দেশ এখন নির্বাচনমুখী। এর মধ্যেও সিলেট টেস্ট জয়ের পর মনোযোগ কেড়েছে ক্রিকেট। নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে টেস্টে হারানোয় বেড়ে গেছে প্রত্যাশা।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কিউইদের বিপক্ষে আজ শুরু হওয়া টেস্টে দারুণ এক লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে দেশের ক্রিকেট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ জয়ের হাতছানি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের পর চতুর্থ কোনো দলের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ। এ লক্ষ্য অর্জনে উন্মুখ হয়ে আছে বাংলাদেশ।
মিরপুরের উইকেট কিছুটা স্লো এবং লো হতে পারে। গতকালের মতো গুমোট আবহাওয়া থাকলে ব্যাটিং-বোলিংয়ে তার প্রভাব থাকবে। সে যাই হোক, বাংলাদেশ দলের চাওয়া স্পিন ট্র্যাক। কারণ কিউইদের বিপক্ষে স্পিন দিয়েই জিততে হবে। হাথুরুসিংহের মতে, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে ধরনের পিচে টেস্ট ম্যাচ হয়েছে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তেমন ছিল না। আফগানদের বিপক্ষে তিনজন ফাস্ট বোলার নিয়ে খেলেছি। আবার আয়ারল্যান্ডের টেস্টের উইকেট ছিল ভিন্ন। এখন আমাদের সব ধরনের স্কিল আছে। আমাদের চাওয়া মতো তা ব্যবহার করতে পারি।’ মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও স্পিননির্ভর দল খেলাবে বাংলাদেশ। সিলেটের ট্রু উইকেটে স্পিন দিয়ে সফল হওয়ার পর ঢাকা টেস্টে বোলিং লাইনআপ অপরিবর্তিত রাখা হতে পারে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদিও মনে করেন, স্পিন উইকেটে খেলা হবে ঢাকা টেস্ট, ‘সিলেটে স্পিনারদের প্রভাব ছিল। এখানেও স্পিনারদের দাপট থাকবে। সেভাবে বোলিং এবং ব্যাটিং লাইনআপ রাখতে হবে।’ মিরপুরের কন্ডিশন মাথায় রেখে ব্যাটিং শক্তি দিয়ে সিরিজ বাঁচাতে লড়াই গড়ে তুলতে চান কিউই অধিনায়ক।
২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ১৯টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এই ১৯ জয়ের বেশির ভাগ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সব বড় দলের বিপক্ষে এখনও জেতা হয়নি। বিশেষ করে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাকে টেস্টে হারাতে পারেনি। জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। হোম ও অ্যাওয়ে দুই ভেন্যুতে জেতার রেকর্ড উইন্ডিজের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দেশের মাটিতে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ড আর ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়াকে হারালেও সিরিজ জিততে পারেনি। গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারালেও সিরিজ জেতা হয়নি। নাজমুল হোসেন শান্তদের সামনে এবার সে সুযোগ। এই চ্যালেঞ্জ জয় করতে হলে টানা পাঁচ দিন ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে স্বাগতিকদের। ক্রিকেটারদের উদ্দেশে এই বার্তা থাকবে কোচ হাথুরুসিংহের। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে সব ক্ষেত্রেই স্বাধীনতা দেওয়ার পক্ষে তিনি। সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে দারুণ নেতৃত্ব দেন শান্ত। মূলত বাঁহাতি এ ব্যাটারের নেতৃত্বের আত্মপ্রকাশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের আগে। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে একটিতে অধিনায়ক ছিলেন তিনি। বিশ্বকাপে সাকিবের অনুপস্থিতিতে দুটি ম্যাচে ছিলেন অধিনায়ক। সাকিবের অনুপস্থিতিতে টেস্টের পরীক্ষায়ও পাস। মিরপুরে সিরিজ জিতে গেলে যেটাকে নতুন উচ্চতা দেবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড সিরিজ জয় সঙ্গে আছে।