Site icon The Bangladesh Chronicle

সাবেক সিইসি নূরুল হুদা গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার

২৩ জুন ২০২৫, সোমবার

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান মানবজমিনকে জানিয়েছেন, নূরুল হুদাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। সেখান থেকে তাকে হেফাজতে নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে জানান ওসি। এর আগে গতকাল দুপুরে মামলাটি করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। গত তিনবারের নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির মাধ্যমে সরকার গঠন করার অভিযোগে সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর কে এম নূরুল হুদাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে রাখা হয়। আজ তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে।

নূরুল হুদাকে আটকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, নূরুল হুদাকে আটকের পর তার গলায় জুতা ঝুলিয়ে স্থানীয়রা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। তারা নূরুল হুদাকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যায়িত করে বলেন, এই লোক স্বৈরাচার সৃষ্টি করেছে এটা তার উপহার। তাদের আরও বলতে দেখা যায়, আগামীতে কোনো নির্বাচন কমিশনার যেন স্বৈরাচার সৃষ্টিতে সাহস না পান এ জন্য এ ঘটনা থেকে তাদের শিক্ষা নিতে হবে। ২০১৭ সালে নূরুল হুদা বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ২০১৭ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি  নতুন সিইসি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে। তার ভাগিনা এসএম শাহজাদা ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন । ওই নির্বাচনে রাতেই ভোট হয়ে যায় বলে বিরোধীরা তথ্য প্রকাশ করেন। এ কারণে এটি রাতের ভোট হিসেবে আখ্যা পায়। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় রাতেই ভোট হয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন ওই নির্বাচন বাতিল করেনি। বিতর্কিত ওই নির্বাচনের পক্ষেই সাফাই গাইতেন তৎকালীন সিইসি।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মো. আব্দুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম. নূরুল হুদা, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, তৎকালীন পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, তৎকালীন ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার, র‌্যাবের সাবেক ডিজি ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিজিএফআই প্রধান (নাম অজ্ঞাত), সাবেক এনএসআই প্রধান ও সাবেক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল আলম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমান ও তৎকালীন নির্বাচন সচিব (নাম অজ্ঞাত)। এ ছাড়াও মামলাতে আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

Exit mobile version