Site icon The Bangladesh Chronicle

এই বুড়ো লোকটির নাম হেমায়েত উদ্দিন। হেমায়েত বাহিনীর প্রধান বীর বিক্রম হেমায়েত উদ্দিন।

From Facebook entry      31 July 2021
এই বুড়ো লোকটিকে চিনেন?? চেনার কথা নয়? চিনিয়ে দেই। উনি তৎকালীন পাকিস্তানি আর্মি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের হাবিলদার পদে চাকরি করতেন।
উনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার অপরাধে রাজাকাররা তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করার হুমকি দিয়েছিলো। এটা শুনে যুদ্ধের ময়দান থেকে বাড়ী এসেছিলো স্ত্রী সন্তানের খবর নিতে। এসে দেখলো তাঁর স্ত্রী সতীত্ব বাচাতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্বহত্যা করেছে। বাচ্চারা একজনও বেচে নেই।
পাহাড় সমান শোককে শক্তি করে বাড়ি ছেড়েছিলেন আর দেশ স্বাধীন করেই তবে বাড়ী ফিরেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধার এক দুধর্ষ গেরিলা বাহিনী গড়েছিলেন যারা বরিশাল, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর আর বাগেরহাট এলাকায় দুর্দান্ত প্রতাপের সাথে যুদ্ধ করে পাকিস্তানী হানাদার আর তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকারদের পরাভুত করেছে।
একদিন সম্মুখ যুদ্ধে একটা বুলেট লোকটার গালের একপাশ দিয়া ঢুকে আরেক পাশ দিয়ে বেড়িয়ে যায়। আটটা দাঁত পড়ে গেল। ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিলো তবুও লোকটা যুদ্ধ থামায় নি, অজ্ঞান হওয়ার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে গেছে এবং শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদাররা পরাজিত হয়ে পালিয়েছিলো।
এই বুড়ো লোকটির নাম হেমায়েত উদ্দিন।
হেমায়েত বাহিনীর প্রধান বীর বিক্রম হেমায়েত উদ্দিন।
শুধু বাংলাদেশের না, সমগ্র মডার্ন মিলিটারি ইতিহাসের অন্যতম গেরিলা লিজেন্ড। পাকিস্তানিদের বকা দেয়ার সময় হয়তো কাজে লাগবে না কিন্তু নিজেদের আত্ম-পরিচয় খুঁজতে গেলে কাজে লাগবে।
২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর এই লোকটা ঘুমিয়ে গেছে।অনন্ত ঘুম। কেউই মনে রাখেনি। এই মাটিতে এরকম আরো অনেক হেমায়েত ঘুমায়। তাতে কার কি আসে যায়??
সত্যটা কি জানেন এইটা হেমায়েতগো দেশ। এই দেশটা হেমায়েতরা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য স্বাধীন করে দিয়ে গেছে।
প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা এভাবেই নীরবে নিভৃতে হারিয়ে যায় লোকচক্ষুর অন্তরালে………
বিনম্র শ্রদ্ধা। পরপারে ভালো থাকুন।
(ডাঃ আশিকের টাইমলাইন থেকে)
Exit mobile version