Site icon The Bangladesh Chronicle

শেখ হাসিনার উদারতা বিএনপি বোঝে না : ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের – ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির সভা-সমাবেশ করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদারতার অর্থ দলটির নেতারা বুঝেন না।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে কষ্ট লাগে আমাদের নেত্রী বলেছেন, বিএনপি সমাবেশ করুক, জনসভা করুক কোনো বাধা আমরা দেব না। নেত্রী আপনার এ উদারতার অর্থ আমরা বুঝি। তারা তো সেটা বুঝে না।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা বলে, বিদেশিদের চাপে আপনি এটা করছেন। লন্ডন থেকে স্লোগান দেয় আর স্লোগানের প্রতিধ্বনি হয় পল্টনে। কী স্লোগান? টেক ব্যাক বাংলাদেশ। টেক ব্যাক করে কোথায় যাবে? লুটপাটের হাওয়া ভবনের বাংলাদেশ। পাঁচ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ বিসর্জনের বাংলাদেশ।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংকটের বিস্তীর্ণ কাঁটাবন পেরিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখনো বাংলাদেশ স্ট্যাবিলিটি বজায় রেখেছে। এখনো বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখনো রেমিট্যান্স আছে হাজার হাজার কোটি টাকার। এখনো ৪০ থেকে ৪২ বিলিয়ন ডলার আমাদের রিজার্ভে। বললাম কেন? বাংলাদেশে এখন রিকশাওয়ালারাও রিজার্ভের কথা বলে। শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ফুরিয়ে গেছে। পাকিস্তানের রিজার্ভ তলানিতে। এ জন্য বাংলাদেশকে নিয়েও তারা দুঃস্বপ্ন দেখে।’

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মানুষের কান কথা শুনে, গুজব শুনে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাও হবে না, পাকিস্তানও হবে না। এটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এটা বীরের দেশ। শেখ হাসিনার বাংলাদেশ।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবাই শুধু ঐক্যবদ্ধ থাকুন। দলটাকে সুশৃঙ্খল রাখুন। যেভাবে এগিয়ে চলছে আমরা যদি নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারি, আগামী নির্বাচনে আমরা আবারো বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারব। আওয়ামী লীগে সব আছে। এখানে ভালো মানুষের অভাব নেই। শুধু ঐক্যটা রাখলেই হবে। ঐক্যটা থাকলে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। আওয়ামী লীগের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘অনেক তথ্য অজানা রয়ে গেছে। অনেকের ভূমিকা অজানা রয়ে গেছে। সত্যের খাতিরে ইতিহাসের এসব তথ্য উন্মোচন করা দরকার। আইনমন্ত্রী বলেছেন, কমিশন গঠন করবেন। শুধু মুখে নয়, আমি বলব বাস্তবে এর কার্যকারিতা বাংলার মানুষ দেখতে চায়। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্যময় আরো পুরুষ আছে। যাদের জাতি চেনে না। কিন্তু চেনা মুখ। সত্য জানা উচিত। সত্যের মুখোমুখি আমরা। সত্য আমাদের জানতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জিয়াউর রহমান খুনিদের পুরস্কৃত করে থাইল্যান্ডে পাঠাল। তারপর তাদের চাকরি দিলো কয়েকটা দূতাবাসে। বাংলাদেশের দূতাবাস। এটাই শুধু পুরস্কার নয়, কয়েকজনকে প্রমোশন দিল। এটাই শুধু পুরস্কার নয়, খন্দকার মোশতাকের ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স হত্যাকারীদের বিচাররোধকারী। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জিয়াউর রহমান পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশের সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছে। খুনিদের এই জিয়াউর রহমানই সাংবিধানিক বৈধতা দিতে চেয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধা। তাহলে আমার মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি কেন নিষিদ্ধ হয়? সর্বকালের সেরা ভাষণের একটি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ কেন নিষিদ্ধ হয়? বাংলাদেশ বেতার কেন রেডিও বাংলা হয়? মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ স্বাধীনতার সব আদর্শ নির্বাসনে পাঠাল কে? ইতিহাস কি তাকে ক্ষমা করবে?’

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা সঞ্চালন করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। এছাড়াও সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।

সূত্র : বাসস

Exit mobile version