Site icon The Bangladesh Chronicle

রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান বীরউত্তম

The Bangladesh Chronicle
5 years ago

রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান বীরউত্তম

Image may contain: 1 person, sitting and indoor
— সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল   20 January 2020

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরই মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় যেদিন ঘোষণা দিলেন ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’, সেদিনই অস্বাভাবিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের অখণ্ড অস্তিত্ব ধ্বংসের বীজ বপন করে দিয়েছিলেন তিনি নিজেই। ফলে বিবর্তনের পথে এই ঢাকায়ই খণ্ডিত রয়ে গেল পাকিস্তান ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সেই বিবর্তন জিয়াউর রহমান বীর-উত্তম একটি প্রাসঙ্গিক অধ্যায়।

স্বাধীনতারযুদ্ধের ‘WE REVOLT’ এবং কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে আনুষ্ঠানিক প্রথম ঘোষণার ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনীর প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ‘জেড ফোর্স’। এই স্বর্ণালি অধ্যায় স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টিতে জিয়াউর রহমান বীর-উত্তমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

প্রখ্যাত দার্শনিক হেনরি বিয়েনের মতে, ‘সামরিক শাসন’ শব্দটি এক ধরনের অপপ্রয়োগ। কারণ যেকোনো সামরিক অভ্যুত্থানের পরেই যে মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয় সেখানে অনেক অসামরিক ব্যক্তি বা সিভিলিয়ান থাকেন। ১৯৭৫-পরবর্তী একটি অধ্যায়ে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ওই বছরের ২৬ নভেম্বর যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয় তাতে ১২ জনের মধ্যে ৯ জন ছিলেন বেসামরিক ব্যক্তি এবং প্রথমবারের মতো এই ভূখণ্ডের ইতিহাসের একজন চাকমা রাজার পত্নীও ছিলেন। জিয়ার দূরদর্শিতার চেতনায় দেশের উপজাতি সম্প্রদায়ের রাষ্ট্রীয় মর্যাদার স্বীকৃতি এখানে প্রমাণিত হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকাবহ পরিবর্তন এবং পরবর্তী তিনটি সেনা অভ্যুত্থানের ফলে সাধারণ মানুষ বিশেষত বিবদমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটাই চাওয়া ছিল, রাষ্ট্র ও সমাজ যেন স্থিতিশীল থাকে। তখন শক্ত হাতে জিয়াউর রহমানের হাল ধরায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। মুদ্রাস্ফীতি কমে আসে। পরবর্তী সময়ে কয়েক বছর কৃষক গোলায় ভালো ফসল পায়। মুক্তিযুদ্ধের উদ্দীপক ঘোষণা এবং একটি দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী নেতার মতো স্থিতি বজায় রাখার সামর্থ্যে জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি দাঁড়ানোর মতো উর্বর জমি পেয়ে যায়।

সে সময় এই অনুকূল উত্থান এবং মোটা দাগে তিনটি বিষয় উল্লেখযোগ্য : ১. আওয়ামী লীগের শাসনামলের দুর্নীতি, দুঃশাসন থেকে দেশকে বাঁচানো, ২. দুর্বল ও ভঙ্গুর রাজনৈতিক অবস্থা সৃষ্টির ফলে তৈরি হওয়া শূন্যতা পূরণ, ৩. সামরিক (প্রতিরক্ষা) বাহিনীর গোষ্ঠীগত স্বার্থ দেখভাল করা।

ধর্মীয় অনুশাসন নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতের প্রতীক জিয়া ছিলেন বিনয়ী এবং আল্লাহ অনুগত। পবিত্র কাবাঘরের অভ্যন্তরে প্রবেশের দুর্লভ সুযোগে তিনি ইবাদতে এতটা গভীর নিমগ্ন ছিলেন যে তাঁর সফরসঙ্গীরা তাঁকে বেরোতে না দেখে পুনঃপ্রবেশ করে দেখলেন কাবা শরিফের মূল মেঝে পরিষ্কার করার ঝাড়ন বুকে রেখে অশ্রুভরা চোখে দুই হাত তুলে আল্লাহর করুণা ভিক্ষা করছেন।
পরিশ্রমী, দূরদর্শী দেশপ্রেমিক সৈনিক জিয়া শুধু ছবিতে নয়, ঠাঁই পেয়েছেন আপামর সাধারণ মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায়। চারণ কবির মতো হেঁটে বেড়িয়েছেন শত শত মাইলের গ্রামবাংলার পথ-প্রান্তর, মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, কৃষকের সুখ-দুঃখের বর্ণনা শুনেছেন, গৃহস্থকে উঠানের পাশে গাছ লাগানো, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশু পালন করতে, পুকুর-জলাশয়ে মাছ চাষ করতে, নিজেদের স্বনির্ভরতার পরামর্শ দিতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। কৃষি উৎপাদনে উন্নয়নের মূল সমস্যা হিসেবে তিনি চিহ্নিত করেন শুকনো মৌসুমে পানির অভাব আর বর্ষার মৌসুমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ। শুরু করেন খাল খনন। পল্লী অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হাট-বাজারের উন্নয়নকল্পে বিভাগীয় উন্নয়ন বোর্ডগুলোর মাধ্যমে জিয়াউর রহমান পাঁচসালা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। কৃষকের সারের বিলিবণ্টন, কৃষিব্যবস্থা সহজতর করার জন্য তিনি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কিছু নতুন উদ্যোগ নিতে উদ্বুদ্ধ করেন। জাতীয় অর্থনীতিতে পাটের গুরুত্ব অনুধাবন করে গবেষণাক্ষেত্রে পাট অগ্রাধিকার পায়। বেসরকারি খাতে পাট রপ্তানির অনুমতি দেওয়ায় তখন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পাট রপ্তানি হয়।

