কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে নাফ নদীতে আবারও মিয়ানমারের ‘যুদ্ধজাহাজ’ দেখা গেছে। শুক্রবার সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দেশটির জলসীমায় জাহাজটি অবস্থান করতে দেখা যায় বলে স্থানীয়রা জানান। এ সময় থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলেও জাহাজটি সরে যাওয়ার পর বিস্ফোরণের শব্দ বেড়ে যায়। একইভাবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে গোলার বিকট শোনা গেছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনেও। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে থেমে থেমে এই গোলার বিকট শব্দ আসছে।
শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এক ঘণ্টায় পরপর ১০টির বেশি মর্টার শেলের বিকট শব্দ শোনা যায়। তবে যুদ্ধজাহাজটি বেলা ১১টার দিকে সরে যায়।
সেখানকার লোকজন জানান, এর আগে ২১ মার্চ একই জায়গায় মিয়ানমারের ‘যুদ্ধজাহাজ’ দেখা গিয়েছিল। যেখানে এ ধরনের জাহাজ সচরাচর দেখা যায় না। তারা জানান, সকালে নদীতে কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর জাহাজটি দেখা যায়। জাহাজটি নদীতে কখন এসেছিল নিশ্চিত করে তা কেউ বলতে পারেননি।
শাহপরীর দ্বীপের আব্দুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণ কিছুটা কম শোনা গিয়েছিল। তবে শুক্রবার সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের একটি যুদ্ধজাহাজ দেখা গেছে। এটি চলে যাওয়ার পর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ বেড়েছে।’
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘গোলাগুলি বা মর্টার শেলের বিস্ফোরণের শব্দ বৃহস্পতিবার থেকে কমে গিয়েছিল। তবে শুক্রবার ৩টার দিকে পরপর কয়েকটি শব্দ শোনা গেছে।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে টেকনাফ সীমান্তে মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কিছুটা কমলেও দুপুরের পর আবারও থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে।’
গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে সেন্টমার্টিন: মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনও। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে থেমে থেমে এই গোলার বিকট শব্দ হচ্ছে।
বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সকালে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের জলসীমায় একটি বড় জাহাজ দেখা গিয়েছিল। তবে এটি যুদ্ধজাহাজ নাকি দেশটির অন্য কোনো জাহাজ তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে দুপুরের আগেই জাহাজটি সেখান থেকে সরে গেছে। সবদিক বিবেচনায় রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।’
samakal