Site icon The Bangladesh Chronicle

শেখ হাসিনার গন্তব্য এখনও অনিশ্চিত

শেখ হাসিনার গন্তব্য এখনও অনিশ্চিত

তৃতীয় কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আগে আরও কিছুদিন ভারতেই থাকতে হবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে। তাঁর সম্ভাব্য সাময়িক আশ্রয় হতে পারে বেলারুশ। ভারত চাচ্ছে, রাশিয়ার আশপাশের দেশগুলোতে শেখ হাসিনার চূড়ান্ত গন্তব্য নিশ্চিত করতে।

নাম না প্রকাশের শর্তে ভারতের একটি সূত্র সমকালকে জানায়, ভারত সরকার শেখ হাসিনার চূড়ান্ত গন্তব্য নিশ্চিতে কাজ করছে। কিন্তু পশ্চিমা কোনো দেশ তাঁকে আশ্রয় দিতে রাজি নয়। ফলে রাশিয়ার আশপাশের দেশগুলোতে তাঁর জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে দেশগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) খুব একটা তোয়াক্কা করে না। যদি কোথাও তাঁর জায়গা না হয়, তবে ভারতেই থাকবেন তিনি। দক্ষিণ আমেরিকা বা আফ্রিকার দেশগুলোতেও সম্ভাব্য আশ্রয়ের জায়গা খোঁজা হচ্ছে।

শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা দেওয়াটা এখন ভারতের মর্যাদার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে ভারতের ওই সূত্র জানায়, এখন যদি ভারত শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা না দিতে পারে, তবে এ অঞ্চলে নিজের আধিপত্য হারাবে। আশপাশের দেশগুলো আর ভারতের ওপর ভরসা করতে পারবে না।

সূত্র জানায়, গত সোমবার নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর পর শেখ হাসিনার জন্য যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থার চেষ্টা করা হয়। তবে সে চেষ্টা এখনও সফল হয়নি। ফলে যুক্তরাজ্য না হলে ইউরোপের দেশ ফিনল্যান্ডে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তবে এ দেশটিও তাঁকে আশ্রয় দিতে রাজি নয়।
ভারতের পত্রিকা দি হিন্দু জানায়, শেখ হাসিনাকে এত কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছে, তিনি কোন দেশে আশ্রয় নেবেন, তা নিয়ে কাজ করার সময় পাননি। তবে তাঁর পরিবার ও নিকট আত্মীয়রা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড ও ভারতে রয়েছেন। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং সৌদি আরবেও তিনি আশ্রয় নিতে পারেন।

যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, দেশটির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকসহ তাদের পরিবারের বসবাস। শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির স্ত্রী পেপে সিদ্দিক ফিনল্যান্ডের নাগরিক। তিনি ঢাকার জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায় (আইওএম) কর্মরত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে ব্যাংককে বদলি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। আর জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক কার্যালয়ে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল আঞ্চলিক পরিচালক পদে ভারতে রয়েছেন।

এরই মধ্যে শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা স্থগিত হওয়ার খবর ভারতের গণমাধ্যমে এসেছে। এ বিষয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র জানান, মার্কিন আইন অনুযায়ী ভিসা-সংক্রান্ত তথ্য গোপনীয়। এ কারণে কোনো ব্যক্তির এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত আমরা প্রকাশ করি না।

নাম না প্রকাশের শর্তে ভারতের একটি সূত্র জানায়, শেখ হাসিনাকে আরও কিছুদিন দিল্লিতেই থাকতে হবে। বর্তমানে তিনি দিল্লির এয়ার বেজ হিন্ডোন বিমানবন্দরে নিরাপদে রয়েছেন। সূত্রটি জানায়, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার আবেদন ফিরিয়ে দিচ্ছে। পরিবার ও নিকট আত্মীয়রা যে দেশগুলোতে বসবাস করছেন, সেখানেই প্রথমে যেতে চেয়েছিলেন সাবেক সরকারপ্রধান। প্রথমে যুক্তরাজ্য যেতে চাইলে, তারা মানা করে দিলে ফিনল্যান্ড যেতে চেয়েছেন। তবে ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অবস্থানকে অনুসরণ করছে। ফলে রাশিয়ার আশপাশের কোনো দেশে তাঁর শেষ গন্তব্য হতে পারে। তবে তাঁর আগে কিছুদিন বেলারুশে যেতে হতে পারে। এ বিষয়ে কাজ করছে ভারত।

samakal

Exit mobile version