ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিএসএফ বলছে, তারা বাংলাদেশ পুলিশের একজন ইনসপেক্টর শেখ মো. সোহেল রানাকে সীমান্তের ভারতীয় ভুখন্ড থেকে আটক করেছে।
বিএসএফ কর্মকর্তারা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে শুক্রবার বনানী থানার এই ইনস্পেকটরকে আটক করা হয়।
বিএসএফ তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করছে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিনের আপন ভাই সোহেল রানা।
দু’হাজার সাত সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপ ইঅরেঞ্জের বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রাহকরা টাকা নিয়ে সময়মত পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ করেছেন।
আরো পড়তে পারেন:
বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর:
পণ্য ডেলিভারি না দেয়া এবং অগ্রিম অর্থ ফেরত না দেয়ায় ইঅরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এখন কারাগারে।
বিএসএফ জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা শুক্রবার বিকেলে শেখ মো. সোহেল রানাকে চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করেছে।
দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল দিয়ে তিনি দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেন বলে বিএসএফ বলছে।
বিএসএফ কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতারের পর মি. রানা তাদের জানিয়েছেন যে পুলিশ বিভাগ থেকে সাত দিনের ছুটি নিয়ে তিনি সীমান্তের দিকে রওনা হন।
তার গন্তব্য ছিল নেপালের কাঠমান্ডু। সেখানে তার এক বোন থাকেন।
বোনের স্বামীর ভারতের শিলিগুড়িতে এসে তাকে নেপালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
আটক পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড এবং ব্রিটেনের একটি ব্যাংকের কার্ড পাওয়া গেছে বলে বিএসএফ জানিয়েছে।
তার পাসপোর্টে থাইল্যান্ড, সৌদিআরব, ফ্রান্সি, চীনসহ বিভিন্ন দেশের ভিসা রয়েছে বলে বিএসএফ বলছে।
তবে ইঅরেঞ্জের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে সোহেল রানা বিএসএফকে জানিয়েছেন যে তিনি নিরপরাধ এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বাংলাদেশর কোন আদালতে প্রমাণিত হয়নি।
কী বলছে বাংলাদেশের পুলিশ
ওদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোঃ. আসাদুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, শেখ সোহেল রানা ভারতে আটক হওয়ার বিষয়টি তারা গণমাধ্যমের সাহায্যে জেনেছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে ভারত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানানো হয়নি বলে তিনি বলেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি এবং বিবরণ দেখে আটক করা ব্যক্তিকে বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানা বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
মি. রানা গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ থানায় অফিস করেছেন বলে জানান উপ-কমিশনার মোঃ. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ইঅরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন সোহেল রানার আপন বোন।
“যেহেতু তার আপন বোন এবং পরিবারের সদস্যরা ইঅরেঞ্জের সাথে জড়িত, সেজন্য আমরা সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করছিলাম,” তিনি বলেন, “এখানে তার (সোহেল রানা) কোন সম্পৃক্ততা আছে কি না সেটিও আমরাও খতিয়ে দেখছিলাম।”
জিজ্ঞাসাবাদের পর সোহেল রানাকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে সোপার্দ করা হয়েছে।