Site icon The Bangladesh Chronicle

বিদেশিদের বাড়ি কেনার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে কানাডা

কানাডায় বিদেশিদের বাড়ি (আবাসিক স্থাপনার মালিকানা) কেনার ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও দুই বছরের জন্য বাড়ানো হচ্ছে। আবাসন সংকটে থাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বাড়িঘর সহজলভ্য করতে এবং বাড়ির আকাশছোঁয়া দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে আনতে দেশটি এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। খবর: রয়টার্স।

এর আগে গত বছরের জানুয়ারিতে কানাডায় বিদেশিদের বাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। সর্বশেষ পদক্ষেপে সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও দুই বছরের জন্য বাড়ানো হবে।

কানাডিয়ান আবাসনে বিদেশি মালিকানার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও দুই বছরের জন্য বর্ধিতকরণের ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। দেশটি বলেছে, দেশজুড়ে নগর ও শহরে হাউজিং মার্কেটে আকাশছোঁয়া দামের বিষয়ে কানাডিয়ানদের উদ্বেগ দূর করার উদ্দেশে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তীব্র চাহিদার কারণে আবাসন ক্রয়ক্ষমতার সংকটে রয়েছে কানাডা। এর জন্য অভিবাসী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যার বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়েছে। মূলত ক্রমবর্ধমান খরচ যেমন বাড়ি নির্মাণকে ধীর করে দিয়েছে ঠিক তেমনিভাবে বাড়ির চাহিদাও অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে।

কানাডার উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, কানাডিয়ানদের জন্য আবাসন আরও সাশ্রয়ী করতে কানাডিয়ান আবাসনে বিদেশি মালিকানার ওপর চলমান নিষেধাজ্ঞাÑযা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি মেয়াদ শেষ হতে চলেছে, আগামী ২০২৭ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হবে।

কানাডিয়ান সরকার বলেছে, দেশজুড়ে বিভিন্ন নগর ও শহরে হাউজিং মার্কেটে আকাশছোঁয়া দামের পাশাপাশি বিদেশি মালিকানার বিষয়টি কানাডিয়ানদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।

এর আগে গত মাসে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীর আগমন এবং তার জেরে দিন দিন আবাসন সংকট তীব্র হতে থাকায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানায় কানাডা। কানাডার অভিবাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে সে সময় জানা যায়, চলতি ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রবেশ অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে যত সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থীকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছিল, শতকরা হিসেবে এই সংখ্যা তার চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম। এমনকি স্নাতক শেষ করার পর কিছু শিক্ষার্থীকে ওয়ার্ক পারমিট দেয়া বন্ধ করবে কানাডা। কারণ আবাসন সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এমন রেকর্ড সংখ্যক নবাগতদের লাগাম টানতে চায় উত্তর আমেরিকার এই দেশটি।

এছাড়া অভিবাসনের কারণে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেটি স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার মতো পরিষেবার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে এবং একই সঙ্গে আবাসন খরচ বাড়াতেও সাহায্য করেছে। এই বিষয়গুলো লিবারেল প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সমর্থনে ভাটার সৃষ্টি করেছে। জনমত জরিপগুলোয় দেখা যাচ্ছে, কানাডায় এখন নির্বাচন হলে তাতে হেরে যাবেন জাস্টিন ট্রুডো।

২০২১ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চলার সময় জাস্টিন ট্রুডো দুই বছরের সাময়িক নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দেন। তখন ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির কারণে বাড়ির মালিকানা কেনাটা অনেক কানাডীয় নাগরিকের নাগালের বাইরে ছিল। নির্বাচনে বিজয় লাভের পর লিবারেলরা ‘প্রহিবিশন অন দ্য পারচেজ অব রেসিডেনসিয়াল প্রোপার্টি বাই নন-কানাডিয়ানস অ্যাক্ট’ নামের একটি আইন প্রণয়ন করেন। আইনটিতে বেশ কিছু ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে। এ ব্যতিক্রমের আওতায় উদ্বাস্তু ও কানাডার স্থায়ী বাসিন্দারা (যারা নাগরিক নন) বাড়ি কিনতে পারবেন। কানাডা কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পরিষ্কার করতে গিয়ে আরও বলেছে, শুধু বাড়ি কেনার ক্ষেত্রেই এ

নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। সামার কটেজের (গ্রীষ্মকালীন অবকাশযাপন কেন্দ্র) মতো বিনোদনমূলক আবাসন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে না।

এছাড়া ভ্যানকুভার ও টরন্টোর মতো বড় বাজারগুলোয়ও নন-রেসিডেন্ট (স্থায়ী বাসিন্দা নন) এবং ফাঁকা বাড়িঘরের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে।

share biz

Exit mobile version