Minar Rashid
এক জাহাজের ঘটনা। চীফ কুকের আনহাইজেনিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কাপ্তানের কাছে অভিযোগ এনেছেন জাহাজের অন্যান্য ক্রুরা । প্রমাণ স্বরূপ রান্না করা ভাতের মধ্যে একটা মৃত তেলাপোকা হাজির করা হয়েছে ।
রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে কাপ্তান চীফ কুককে জিজ্ঞেস করেন,
এটা কী চীফ কুক ?…
চীফ কুক পাল্টা প্রশ্ন করে , কোনটা স্যার ?
– এই যে , দেখতে পাচ্ছেন না , ভাতের মধ্যে মরা তেলাপোকা !
আচমকা তেলাপোকাটা মুখে ঢুকিয়ে গিলতে গিলতে বলে , কই স্যার তেলাপোকা ?
এটা দেখে অতি শোকে পাথর হয়ে কাপ্তান কপালে হাত দিয়ে বসে পড়েন । দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যা বাদীর এমন কান্ড কারখানা দেখে উপস্থিত সবাই বাক হারিয়ে ফেলেন । নোয়াখালীর এক সারেং সারা জাহাজ কাঁপিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠেন , ওয়াস্তাগফিরুল্লাহ!
এই চীফ কুককেও হার মানিয়ে ফেলেছেন সৈয়দ বংশের সন্তান জনাব আশরাফ । দেশের কোটি কোটি মানুষের অভিজ্ঞতা ও দিব্য চক্ষুকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দাবি করেছেন , আওয়ামী লীগ সরকার আমলে গত সাত বছরে দেশের কোনো পর্যায়ের নির্বাচনেই একটিও জাল ভোট পড়েনি ।
শনিবার নিজের জেলা কিশোরগঞ্জে দলীয় এক কর্মী সমাবেশে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ কখনও ভোট কারচুপি ও ডাকাতির মাধ্যমে জয়লাভের স্বপ্ন দেখে না। কোনো পর্যায়ের নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ আমলে একটিও জাল ভোট পড়েনি।”
উপরে বর্ণিত চীফ কুকের চেয়েও বড় ধাক্কা দিয়েছেন বা জাতিকে বিষ্ময়ে হতবাক করেছেন বর্তমান সরকারের অন্যতম নীতিনির্ধারক এই মন্ত্রী সাহেব। এদের কোন চক্ষুলজ্জা নেই , বিবেকের দংশন নেই । গণতন্ত্রের জন্যে দরকার মিনিমাম চক্ষুলজ্জা যা এই সরকার সম্পূর্ণ খুঁইয়ে ফেলেছে । জনগণ থেকে এরা কতটুকু বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেটা তাঁর এই উক্তিতে ফুটে উঠেছে।চক্ষুলজ্জাবিহীন এই সরকার একটা টোকাইকে দিয়ে তথাকথিত ‘আসল বিএনপি ‘ বানিয়েছে । সেই টোকাইকে দিয়ে এদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দলটিকে নানা ভাবে খোঁচাচ্ছে, বিরক্ত করছে। এদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির জন্যে নতুন উপদ্রব এই টোকাই বান্দরের গলার রশিটি কার হাতে , তা বুঝতে কারোরই কষ্ট হচ্ছে না । এদেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল ও নৈতিক মান কোন পর্যায়ে নেমে গেছে – এই টোকাই বান্দরের সাম্প্রতিক লমফ জম্ফ তার বড় প্রমাণ । তাছাড়া ‘ক্যারট অর স্টিক ‘ ফর্মুলা প্রয়োগ করে বিএনপির কিছু নেতাকে বের করে এনে ‘আসল বিএনপি ‘ বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সংবাদ ছড়িয়েছে। এদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই ধরনের দলছুটরা অচিরেই রাজনৈতিক টোকাই ( কেউ কেউ জোকার ) হয়ে পড়ে। দলের কর্মী সমর্থকগণ এদেরকে সুবিধাবাদী ও বিশ্বাস ঘাতক হিসাবে জ্ঞান করে। অবৈধ এই সরকারকে সমর্থন দেয়াতে এরশাদের গ্রহনযোগ্যতা যতটুকু অবশিষ্ট ছিল সেটুকুও খুঁইয়ে ফেলেছে। প্রাক্তন মন্ত্রী নাজমুল হুদা দিন দিন হাস্যকর ও করুণার পাত্র হয়ে পড়ছেন । এত বছর রাজনীতি করার পর এবং সরকারের এত বড় পদে থাকার পরেও যারা এই বিষয়টি ধরতে পারেন না , তাদের প্রতি সত্যি করুণা ছাড়া অন্য কিছু করা যায় না । রাজনীতিতে নিজের গুরুত্ব কমে গেলে কিংবা কোন প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে উত্তম হলো নিজের সম্মান ও ব্যক্তিত্ব বজায় রেখে আলগোছে সরে পড়া। কোন অবস্থাতেই রাজনীতির বড় প্লেয়ার থেকে এই ধরণের টোকাই না হওয়া।