Site icon The Bangladesh Chronicle

শ্রম ইস্যুতে টানাপোড়েনের মধ্যে রপ্তানি কমলো যুক্তরাষ্ট্রে

শ্রম ইস্যুতে টানাপোড়েনের মধ্যে রপ্তানি কমলো যুক্তরাষ্ট্রে.
শ্রম ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যেই দেশটিতে রপ্তানি আয় কমলো বাংলাদেশের। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি কমেছে ৯ শতাংশের বেশি।

একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ২০ শতাংশ আসে দেশটি থেকে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে সংগ্রহ করা তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৩৬৪ কোটি ডলারের বাংলাদেশি পণ্য। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪০০ কোটি ডলারের বেশি।
অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি কমেছে ৩৬ কোটি ডলার। বাংলাদেশ মুদ্রায় যা ৪ হাজার কোটি টাকার মতো। এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৮৬ কোটি ডলার। পাঁচ মাসের হিসাবে, গত তিন অর্থবছরের মধ্যে চলতি অর্থবছরই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি সবচেয়ে কম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান সমকালকে বলেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়ায় সারাবিশ্ব থেকেই আমদানি কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের রপ্তানিও কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার বাইরে অন্য দেশগুলোকে অপ্রচলিত রপ্তানি বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চীন, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া অপ্রচলিত শ্রেণির প্রধান বাজার।
গত ১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি বা দিকনির্দেশনা ঘোষণা করেন। সে সময় তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা, শ্রমিক অধিকারের পক্ষের কর্মী, শ্রমিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে যে বা যারা হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করবে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনবে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে বাণিজ্য, ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যত ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে, তা প্রয়োগ করা হবে। বক্তৃতায় বাংলাদেশের পোশাক খাতের শ্রমিক আন্দোলনের নেতা কল্পনা আক্তারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কল্পনা জানিয়েছেন, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তাঁর পক্ষে দাঁড়িয়েছে এবং এ জন্য তিনি (কল্পনা) এখনও বেঁচে আছেন।

এর ঠিক চার দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনসিয়াল মেমোরেন্ডামে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যেসব উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে, এর পেছনে রাজনীতি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার করতে পারে। শ্রম অধিকারের লঙ্ঘন হয়েছে মনে করলে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সুযোগ রয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের পোশাক খাতের ওপর পড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলা হয় চিঠিতে।

সমকাল

Exit mobile version