জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্যাম ভেঙে যাওয়ায় জলপাইগুড়ির তিস্তায় দুই কূল ছাপিয়ে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সমতলে। বিপদ এড়াতে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিপদসীমার উপরে বইছে তিস্তার পানি। এমন অবস্থায় তিস্তা সংরক্ষিত বা অসংরক্ষিত দু পাড়েই রেড অ্যালার জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গের সেচ দপ্তর। পানির চাপ সামাল দিতে তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ থেকে বুধবার সকাল ৭টায় রেকর্ড পানি বাংলাদেশের দিকে ছাড়ে ভারত। সকাল ৭টায় ২ লাখ ৪৮ হাজার ১২০ কিউসেক পানি ছাড়ে ভারত। এরপর সকাল ৯টায় সেই সেই পানি ছাড়ার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৩৫ কিউসেক।
পশ্চিমবঙ্গ সেচ দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় এই পানি ছাড়ার পরিমাণ প্রায় একইভাবে অব্যাহত থাকবে। মনে করা হচ্ছে এমন ঘটনার জেরে বুধবার দুপুরের পর থেকে ভয়ঙ্কর বন্যার মুখোমুখি হবে তিস্তা পারের মানুষজন। এর ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিকিমের চুংথাং হ্রদ উপচেপড়ায় তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। গাজলডোবা, দোমোহনী, মেখলীগঞ্জ ও ঘিশের মতো নিচু এলাকাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
হঠাৎ বন্যার ঘটনায় সিকিম প্রশাসন সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, পানিতে ভেসে গেছে সড়ক। নদীতে জলোচ্ছ্বাসের মতো অবস্থা।
আকস্মিক বন্যায় হু হু করে পানি ঢুকে পড়েছে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। পানির স্তর দোতলা বাড়ির সমান বেড়ে গেছে। তিস্তা নদীর পানিতে তলিয়ে যায় সেনাবাহিনীর ৪১টি গাড়ি। নিখোঁজ সেনা সদস্যরা ভেসে গেছে নাকি পাহাড়ের খাদে পড়েছে তা জানা যায়নি। এরই মধ্যে আবার ধস নামতে শুরু হয়েছে।
এদিকে সিকিমে তিস্তা নদীতে আকস্মিক বন্যায় ২৩ জন সেনা সদস্য নিখোঁজ হয়েছেন। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করার জন্য ব্যাপক তল্লাশি চলছে। সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড জানিয়েছে, লাচেন উপত্যকার কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চুংথাং বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার ফলে হঠাৎ করে পানির স্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচুতে প্লাবিত হয়।