Site icon The Bangladesh Chronicle

স্বাধীনতার চেতনা কি লুট চুরি জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা, প্রশ্ন ফখরুলের

বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। – ছবি : নয়া দিগন্ত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কথায় কথায় স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- স্বাধীনতা চেতনা কি লুট করা, চুরি করা, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা, রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে নিজেদের পকেট ভারি করা, মানুষকে কষ্ট দেয়া?’

শনিবার (২৫ মার্চ) এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। এটাই হচ্ছে প্রকৃত ইতিহাস। কথায় কথায় আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে। স্বাধীনতার চেতনা কি লুট করা, স্বাধীনতার চেতনা কি চুরি করা, স্বাধীনতার চেতনা কি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা, স্বাধীনতার চেতনা কি রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে নিজেদের পকেট ভারি করা, মানুষকে কষ্ট দেয়া? না। স্বাধীনতার মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র। তার জন্য মানুষ সংগ্রাম করেছে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তখন থেকে বুকে রক্ত দিয়ে এদেশের মানুষ একটি স্বাধীন ভূখণ্ড, নিজেদের জন্য একটা পতাকা, নিজেদেরকে শাসন করার একটা অধিকার তারা চেয়েছিল। সেজন্য লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে। তারই পরিণতি হিসেবে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের স্বাধিকার আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রায় দিয়েছে। এরপর পাক সেনারা যখন এদেশের জনগণের বাড়িঘর লুণ্ঠন, হত্যা চালিয়ে যাচ্ছিল, তখনই এদেশের মানুষ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের সর্বনাশের জন্য আওয়ামী লীগই যথেষ্ট। একাত্তরের যুদ্ধের আগেও আওয়ামী লীগ জনগণকে চেতনা শিখিয়েছিল, বিভিন্ন কমিটমেন্ট দিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা- বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছে। তার মধ্যে সর্বশেষ একটা কৌশল হচ্ছে ইসির মাধ্যমে আমাদেরকে চিঠি দেয়া। এটা নিয়ে আমি এখনি কথা বলতে চাই না। এটা নিয়ে আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং আছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নিব। কিন্তু এটুকু বলতে পারি, নির্বাচন কমিশনের এমন কোনো ক্ষমতা আছে যে এই প্রশাসনকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে?’

‘আওয়ামী লীগ সব শেষ করে দিয়েছে। সব শেষ। রাস্তার রিপেয়ারিংয়ের কাজ শেষ না হতেই বিটুমিন উঠে যাচ্ছে- এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ টিসিবির ট্রাকে লাইন দিয়েও মালামাল পাচ্ছে না। আর তারা পাতাল রেল তৈরি করছে,’ বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সংসদকে বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন মাধ্যমে নির্বাচন হবে। জনগণ তার ভোট দেবে। দেশকে রক্ষা করার জন্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য, দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য, আজকের এই স্বাধীনতা দিবস, এই কালো রাত্রিতে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে সাক্ষী রেখে আমাদেরকে শপথ নিতে হবে। এই সরকারকে বিদায় করে দেশের সত্যিকার অর্থে একটি সমৃদ্ধময় সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ফারুক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ।

Exit mobile version