Site icon The Bangladesh Chronicle

সরকারি চাকুরেদের বিদেশে একাধিক মাস্টার্সের পথ বন্ধ

“তবে দেশের ভেতরে একাধিক মাস্টার্স চাকরিবিধি মেনে করার সুযোগ রাখা হয়েছে। নতুন নীতিমালায় ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে,” বলেন অতিরিক্ত সচিব মো. সহিদউল্যাহ।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
5 August 2023

চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর সরকারি কর্মচারীদের শিক্ষা ছুটি নিয়ে বিদেশে একাধিক মাস্টার্স করার পথ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।

সরকারি কর্মচারীরা শিক্ষা ছুটি নিয়ে কোন কোন বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবে, সেই খাতগুলো নির্ধারণের পাশাপাশি চাকরির মেয়াদ কত দিন বাকি থাকতে কোন প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে- তাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

বিদেশে প্রশিক্ষণ বা উচ্চ শিক্ষা নিতে গিয়ে তা শেষ না করেই দেশে ফিরলে তার কারণ যদি সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য না হয়, তবে বিদেশে থাকাকালীন পাওয়া বেতনভাতা সরকারকে ফেরত দিতে হবে।

এমন সব বিধান রেখে সম্প্রতি ‘জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষা নীতিমালা’ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ক্যারিয়ার প্ল্যানিং অ্যান্ড ট্রেনিং অনুবিভাগের (সিপিটি) বিদেশ প্রশিক্ষণ গবেষণা ইউনিট।

সরকারি কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের ডেপুটেশনে গিয়ে স্ববেতনে শিক্ষা ছুটি পান।

সিপিটি অনুবিভাগের প্রধান, অতিরিক্ত সচিব মো. সহিদউল্যাহ বলছেন, বর্তমান বাস্তবতার আলোকে নীতিমালায় নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সবাই সমান সুযোগ পাবেন।

নীতিমালা অনুযায়ী, প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন কাজকে সুসংহত করতে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে এখন প্রশিক্ষণ বিষয়ক ন্যূনতম একটি পৃথক অধিশাখা গঠন করতে হবে।

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, আধা সরকারি সংস্থা বা সাংবিধানিক সংস্থার প্রশিক্ষণ চাহিদার ভিত্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্ব স্ব প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রণয়ন করবে। এসব প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে কোন কোন বিষয়ে বিবেচনায় নিতে হবে- তার একটি তালিকাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও মৌলিক কাঠামো, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস, রাষ্ট্রের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা ও পরিকল্পনা, বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, নীতিমালা প্রণয়ন ও নীতিমালা ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, জনসেবার উন্নয়ন, তদারকি ও পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও গবেষণা, সাংগঠনিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির প্রসার, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ, সৃজনশীল ও উদ্ভাবনীশক্তির উন্মেষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, উন্নয়ন প্রশাসন, উন্নয়ন অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থনীতি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লক্ষ্য, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, খাদ্য ও জলবায়ু নিরাপত্তা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মহাকাশ বিজ্ঞান, ব্লু ইকোনমি, মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা এবং সাম্প্রতিক বিষয়াবলির উপর প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

সরকার বলছে, উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্র ও বিষয় কর্মচারীর নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগের চাহিদা ও কাজের সংশ্লিষ্টতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। এজন্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলোকে তাদের চাহিদা নিরূপণ করে তা নতুন অর্থবছর শুরুর আগেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে।

সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে ২০০৩ সালে ‘জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ নীতিমালা’ জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় এ সংক্রান্ত পরিপত্র ও সার্কুলার জারি করে সরকার। এখন আগের নীতিমালা ও সব সার্কুলার বাতিল করে সমন্বিত নীতিমালা করা হয়েছে।

সরকার বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি প্রশাসন যন্ত্রের আয়তন ও পরিধি সম্প্রসারিত হওয়া এবং দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ বেড়ে যাওয়ায় নতুন নীতিমালা করা হয়েছে।

কোন বয়সে কোন প্রশিক্ষণ

সর্বোচ্চ কত বছর বয়স পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরা দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ নিতে পারবে, এতদিন তা নির্ধারিত ছিল না।

এখন তা ঠিক করে দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছে, বাস্তবতার নিরিখে সময়ে সময়ে পেশাগত বা আবশ্যিক প্রশিক্ষণ এবং উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ বয়সসীমা হালনাগাদ করা হবে।

