জাহালমকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি
বিনা দোষে নিরীহ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে তিন বছর জেল খাটানোর জন্য তাঁকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, দ্রুত জাহালমকে এ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করা হবে।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারেক আলী বলেন, ‘নিরীহ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। আর যেন জাহালমের মতো নির্দোষ কাউকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি না করা হয়।’
নিরীহ পাটকল শ্রমিক জাহালম চরম অন্যায়ের শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অসংখ্য জাহালম, বাংলাদেশের কারাগারে পচে মরছেন। জাহালমের ক্ষতিপূরণ কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা হওয়া উচিত। জাহালম দিনের পর দিন শুধু কারাগারে কেঁদেছেন। পরিবার থেকে তাঁকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। চাকরি থেকে বিযুক্ত রাখা হয়।’সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ বলেন, ‘জাহালম দুদকে হাজিরা দিয়েছেন, আদালতে হাজিরা দিয়েছেন , অনেকগুলি পর্যায়ের পর জাহালমকে জেলে যেতে হয়েছে। তাঁকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
জাহালমের ক্ষতিপূরণ দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তাদের কথায় বারবার উঠে আসে ঋণ খেলাপি প্রসঙ্গ।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের নেতা সালেহ আহমেদ বলেন, আজকে বাংলাদেশ ঋণ খেলাপির যে সংস্কৃতির মধ্যে ঘুমিয়ে আছে, সেই জায়গা থেকে উত্তরণের জন্য অবলোপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কার টাকা আপনারা অবলোপন করছেন, যে কালোবাজারিরা এই সমাজটাকে ধ্বংস করছেন, যে কালো টাকার কারণে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদের উত্থান।
জাহালমের মতো আর কেউ জেল খানায় পচে মরছে কি না, তা খুঁজে দেখার দাবি জানান সংগঠনটির আরেক নেতা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সবুজ। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে আজাদ বলেন, ‘নির্দোষ জাহালম কত আকুতি মিনতি করেছিলেন আমাদের প্রশাসনের কাছে, বিভিন্ন লোকজনের কাছে। কিন্তু কেউ শোনেনি তাঁর কথা।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এস এম এ সবুর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার শামছী, অর্থ সম্পাদক মামুনুর রশীদ ও পারভেজ হাসেম।
গত ২৮ জানুয়ারি দৈনিক প্রথম আলোয় ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় । প্রতিবেদনটি সেদিন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। ৩ ফেব্রুয়ারি শুনানি নিয়ে আদালত সেদিন জাহালমকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশের পর জাহালম কাশিমপুর কারগার থেকে মুক্তি পান।