স্বাধীনতা কারে কয় ? প্রতিবেশী ভারত আমাদের কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখবে,আমরা কিছু বলতে পারবনা। তাদের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স আমাদের সীমান্তে,তাদের রাইফেল রেঞ্জের মধ্যে যে কোন নিরীহ মানুষ দেখলে গুলিকরে হত্যা করবে। গরু ছাগল চরতে দেখলে ধরে নিয়ে যাবে। আমরা প্রতিবাদ করতে পারবনা,এর নাম স্বাধীনতা ?
উজানে বাঁধ দিয়ে আমাদের প্রায় সবকটা নদীর পানি তুলে নিয়ে যাবে, আমরা কিছু বলতে পারবনা, এর নাম স্বাধীনতা ?
বাংলাদেশের বাজারে অবাধ ভারতীয় পন্যের রমরমা বাজার, অথচ আমাদের পন্য ভারতের বাজারে ঢুকতে পারবেনা। এর নাম স্বাধীনতা ?
আমাদের সড়ক পথ, রেলপথ, নদীপথ ভারত ব্যবহার করবে, বন্দর গুলোতে ওদের প্রাধান্য থাকবে, বিনিময়ে আমরা কিছুই পাবনা,এর নাম স্বাধীনতা ?
বাংলাদেশে বেকারত্বের হার অন্তত: ১০ ভাগ। বিপুল যুবগোষ্ঠী দেশে কাজ না পেয়ে, বিদেশে মানবেতর খাটুনি খেটে আমাদর বিদেশী মুদ্রার চাকা সচল রাখতে সাহায্য করছে। তাঁদের সেই রক্ত-ঘামের টাকা লুটে নিয়ে যাচ্ছে, বেআইনী ভাবে বাংলাদেশে চাকরী ও বসবাস রত প্রায় ১০ লক্ষাধিক ভারতীয়।বাংলাদেশ নিশ্চুপ! এর নাম স্বাধীনতা ?
১৭ লক্ষ রোহিঙ্গাকে কে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়ে মায়ানমার ফেরত নিচ্ছেনা। বাংলাদেশ শুধু সাহায্যকারি খুঁজছে ! এর নাম স্বাধীনতা ?
এই ঢাকার বুকে দাঁড়িয়ে নিখিল ভারত হিন্দুমহাসভার নেতা বি এস মুঞ্জে,ও এন সি কেলকর ১৯২৯ সালে বলেছিল-‘’ মুসলমানরা যদি এদেশে থাকতে চায় তাহলে হিন্দু জাতীর সাথে লীন হয়ে থাকতে হবে, নতুবা মুসলমানরা সাতশ বছর বসবাসের পর স্পেন হতে যে ভাবে বিতাড়িত হয়েছিল আমরাও তাদেরকে সেভাবেই আরব সাগর পার করে দেব“ (আবুজাফর শামসুদ্দিন : মুসলিম সমাজের ঝোড়ো পাখি বেনজীর)। আজ একই কথার প্রতিধ্বনি শুনছি এদেশে বসবাসকারি মাত্র ৮% মানুষের সংগঠনগুলোর মুখে। সেই মুসলিম হত্যার রনধ্বনি ‘বন্দেমাতরম‘,। সেই কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের হুঙ্কার, সেই মুসলিম নির্যাতনের ভারতীয় ধ্বনি ‘জয় শ্রীরাম’। সেই মূর্তির জয়জয়কার, আলেমদের কুশপুত্তলিকা দাহ, ঘাড় মটকে দেবার গর্জন।মসজিদে ঢুকে নামাজীদের এবং ইমামকে মারধোরকরে, রক্তাক্ত করা, এর নাম স্বাধীনতা ? কার এ স্বাধীনতা? কাদের এই স্বাধীনতা ? ভারত এবং বাংলাদেশের মুসলমান নির্যাতনের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
পৃথিবীর কোথায় আছে মাইক্রোসকপিক সংখ্যালঘুদের হাতে, একক সংখ্যাগুরু জাতি নির্যাতিত হয়। ৯১% মুসলমানদের ধর্মাচরণকে দূরে সরিয়ে রেখে, বাঙ্গালী জাতীয়তার ধূয়া তুলে তাদের উপর পৌত্তলিকা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। মসজিদে ছবি টাঙানো হচ্ছে, জুতা পায়ে মসজিদ ঢুকে;অপবিত্র করা হচ্ছে। মসজিদে নামাজীদের রক্ত ঝরানো হচ্ছে। ইসলামকে মৌলবাদ বলে গালি দেয়া হচ্ছে। দাড়ী টুপি সহ ইসলামী লেবাসধারীদের রাজাকার নাম দিয়ে ঘৃনা ছড়ানো হচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষাকে জঙ্গী তৈরির আস্তানা বলা হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামের নাম নিশানা মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। মিডিয়াগুলোতে বিসমিল্লাহ হির
