে পুলিশ।’

এ অনুষ্ঠানে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘আন্দোলন করলেই বলা হয় ষড়যন্ত্র, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই ষড়যন্ত্র। এই সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এর জন্য আগে ক্ষমতা থেকে এই সরকারকে হটাতে হবে। জনগণের হাতে ক্ষমতা আসলে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

ভোটাধিকার, সংবিধান সংশোধনের যে উদ্যোগ, এটাই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে।’

গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা সবাই একটা আন্দোলনের মধ্যে আছি। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাতে হলে গণজাগরণ ঘটাতে হবে। নইলে এই আন্দোলন সফল হবে না। সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামো বদলাতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণবিরোধী—এটা আমরা আগেই বলেছিলাম, কিন্তু তারা শোনেনি। যেই আমেরিকা স্যাংশনের কথা বলেছে, অমনি তড়িঘড়ি করে সংশোধন করে নতুন নাম দিয়েছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। আইনমন্ত্রী ভেবেছেন সবাই বোকা। তিনি ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানোর চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের আইনই তো অবৈধ। এটা পুরোপুরি বাতিল করতে হবে।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘দুঃশাসনের মধু খাওয়ার জন্য হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন ও দিলীপ বড়ুয়ারা এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এই সরকারের অংশীদার হয়েছে। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ সরকারের নাটবল্টু হব না। আমরা বাংলাদেশে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলব।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ অন্যরা।