Site icon The Bangladesh Chronicle

৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রেকর্ড লোডশেডিংয়ের চোখরাঙানি

চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল। এ সময় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা উঠে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর ঢাকায় পারদ উঠেছে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে; যা ঢাকার ইতিহাসেও তৃতীয় সর্বোচ্চ। স্বাভাবিকভাবেই সে সময় বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। তবে চাহিদা অনুপাতে উৎপাদন না হওয়ায় গতকাল চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয় বেলা ২টায়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, গতকাল বেলা ২টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ১২ হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট। সে সময় লোডশেডিং করা হয় তিন হাজার ১৯৬ মেগাওয়াট। এটি দেশের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ লোডশেডিং। এছাড়া বেলা ৩টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ১৩ হাজার ১৫ মেগাওয়াট। সে সময় লোডশেডিং করা হয় তিন হাজার ৪২ মেগাওয়াট। চলতি বছর গতকালই লোডশেডিং প্রথম তিন হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করে। যদিও বিকাল ৪টা থেকে ক্রমেই উৎপাদন বাড়ায় লোডশেডিং হ্রাস পায়।

এর আগে গত বছর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয় ৭ জুন বিকাল ৪টায়। কয়লা সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় সে সময় তিন হাজার ৪১৯ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছিল। আর ৬ জুন বিকাল ৪টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয়েছিল তিন হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট। এছাড়া ৭ জুন বিকাল সাড়ে ৩টায় তিন হাজার ২৮০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।

৬ জুন রাত ১টায় লোডশেডিং হয়েছিল তিন হাজার ২৬৬ মেগাওয়াট ও ৫ জুন রাত ১টায় তিন হাজার ২১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছিল। এছাড়া গত বছর ৭ জুন দুপুর ৩টায় তিন হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। তবে দেশের ইতিহাসে লোডশেডিং প্রথম তিন হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায় ৩ জুন দিবাগত রাত ১২টায়। ওই সময় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৮১ মেগাওয়াট। আর ৪ জুন রাত ১টায় লোডশেডিং করা হয় তিন হাজার ২৪ মেগাওয়াট।

পিডিবির তথ্যমতে, তাপমাত্রার পাশাপাশি বিদ্যুতের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় গতকাল বিকাল ৪টা থেকে লোডশেডিং কমতে শুরু করে। এ সময় লোডশেডিং হয় দুই হাজার ৯২৯ মেগাওয়াট। এছাড়া বিকাল ৫টায় লোডশেডিং হয় দুই হাজার ৭০৭ মেগাওয়াট, সন্ধ্যা ৬টায় এক হাজার ৮৯২ মেগাওয়াট, ৭টায় এক হাজার ৯৪৮ মেগাওয়াট, রাত ৮টায় এক হাজার ৬৯২ মেগাওয়াট ও ৯টায় এক হাজার ৫৩৩ মেগাওয়াট।

রাত ৯টায় (পিক আওয়ার) বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৭ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। যদিও ওই সময় উৎপাদন করা হয় ১৫ হাজার ৫৯৫ মেগাওয়াট। যদিও এক সপ্তাহ আগে ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছিল। তবে এর পরের দিন থেকেই পিক আওয়ারে (রাত ৯টা) সর্বোচ্চ উৎপাদন কমছে।

পিডিবির তথ্যমতে, বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। কিন্তু সারাদিনে ১৬ হাজার মেগাওয়াটও উৎপাদন করা যাচ্ছে না। শুধু জ্বালানি সংকটেই এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ হয়ে আছে। এর মধ্যে জ্বালানি তেল সংকটে ২৭টি, গ্যাস সংকটে ৯টি ও কয়লা সংকটে ২টি কেন্দ্র পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ রয়েছে। এতে চার হাজার ৭৮১ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে রয়েছে। আর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রয়েছে আরও দুই হাজার ১৮৭ মেগাওয়াট সক্ষমতার কেন্দ্র।

sharebiz

Exit mobile version