7 Reasons We Won’t Forget 2012 – Zia Hassan
হুমায়ুন আহমেদ এর চলে যাওয়ার বছর/ The year Humayun Ahmed left us
হুমায়ুন আহমেদ এর যে ক্যান্সার হয়েছে সেটা অনেক পুরোনো খবর ।ক্যান্সার তো কত জনেরি হয়। রিকাভার করে। হুমায়ুন আহমেদ ছিলেন এক জন ফাইটার। তাই আমরা তেমন চিন্তা করিনাই। খবরে এসেছিল উনি রিকাভার করছেন। পৃথিবীর সেরা হাস্পাতালে বাংলাদেশের সেরা সাহিত্যিক এর চিকিতশা হচ্ছে। নিসচই ভালই হচ্ছে। তাই উনার মৃত্যুর সংবাদ টা ছিল একটা ভয়াবহ শক। উনাকে ছাড়া জীবন যে কত বড় শুন্যতা সেই টা, উনি চলে যাওয়ার পর বুঝছি আমরা। হুমায়ুন আমাদের তিন চার টা জেনারেশান এর মন আর মানস গড়ে দিয়েছেন। উনি একলাই বাংলাদেশে একটা পাঠক শ্রেণী আর বই এর ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলেছেন। উনার চলে যাওয়া, উনার প্রতি টা পাঠক এর কাছে, খুব ঘনিষ্ঠ একটা ছোটকালের এর এক সাথে এত বছরে ধরে পথ চলা একজন বন্ধুর হঠাৎ চলে যাওয়ার মত কষ্টকর। স্যার, আপনি যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন। উই মিস ইউ সো মাচ।
শেয়ার মার্কেট এর ধস মেনে নেয়ার বছর/ The year the stock market collapsed
শেয়ার মার্কেট পড়েছে ২০১০ এর শেষে। ভন্ড পির এর পানি পরা দিয়ে কান্সার সারানোর লোভ দেখানোর মত এর লোভ দেখিয়ে ৩০ লক্ষ মধবিত্তের সঞ্চয় কে শেয়ার মার্কেটে টেনে আনা হয়। সেই লোভে বাবার পেনশন, বোন এর বিয়ের জন্যে জমানো টাকা, মা এর গয়না বেচে বের করা টাকা কে দরবেশ আর লোটা কম্বল দের হাতে তুলে দিয়ে সরবসান্ত করে দেয়া হয়েছে লক্ষ লক্ষ পরিবার। ২০১০ এর শেষে সেই শেয়ার মার্কেট আমাদের অনেকের ভবিষৎবাণীকে সত্য করে দিয়ে তাসের ঘর এর মত ভেঙ্গে পরে। ২০১১ গেছে তারপর প্রতিবাদে মিছিলে। কিন্তু ২০১২ তে এসে, বাঙ্গালি মেনে নিল এই সেয়ার মারকেট কে। যেন এইটাই ছিল ভবিতব্য। এই ভন্ড পির, দরবেশ আর লোটা কম্বল এর দেশে প্রতিবাদের কোন মূল্য নেই। র্যেব আর পুলিশ এর বাড়ি খেয়ে সবাই চুপ মেরে গেছে। মাঝে মাঝে একটা দুইটা আত্মহত্যার খবর, ভেতরের কাগজে জানান গিয়ে গেছে, মানুষ চুপ করে থাকলেও ক্ষরণ এখনো থামেনি।
পদ্মা ব্রিজ এর সিটকমের এর বছর।/ One year of the Padma Bridge sitcom