  • সব ক্যাডারের এবং নবনিয়োগপ্রাপ্ত নন ক্যাডার ও অন্যান্য কর্মচারীদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ চাকরিতে প্রবেশের দুই বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে। নন ক্যাডার থেকে ক্যাডার পদে অন্তর্ভুক্ত কর্মকর্তাদের বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৫৫ বছর। ক্যাডার বহির্ভূত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৫০ বছর। স্ব স্ব নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ও অনুমোদিত পেশা-সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ কোর্স চাকরিতে প্রবেশের দুই বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে।
  • উপসচিবদের জন্য নির্ধারিত এসিএডি কোর্সে অংশ নেওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫০ বছর। যুগ্মসচিবদের জন্য নির্ধারিত এসএসসি কোর্সে অংশ নেওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৫ বছর এবং অতিরিক্ত সচিবদের জন্য পিপিএমসি কোর্সে অংশ নিতে চাকরির মেয়াদ কমপক্ষে এক বছর থাকতে হবে। সচিবদের পলিসি ডায়ালগে অংশ নিতে কোনো বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি।

বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও সরকারি কর্মচারীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি কোর্সে অংশ নিতে সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৫৭ বছর, চার সপ্তাহের বেশি এবং তিন মাস পর্যন্ত মধ্যমেয়াদি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ৫৫ বছর এবং তিন মাসের বেশি থেকে এক বছর পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ৫৫ বছর।

নীতিমালা অনুযায়ী, কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং প্রশিক্ষণের বৈদেশিক অংশের ক্ষেত্রে চাকরির সময়কাল পিআরএল শুরুর আগে ন্যূনতম চার সপ্তাহ অবশিষ্ট না থাকলে অংশগ্রহণ করা যাবে না।

নীতিমালা অনুযায়ী, তিন বছরের মধ্যে মাস্টার্স বা এমফিল ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে পিএইচডি ডিগ্রি।

কর্মকালীন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে মাস্টার্স বা পিএইচডি ডিগ্রির ক্ষেত্রে একবারই অনুমতি দেওয়া যাবে। চাকরিতে যোগদানের পর কোনো কর্মচারীকে দেশে বা বিদেশে প্রেষণ বা অধ্যয়ন ছুটিতে মাস্টার্স কোর্সে শুধু একবার অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া যাবে।

কোনো কর্মচারী চাকরিতে যোগদানের পরে এমফিল বা পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে থাকলে সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি দ্বিতীয়বার অর্জনের আবেদন বিবেচনা করা হবে না বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।

প্রতি অর্থবছরে একজন কর্মচারীর স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণের সর্বোচ্চ মেয়াদকাল হবে ১২ সপ্তাহ। প্রতি দুই বছরে একটির বেশি মধ্যমেয়াদি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া যাবে না। আর কর্মজীবনে চারটির বেশি দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেওয়া যাবে না।

পোস্ট গ্র্যাজুয়েট, ডিপ্লোমা, মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচডি অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৪৫ বছর। কর্মকালীন উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৫০ বছর এবং পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ, ফেলোশিপ ও মেন্টরশিপের ক্ষেত্রে ৫৪ বছর ঠিক করা হয়েছে।

অফার লেটারে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে উচ্চশিক্ষা শেষ করতে হবে জানিয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো কারণে তা শেষ করতে না পারলে মাস্টার্স কোর্সের জন্য ছয় মাস, এমফিল বা পিএইচডির জন্য এক বছর এবং ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য তিন মাসের বেশি সময় বাড়ানো যাবে না।

সময় বাড়ানোর পরেও কারও কোর্স শেষ না হলে অধ্যয়ন ছুটি শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবস আগে প্রমাণসহ মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করতে হবে।

বিদেশে প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষা শেষ না করে কেউ দেশে ফিরলে সেটি গ্রহণযোগ্য কি না, তা নিয়ন্ত্রণকরীর মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি নির্ধারণ করবে। তাদের কাছে প্রশিক্ষণ বা উচ্চ শিক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন না করার কারণ গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হলে প্রশিক্ষণ বা উচ্চ শিক্ষাকালে বেতনভাতা হিসেবে গৃহীত টাকার এক-পঞ্চমাংশ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।

আর কমিটির কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত না হলে প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষাকালে বেতনভাতা হিসেবে পাওয়া অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। ফেরতযোগ্য অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে ব্যর্থ হলে তা সরকারি পাওনা হিসেবে আদায়যোগ্য হবে। এক বছর মেয়াদি কোর্সের জন্য ৬ মাসের মধ্যে, এক থেকে চার বছর মেয়াদি কোর্সের জন্য দুই বছরের মধ্যে অর্থ ফেরত দিতে হবে।

তবে সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ড শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে যদি কোনো কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষার জন্য অক্ষম বিবেচিত করে, তাকে বেতনভাতা বাবদ পাওয়া অর্থ ফেরত দিতে হবে না। ডেপুটেশনে শিক্ষা ছুটি বা প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় সরকারি কর্মচারীরা পুরো মাসের বেতন পান।

