Site icon The Bangladesh Chronicle

হঠাৎ উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল, বিপাকে ক্রেতারা

বাজারে হঠাৎ করেই বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ দেকানেই নেই ভোজ্যতেলটি। দু একটি দোকানে পাওয়া গেলেও বোতালের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে রীতিমত ক্রেতাদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াচ্ছেন দোকানিরা। গত এক সপ্তাহ ধরেই এই অবস্থা চলছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে দেখা যায়, অনেকেই বোতলজাত সয়াবিন কিনতে এসে পাচ্ছেন না। পেলেও দামে ভড়কে যাচ্ছেন।

কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার, তেজগাঁও কলোনি বাজার ঘুরে বেশির ভাগ দোকানে বোতলজাত ভোজ্যতেল পাওয়া যায়নি। দু-এক দোকানে পাঁচ লিটারের বোতল থাকলেও খুব সীমিত। এক বা দুই লিটারের বোতল একেবারেই নেই। অনেকেই লুকিয়ে রেখে পরিচিত ক্রেতাকে দিয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি নিচ্ছেন। এরই ধাক্কায় বেড়ে গেছে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম। ফলে দোকানিরা বাড়তি দর পেতে বোতল থেকে ঢেলে খোলা সয়াবিন হিসেবে বিক্রি করছেন। অধিক মুনাফা লোভী দোকানিরাই এমনটি করছেন।

সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, বোতলজাত সয়াবিন তেলের বোতল কেটে রাতের আঁধারে ড্রামে ঢেলে খোলা সয়াবিন হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। এজন্য ভোক্তারা দায়ী করছেন বাজার মনিটরি না থাকাকে।

জানা গেছে, বাজারে প্রায় এক মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট চলছে। সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট কমালে সরবরাহ কিছুটা বাড়ে। তবে এক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ আবার কমিয়ে দিয়েছে কম্পানিগুলো।

আগে ১৬৫ টাকা লিটার বিক্রি করা হলেও ২০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকা লিটারে বিক্রি করা হচ্ছে।

মগবাজারে বাজার করতে আসা আশরাফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘কয়েকটি দোকানে গিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাইনি। আমি সব সময় বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনে থাকি। কিন্তু বোতলজাত সয়াবিন না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে আমি খোলা সয়াবিন তেল কিনেছি। তাও আবার দাম বেশি। এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এখন দেখছি বোতলজাত সয়াবিন তেলের চেয়ে খোলা সয়াবিন তেলের দাম আরও বেশি।’

মালিবাগ বাজারের এক দোকানী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে কোম্পানির ডিলাররা তেল দিচ্ছে না। তাই আমরা খোলা সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’

বাড্ডার মুদি বিক্রেতা মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আগে নিয়মিত ৫ থেকে ৬টি কম্পানি তেল দিত, দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে মাত্র দুটি কম্পানি তেল দিচ্ছে। যা দিয়ে আমাদের চাহিদার ১০ শতাংশও পূরণ হচ্ছে না। বাকি কম্পানিগুলোর ডিলাররা জানাচ্ছেন তারা নাকি কম্পানি থেকে তেল পাচ্ছেন না।’

সম্প্রতি শুল্ক, কর কমিয়ে সয়াবিন তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু সয়াবিনের দাম কমেনি। বিক্রেতারা বলছেন, তারা চাহিদার ১০ শতাংশ তেলও পাচ্ছেন না।

এদিকে সরবরাহ বাড়ায় শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমেছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লাউ পিস হিসেবে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি টমেটো ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ টাকা। একইভাবে প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০-১১০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ১৪০-১৫০ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা।

উৎসঃ   dainikamadershomoy
Exit mobile version