বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, যখন কোনোভাবে কোনো ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া সম্ভব হয় না, তখন লেন্ডার অব লাস্ট রিসোর্ট (ঋণের জন্য শেষ আশ্রয়স্থল) হিসেবে ওই ব্যাংককে সহায়তা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারে গভর্নরকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেই ক্ষমতাবলে ইসলামি ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এটা আইন মেনে করা হয়েছে। আইনের বাইরে কিছু করা হয়নি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এই তথ্য জানিয়েছেন।
শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিশেষ ধার পাওয়া ব্যাংক পাঁচটি হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলো প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতিতে ছিল। এর মধ্যে বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণ (সিআরআর) বাবদ ঘাটতি ছিল ১০ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঋণাত্মক স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। নানা অনিয়মের কারণে ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে এসব ব্যাংকে চরম তারল্যসংকট দেখা দেয়। অনেক দিন ধরে সিআরআর এবং বিধিবদ্ধ তারল্য (এসএলআর) সংরক্ষণ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ ধার দিয়ে ব্যাংকগুলোর লেনদেন স্বাভাবিক রেখেছে।
নানা অনিয়মের পরও কেন ইসলামি ধারার এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এবং গভর্নর চেয়ার হারানোর ভয় পাচ্ছেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমি অর্থসচিব ছিলাম। আমি নিয়মিত চাকরি ছেড়ে চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে এসেছি। আমি আগেও চলে যেতে পারি বা সরকার আমাকে চলে যেতে বলতে পারে। এখানে চেয়ার হারানোর কোনো ভয় নাই। সেই ভয় থাকলে অর্থসচিবের চাকরি ছেড়ে এখানে আসতাম না। ভয়টয় পাই না। কেউ ভয় দেখালেও লাভ হবে না।’
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোতে মানুষ এমনিতে মানুষ টাকা রেখে আসছিল। তাঁদের কারও কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি। এখন এসব ব্যাংকের ওপর মানুষের আস্থা কমে গেছে। এর কারণ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
প্রথম আলো