চাকরি স্থায়ীকরণের শর্ত হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের আবশ্যিক প্ৰশিক্ষণ শেষ করতে হবে। ক্যাডার কর্মচারীদের আবশ্যিকভাবে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধীনে ছয় মাস মেয়াদি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

চাকরিতে যোগ দেওয়ার দুই বছরের মধ্যে যথাযথ কারণ ছাড়া কোনো ক্যাডার কর্মচারী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষ না করলে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া যাবে। বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে কোনো ক্যাডার কর্মচারী অকৃতকার্য হলে তিনি পরবর্তীতে আরও একবার প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

নন-ক্যাডার পদ থেকে যারা ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, তাদের জন্য বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দুই মাসমেয়াদি বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করবে। এই প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য অন্য কোনো প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকেও দায়িত্ব দেওয়া যাবে।

ক্যাডার বহির্ভূত নবম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের তাদের নিজস্ব প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়োজনে অথবা অন্য কোনো সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দুই মাস মেয়াদি একটি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিতে হবে।

পদোন্নতির মাধ্যমে নবম বা তার উপরের গ্রেডভুক্ত সকল সরকারি কর্মচারী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদে যোগ দেওয়ার দুই বছরের মধ্যে দুই মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেবেন।

উপসচিবদের বাধ্যতামূলকভাবে তাদের পরবর্তী পদোন্নতির জন্য ১০ সপ্তাহ মেয়াদি উচ্চতর প্রশাসন ও উন্নয়ন কোর্সে (এসিএডি) অংশ নিতে হয়। আর যুগ্মসচিবদের আট সপ্তাহ মেয়াদি সিনিয়রর স্টাফ কোর্স (এসএসসি) এবং অতিরিক্ত সচিবদের তিন সপ্তাহ মেয়াদি পলিসি প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কোর্সে (পিপিএমসি) অংশ নিতে হয়। তিন ধরনের কোর্সেই ভ্রমণসময় ছাড়া ১০ দিন করে প্রশিক্ষণ হবে বিদেশে।

অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিবদের বিপিএটিসি বা বিসিএস প্রশাসন একাডেমি বছরে ন্যূনতম একবার পলিসি ডায়ালগের আয়োজন করবে।

সিটিপি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সহিদউল্যাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমান বাস্তবতার আলোকে নীতিমালায় নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগের নীতিমালা প্রণয়নের পর নতুন নতুন চাহিদা তৈরি হয়েছে। কোভিড মহামারীর কারণে অনলাইনেও কোর্স করতে হচ্ছে।”

নতুন নীতিমালায় মাস্টার্স ও এমফিলকে সমমান করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এক সময় ছিল একটা মাস্টার্স, সঙ্গে পিএইচডি করতে পারতেন। এতে অনেক সময় তাকে সার্ভিসের বাইরে থাকতে হয় বলে জনগণ ওই সময় তার কাছ থেকে সেবা পায় না। এখন নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে একজন বিদেশে একটি মাস্টার্স করতে পারবে। আগে একাধিক মাস্টার্স করার সুযোগ ছিল। তবে দেশের ভেতরে একাধিক মাস্টার্স চাকরিবিধি মেনে করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

“এখন আর কারও প্রতি আনুকুল্য দেখানোর সুযোগ নেই। সবার জন্যই একই নিয়ম। চেষ্টা করা হয়েছে বিগত সময়ের সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করার। নতুন নীতিমালায় ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।”

মন্ত্রণালয়গুলো চাহিদা সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব সহিদউল্যাহ বলেন, “জনপ্রশাসন, অর্থ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চাহিদাগুলো আলাদা আলাদা। এর প্রেক্ষিতে আমরা বিষয়গুলো নির্ধারণ করে দিয়েছি। চেষ্টা করা হয়েছে সরকারের চাহিদাকে প্রাধান্য দিতে।

“যে যে বিষয়ের ওপর উচ্চশিক্ষা নেবেন, সেই বিষয় যাতে কর্মক্ষেত্রে কাজে আসে এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে কোন এলাকায় কাজ করতে চান- সে বিষয়ে তিনটি পছন্দক্রম দিতে বলা হবে। সরকারের চাহিদা কী, তখন তা মিলিয়ে দেখা হবে।

“সরকারের চাহিদার সঙ্গে তার চাওয়া মিলে গেলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পদায়ন করা হবে। আমরা এসব বিষয়ে দেখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এপিডি উইংয়ে পাঠিয়ে দেব, সেখান থেকে তাদের নতুন দপ্তরে পদায়ন করা হবে। চেষ্টা করা হবে তার পঠিত বিষয় যেন কাজে লাগে।”

Exit mobile version