আমাদের টিভি তে ভাল কমেডি নাটক নাই। কিন্তু সেই শুন্যতা পুরন করেছে সরকার এর পদ্মা ব্রিজ ফিয়াস্কো। দেখার মত ছিল এই নাটক টা। কি নাই। হিরো, এন্টি হিরো, এক্সন, কমেডি, হটাথ গতি পরিবর্তন। কয় দিন বিশ্ব ব্যাংক, কয় দিন মালেসিয়া। তার পর চীন। তার পর না না, মালায়সিয়া।বিশ্বব্যাংক খারাপ। ওদের চুরি কে দেখে ? কিন্তু আবার বিশ্বব্যাংক, আমাদের এক টাকাও দুর্নীতি হয়নি। প্রমাণ দেন। মালেসিয়াই ভালো। ভাত্রিপ্রতিম ইসলামী দেশ । এরপর আবার বিশ্বব্যাংক। চার টা শর্ত মানলেই হবে। এর পড়ুন আ না বিশপ ব্যাংক খারাপ। ডাক্তার ইয়ুনুস এর ষড়যন্ত্র। এর পর আবার বিশপ ব্যাংক। সবাই চুপ। কেও এই নিয়া কথা বলবানা। আবুল কি আসামী হবে নাকি হবেনা ? বিশ্বব্যাং ক খারাপ। ধুরর। …আচ্ছা থিক আছে, আবুল চোর।, কিন্তু দেশ প্রেমিক । ধর ধর ধর, আবুল রে ধর।
২০১২ তে এইটা স্বতঃসিদ্ধের মত প্রমাণিত হৈছে। সরকার ধরে নিসে। অমরা সবাই পার মাতাল বা গাঁজারু বা হিরইঞ্ছি।
রামু ঘটনা-হাজার বছরের এর সহবস্থান এর সংস্কৃতি কে অপমান এর বছর/ Ramu incident: humiliating thousand years of secular harmony
সাম্প্রদায়িতা আমাদের দেশে নতুন না। সাম্প্রদায়িক ভায়লেন্স আমাদের দেশে ইতি পূর্বে কম বেশি হয়েছে। কিন্তু তার স্কোপ ছিল সীমিত। এবং সাধারণত, কোন বিশেষ ব্যাক্তির উদ্দেশ হাসিল এর জন্যে, মেইনলি সম্পত্তি দখলের জন্যে সাম্প্রদায়িক ঘটনা গুলো ঘটছে বেশি। অথবা কোন ভূ রাজনৈতিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে মৌলবাদীরা, রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্যে কোন ঘটনা ঘটিয়েছে। এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রশাসন শক্ত ভাবে তা দমন করছে। কিন্তু রামুর ঘটনা টা ছিল আনপ্রেসিডেন্টেড এবং ঐ ঘটনায়, প্রশাষনের ভুমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। প্রথমত ঘটনাটা হয়েছে, আউট্ অফ ডা ব্লু। এর কোনকন্টেক্সট ছিলনা। আমরা এমন একটা জাতি যেই জাতি, হাজার হাজার বছর ধরে এক সাথে থেকেছে। আমাদের এই সৌহার্দ আমাদের একটা অহঙ্কার। মুসলিম প্রধান আর কোন দেশে এত সুন্দর সম্প্রীতি নাই। কিন্তু পুরো বিশ্বের সামনে, আমাদের মাথা হেঁট হতে হলো, রামুতে ঘটা সাম্প্রদায়িক ঘটনায়, কিছু কুলাঙ্গার এর জন্যে । এই লজ্জা ঘুচবার নয়।
ডেস্টিনি সহ সব এম এল এম এর ধরা খাওয়ার বছর/ The year all the MLMs including Destiny were busted
আওয়ামি লীগ আমলে, মধবিত্তের সম্পদ কে নিয়ে কেন ছিনি মিনি খেলা হয় তা কে জানে ? ডেস্টিনি ছিল প্রায় দশ বছর ধরে। কিন্তু এই সরকার এর আমলে তারা বিদ্যুৎ এর গতি তে আগাতে থাকে। এক দিকে, শেয়ার মার্কেট এ মূল্য ব্রিধি, আরেক দিকে এম এল এম। পাল্লা দিয়ে মানুষ তাদের সঞ্চয় এর টাকা এদের কাছে দিয়ে গেছে। বিশ্বাস করেছে, ১০০ টাকা দিলে তা এক বছরে হয়ে যাবে ২০০ টাকা । এই টাই ত হওয়ার কথা। শেয়ার মার্কটে যদি হয় তো ডেস্টিনি বা অন্য এম এল এমে কেন নয়। টাকা ব্যাংক এ রাখলে লস। সরকার নিজেই বলেছে, এই যে শেয়ার এর দাম বাড়ছে মানে ইকনমি ভাল।