Site icon The Bangladesh Chronicle

হেঁটেই পার হওয়া যাচ্ছে তিস্তা

গঙ্গাচড়া (রংপুর) সংবাদদাতা
 ০৫ এপ্রিল ২০২৩

হেঁটেই পার হওয়া যাচ্ছে তিস্তা

চৈত্র মাসেই তিস্তায় হাঁটুপানি। হেঁটে তিস্তা নদী পাড়ি দিচ্ছে মানুষ। নদীর প্রস্থ এখন ২০ থেকে ২৫ ফুট। নৌপথ প্রায় বন্ধ।

তিস্তার চরে কাজ শেষে হেঁটে নদী পার হয়ে আসছিলেন গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক গ্রামের মকতুবুল, মনির। এ সময় তারা জানান, তিস্তায় এখন হাঁটুপানি। হেঁটে পার হওয়া যায় সহজেই। প্রমত্তা তিস্তা ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে। কমে এসেছে পানিপ্রবাহ। ক্ষীণ হয়ে এসেছে নদী। হ্রাস পেয়েছে নাব্য। শুষ্ক মৌসুমে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর-ডুবো চর।

প্রতি বছর বর্ষায় তিস্তার বুকে নেমে আসে বালু। এই বালু  জমে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় নদীর নাব্য হ্রাস পাওয়ায় নৌপরিবহনে দুর্ভোগ বেড়ে যায়। তবে এ বছর বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে তিস্তায় পানি গত বছরের চেয়ে অনেক কমে গেছে। প্রতি বছর তিস্তার তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে হারাতে বসেছে তার অতীত ঐতিহ্য। একসময় দূরদূরান্ত থেকে নৌযানে ব্যবসায়ীরা আসত বাণিজ্য করার জন্য। সেই দৃশ্য এখন তেমন চোখে পড়ে না। সেই সঙ্গে তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে সহজেই দুই কূল ছেপে বন্যা আসে। ভাঙে আবাদি জমি, ঘরবাড়ি। নিঃস্ব হয় শত শত পরিবার। তাছাড়া পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে নদীতে মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করতেন, তারা আজ অসহায়। নদীতে নেই আর আগের মতো মাছ। জেলেরা পেশা বদল করে চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়।

গঙ্গাচড়ার মহিপুর গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়া, জয়নাল, মজিবর ঘাটিয়াল—এরা পেশায় মত্স্যজীবী। নিজেদের ভিটেমাটি নেই। তাদের ভাষায়, গত ডিসেম্বর মাস থেকে তারা বলতে গেলে বেকার। নদীতে পানি না থাকায় মাছ মিলছে না। তাই তারা এখন পেশা বদল করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন। কাজের সন্ধানে ছুটছেন দক্ষিণাঞ্চলে ও ঢাকা শহরে। তবে এর বিপরীত চিত্রও আছে। যারা কৃষক পরিবার তারা বেজায় খুশি, কারণ জেগে ওঠা চরে চাষাবাদ করে তারা ফসল ফলাচ্ছেন।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আখিনুজ্জামান বলেন, ‘শুকনো  মৌসুমে পানি তো একটু কম থাকবেই। এ  ব্যাপারে আমাদের করার কিছু নেই।’

Exit mobile version