রাহমানিররাহিম,আসসালামুআলাইকুম উচ্চারণ প্রায় নিষিদ্ধ পর্যায়ে চলে গেছে, অপরপক্ষে নানান চটকদার নামের আড়ালে মূর্তিপূজাকে, অগ্নিপূজাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যে ভারত যুগের পর যুগ ধরে ক্রুদ্ধ বল্গাহীন ভাবে হিন্দু ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য ২০হাজারের অধিক দাঙ্গা লাগিয়ে অগনিত ভারতীয় মুসলমান হত্যা করেছে ! যাদের হাতে নালান্দা সভ্যতা ধংস হয়েছে, বৌদ্ধরা নির্মম হিংসার শিকার হয়ে কলার ভেলায় ভেসে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে , ভারতের বিদ্যাভবন প্রকাশিত ভারতবর্ষের ইতিহাস গ্রন্থে ৮হাজার জৈন সাধুকে শূলে বিদ্ধকরে হত্যার ঐতিহ্য আছে যাদের সেই চরম মানবতাহীন সাম্প্রদায়িক ভারতকে বন্ধুবলে বুকে আলিঙ্গন করার নাম যদি স্বাধীনতা হয়, তবে পরাধীন বা আশ্রিত দেশ কোনটা।
বন্ধুগন ! অনেক হয়েছে ঢাকঢাক গুড়গুড়। অনেক হয়েছে মৌলবাদ, জঙ্গীবা, রাজাকার আর স্বাধীনতার পক্ষশক্তি নামের তামাশা। আজ সত্য বলার দিন এসেছে। আজ সিনা টান করে বলতে হবে, আমরা তৌহিদবাদী মুসলমান,আর মুসলমানদের জন্যই বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। ইসলামের মত ধর্মনিরপেক্ষতা পৃথিবীতে আর কোন জাতি দেখাতে পারেনি। এটা শুধু কথার কথা নয়, ঐতিহাসিক ভাবে সত্য ! বাংলাদেশে অবশ্যই মুসলমানরা তাদের ধর্ম সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে বাস করেবে। আর মুসলমানরাই জানে ভিন্নধর্মীদের আচার আচরণ পালনে বাধা না দিয়ে কি করে একসাথে মিলেমিশে বাস করতে ।
বন্ধুগন ! সামনে মহা দূর্যোগ। স্বাধীনতা পুনঃউদ্ধারের লড়াই সামনে উপস্থিত। এসময় শত্রু চিহ্নিত করতে হবে। শত্রু চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হলে,জাতীয়তাবাদের লড়াই সফল হবেনা ! বাংলাদেশী মুসলিম জাতির সংকটই হলো, শত্রু চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়ে,বারবার তারা আপোসকামিতার পথে হেঁটেছেন। আর সেই আপোসকারিতার সুড়ঙ্গধরে আধিপধ্যবাদীরা ঢুকে পড়ে মুসলমানদের গলায় গোলামীর জিঞ্জির পরিয়েছে। ৭১ সালেও অন্যথা কিছু হয়নি। যার ফলে, নবম সেক্টরের লড়াকু মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মেজর আব্দুল জলিল সেই সময়েই বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, “অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা“ ।
সামনে মহা দূর্যোগ। মোকাবিলা র প্রস্তুতি কই !
মুখে জাতীয়তা বাদ অন্তরে জয়হিন্দ নিয়ে এ দূর্যোগ মোকাবিলা করা যাবেনা। জাতীয়তাবাদী ,ইসলামী দল সহ সকল সংগঠন ,দল মত শ্রেনী পেশার মানুষ, যারা বাংলাদেশর স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী, তারা কঠিন ঐক্যবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে । প্রমান করতে হবে যে আমরা আমাদের স্বাধীনতা নিজেরা রক্ষা করতে পারি। দেশ রক্ষা করা আল্লার নির্দেশ !আজ প্রমান করুন, দেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে কারা,বিপক্ষে কারা ! দেশরক্ষার বিপক্ষে যারা তারাই আল্লাহর বিরুদ্ধে। আবার মহাকবি ইকবালের সেই বানী অনুরণিত হোক —
“ পুরাতন সেই দৃশ্য আবার নতুন যুগেরে দেখিয়ে দাও,
মোস্তফী তুমি ?তবে তো এ নব মূর্তিরে গুড়িয়ে দাও”।
আবার ধ্বনিত ‘স্বাধীনবাংলা বেতারের‘ সেই চেতনা-উদ্দীপক বানী—-
“নাশরুম মিনাল আল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব“ !