ডেস্টিনির উদবধনি অনুষ্ঠানে তো বাণিজ্য মন্ত্রী নিজে গেছে। যে প্রতিষ্ঠানের এম ডি, জেনারেল হারুন এর মত একজন সেক্টর কমান্ডার, সেই প্রতিষ্ঠান কেমনে খারাপ হবে ? দাও দাও, আর টাকা দাও। ওরা গাছ লাগাচ্ছে। সেই গাছ বড় হবে। বড় হয়ে ফুল ফল দিবে। সেই গাছের কাঠ থেকে ফার্নিচার হবে।কেন না। সব মিলে ধরা খেল ২০১২ তে।
তাও খেতে হলো, প্রথম আলোর প্রতিবেদন এর পর, যেন কেও আগে বলে নাই এই সম্পরকে।
সরকারী ব্যাংক এর ধসে পরার বছর/ The year the state banks collapsed
সরকার যখন সরকারি ব্যাংক গুলোর ডাইরেকটর হিসেবে, ছাত্র লীগ এর নেতা, ইউনিভারসিটির তেল মারা শিক্ষক আর মন্ত্রী মিনিস্টার দের ভাইপো দের কে নিয়োগ দেয়া শুরু করল। আমরা অনেকেই বলেছিলাম, এইটা খারাপ হচ্ছে । সরকার ঐ সময় আকাশে উড়ছিল ব্রুট মেজরিটির গর্বে। কারো কথা কেন দেয় নি। যা হওয়াটা অবশম্ভাবি ছিল তাই হৈছে। যারা ব্যাবসা বাণিজ্যের সাথে জড়িত তারা জানে, ব্যাংক থেকে এই দেশে লোন পাওয়া কত কঠিন কাজ। কিন্তু এক অবিস্মরণীয় দুর্নীতির মাধমে হলমারক এর মত ভইফোর কম্পানি ব্যাংক, প্রশাসন এবং রাজিনিতি বিদসহজোগে ৩৬০০ কোটি টাকা ভুয়া লোণ নিয়ে গেছে।শুধু হলমারক নয় আর অনেক গুলো কম্পানি ১০০, ২০০ কোটি টাকা এই ভাবে বের করে নিসে। শুধু মাত্র ৩৬০০ কোটি টাকার সাথে তুলনা করলে ফিগার গুলো কম বলে, ঐ আলোচনা আসছেই না।
মানুষের জীবনের দাম এক লাখ টাকা নিরধারিত হওয়ার বছর/ The year human life was priced at 1 lakh taka
সারা বছর মানুষ মরেছে দুর্ঘটনায়। সরকার ছিল নির্বিকার। তাজরিনগার্মেন্টস এ ১১২ জন শ্রমিক আগুনে পুরে মরে গেল, গারডার পরে মরলো,লঞ্চ দুর্ঘটনায় মরল, বাস উলটে মরল ৫০ জন ছাত্র। আমাদের গোল্ড ফিশ মেমরি , বেশি হলে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন, বা মৃত সংখ্যার দশ এর গুনিতক সপ্তাহ ঘটনা গুলো থেকেছে আমাদের কালেক্টিভ মাইন্ডসেটে। কোন মৃত্যু তে সরকার এর টনক নড়েনি।
কোন মানবিকতার প্রয়োজন নাই, কোন উদ্বেগের প্রয়োজন নাই, কোন জাগ্রত হওয়ার প্রয়োজন নাই, কোন কারেক্তিভ মেজার নেয়ার প্রয়ওজন নাই। সরকার এর স্ট্যান্ডার্ড রিয়েকশান ছিল। ন প্রব্লেম, পার পারসনএক লাখ টাকা।২০১২ তে প্রমাণিত হলো, আমাদের প্রতি মানুষে প্রান এর মূল্য এক লাখ টাকা।
যেই দেশে, ৫০% মানুষ পভারটি লাইন এর নীচে আর তার ধারে কাছে থাকে, সেই দেশে প্রতি টা প্রান এর মূল্য এক লাখ তাকা কম নয়। কি বলেন ?
আসেন এখন সবাই, খুশি তে কোলাকুলি করি। সবাই কে হ্যাপি ২০১৩ মোবারক ।