Site icon The Bangladesh Chronicle

রেকর্ড না হলে তো সাকিবেরই অবমাননা

রেকর্ড না হলে তো সাকিবেরই অবমাননা – ছবি : সংগৃহীত

সাকিব আল হাসান। নিঃসন্দেহে বাংলার ক্রিকেটের সব থেকে মুখরিত নাম। এই নামটার কেন এত দাম, তা আজও দেখেছে ধরাদাম। এই বয়সেও কী প্রাণবন্ত, কী সাবলীল! প্রতি মুহূর্তে, প্রতি পদক্ষেপে যেন ছন্দ আছে মিশে। সব দুর্ভাবনা, দুশ্চিন্তা, খারাপ সময়; পাড় করে দেন হেসে। মনে হয় যেন কিছুই হয়নি, আছেন মহা সুখের আবেশে।

নিজে শূন্য রানে ফিরেছেন, দলের আরো পাঁচজন একই পথে হেঁটেছেন। লিটন-মুশফিকে টেনেটুনে পাস; বোলিংয়েও হাসফাঁস। সময়ে সময়ে বেলা ফুরায়, একটা উইকেটের অপেক্ষায়। মিরপুরে গড়ে যেখানে প্রতি ৪৮ বলে একটা উইকেট তাইজুলের, সেখানে ৪৯ ওভার বল করেও দেখা পাওয়া হয়নি একটা উইকেটের।

বড়লোক বাপের বখাটে ছেলের টাকা উড়ানোর চরিত্রে যেন খালেদ-ইবাদত; টেস্টে ওভারপ্রতি প্রায় ৪ রান মানেই তো বড় বিপদ। যদিও ইবাদত ব্রেক থ্রু এনেছে, খালেদ যেন রোবটের মতো একের পর এক বল ছুঁড়েই গেছে। মিরাজ, নাইমের অভাবটা বেশ ভালোই ভুগিয়েছে।

যাহোক সাকিবে ফিরি। নিজের ব্যর্থতা, দলের ব্যর্থতা, রোদের তীব্র প্রখরতা; তবুও দলের পাশাপাশি দর্শকদের চাঙ্গা রাখতে সাকিবের ছিল বিশাল ভূমিকা। কখনো সমর্থকদের সাথে ঠাট্টা মশকরা আর আলোচনা করছেন, মাঝে মাঝে হেসে উঠছেন। কখনো লাফাচ্ছেন, আবার কখনো নেচে উঠেছেন। আর পাশাপাশি নিজের কাজটাও মন দিয়ে সেরেছেন।

কাজের কাজি সাকিব। নিজেকে অগোছালো মনে হলে প্রয়োজনে বিশ্রামে যাবে, কিন্তু যখন খেলবে বীরের বেশেই খেলবে। এজন্যই সে সবার থেকে আলাদা, এখানেই সাকিব হয়ে যায় সেরা। যেমন বৃহস্পতিবারও দেখালেন তার ঝলক, দল যখন পথহীন নিস্প্রভ; একাই কেড়ে নিলেন আলো সব। টেস্টপ ১৯ আর স্বীকৃত ক্রিকেটের ৩২তম ৫ উইকেট শিকারের পথে প্রথম বাঙালি হয়ে দেড় শ’ উইকেট ছুঁয়েছেন ঘরের মাঠে।

সাকিব মাঠে নামবে আর রেকর্ড হবে না, তা যেন রেকর্ডের সাথেই অবমাননা। সাকিবের সৌজন্যে কতো লুকানো রেকর্ডই না হয় জানা! ইতিহাসের চতুর্থ বাঁহাতি স্পিনার হয়ে ঘরের মাঠে ১৫০ টেস্ট উইকেট শিকার করেছে সাকিব। যেখানে শীর্ষে গুরু রঙ্গনা হেরাথ। তার ঘরের মাঠে উইকেট সংখ্যা ২৭৮টি। আবার ৭ম স্পিনার হিসেবে ভিন্ন ১০ বর্ষপঞ্জিকায় ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েছেন। ১৭টি আলাদা বর্ষপঞ্জিকা নিয়ে সবার শীর্ষে মুরালিধরন।

জ্যাক ক্যালিস, ইয়ান বোথাম আর কপিল দেবের পর চতুর্থ অলরাউন্ডার হিসেবে টেস্টে আড়াই হাজার রান দেড় শ’ উইকেটের অনন্য কীর্তিও ছুঁয়েছেন সাকিব। সাধেই কি প্রায় কাকুতিমিনতি করে সাকিবকে টেস্ট খেলানো? তবুও যারা বলে, সাকিব যাক বসে, নিয়ে নিক বিদায়। সাকিবের এমন কীর্তিগুলো কি তাদের ফেলবে না লজ্জায়?

Exit mobile version