দেশে চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১৫৩ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে, যা দেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, আলোচ্য সময়ে সরকারি ব্যাংকগুলো ৪০ কোটি ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ৭ কোটি ৮১ লাখ ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো ১০৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এনেছে।
মাসের প্রথম ১৯ দিনে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এনেছে ইসলামী ব্যাংক, যা পরিমাণে ৩০ কোটি ৮১ লাখ ডলার। জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার এসেছে। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংক ১০ কোটি ৪০ লাখ, ব্র্যাক ব্যাংক ৯ কোটি ৬৩ লাখ, রূপালী ব্যাংক ৯ কোটি ৬০ লাখ, অগ্রণী ব্যাংক ৯ কোটি ৫১ লাখ, ব্যাংক এশিয়া ৭ কোটি ২৮ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এনেছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে প্রবাসী আয়ের প্রবাহে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। গত মাসে প্রবাসী আয় আবার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওই মাসে চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে। সর্বোচ্চ ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল জুনে। একক মাস হিসেবে গত তিন বছরের মধ্যে এটিই দেশে সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রবাসী আয় আসার রেকর্ড। এর আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে এসেছিল ২৫৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। দায়িত্ব নিয়েই তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে আর্থিক খাতের উন্নয়নে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার-সংকট কাটাতে আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে বিনিময় হার নির্ধারণের ক্রলিং পেগ ব্যবস্থায় ডলারের মধ্যবর্তী দর ১১৭ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত বাড়াতে পারে ব্যাংকগুলো। এ কারণে প্রবাসী আয় কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো এখন ডলারের দাম কিছুটা বেশি দিতে পারছে। এ ছাড়া জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে বৈধ পথে প্রবাসী আয় না পাঠানোর যে প্রচারণা ছিল, তাতেও পরিবর্তন এসেছে। ব্যাংকাররা বলছেন, এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রচারণায় সাড়া দিয়ে অনেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাচ্ছেন।
prothom alo