প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতি থানায় একটি গ্রাম স্বনির্ভর করার কর্মসূচি গৃহীত হয়। ১৯৭৭ সালে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি গ্রাম স্বনির্ভর করার কর্মসূচি হাতে নেন তিনি। গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়ন এবং বেকারত্ব দূরীকরণে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপনে ব্যাপক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়। গ্রাম অর্থনীতির অবকাঠামো অপরিহার্য বিদ্যুতে, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড তাঁর অমর সৃষ্টি। পাবর্ত্য চট্টগ্রাম, হাওর এলাকা, উপকূলীয় অঞ্চলের দ্রুত উন্নয়নে আরো তিনটি বিশেষ বোর্ড গঠন করেন তিনি। শহীদ জিয়ার পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কার্যক্রম এখনো মডেল হিসেবে আফ্রিকাসহ অনেক দেশে চলমান।
জিয়াউর রহমান স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ইউনিয়ন পর্যায় থেকে আরো তৃণমূলে নিয়ে যেতে গঠন করেন গ্রাম সরকার। প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণে ন্যূনতম পর্যায়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন-প্রশাসন ও উন্নয়ন সুবিধা ছড়িয়ে দিতে গঠন করেন গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী বা ভিডিপি। আনুমানিক ৬৫ হাজার গ্রাম সরকার গঠিত হয় ডিসেম্বর ১৯৮০ সালের দিকে। নিম্ন পরিবারগুলো থেকে আসা ভিডিপি সদস্যরা জনজীবনে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সহায়তা করার পাশপাশি সারা মৌসুমে প্রয়োজনীয় পানি পাওয়ার প্রচেষ্টায় খাল খনন, পল্লী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণসহ বহুবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হন। কেন্দ্র থেকে প্রশাসনের দেওয়া নাগরিক সেবা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে জিয়াউর রহমান মন্ত্রিসভা বৈঠকগুলো অঞ্চল ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত করার পদক্ষেপ নেন। কখনো বরিশাল, কখনো বগুড়া, রাজশাহী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ অনেক স্থানে এসব বৈঠক করে প্রশাসনিক আওতাধীন এলাকাগুলোতে পরিবেশ প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য—ফসল উৎপাদন নিরাপত্তাবেষ্টনী, বনায়ন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ব্যাপক জমি সেচ ব্যবস্থাসহ টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ শুরু করেন। পর্যটনশিল্পকে বিস্তৃতি এবং প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনভিত্তিক করার বিশেষ উদ্যোগ নেন। ঢাকাকে মেট্রোপলিটন নগর ঘোষণা করাসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ফোর্স গঠন করেন। মহিলা আনসার ব্যাটালিয়ন গঠিত হয়। নাটোরে উত্তরা গণভবন প্রতিষ্ঠা করেন, বরিশালসহ আরো কয়েকটি জেলা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল নিয়ে প্রশাসনিক বিভাগ গঠন করার সিদ্ধান্ত এবং বাস্তবায়নে অগ্রগতিও তাঁর দূরদৃষ্টি নেতৃত্বের প্রকাশ।

চট্টগ্রামে শিপিং করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়, বরিশালে আইডাব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয়, চট্টগ্রামে ড্রাই ডক প্রতিষ্ঠা—এসব প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের শহর-নগরভিত্তিক ছোট ছোট উদাহরণ মাত্র। জিয়াউর রহমানের মনন ও মস্তিষ্কে ছিল গোটা বাংলাদেশের মানচিত্র। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, উপকূলীয় অঞ্চল উন্নয়ন বোর্ড, হাওর উন্নয়ন বোর্ড এর গুটিকয়েক নমুনা মাত্র।

জাতীয়কৃত লোকসানী শিল্প-কলকারখানাগুলো বেসরকারি মালিকানায় ফিরিয়ে দিয়ে একটি উদ্যম তৈরি করে দেন জিয়া। বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠানে তখন এক শিফটের স্থলে তিন শিফটে উৎপাদন শুরু হয়। ভারী ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোও নতুন উদ্দীপনায় কাজ শুরু করে। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে আয় ক্রমেই বাড়তে থাকে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো গতিশীল হয়। গার্মেন্টশিল্পে বিশেষ প্রণোদনার উদ্দেশ্যে আমলাদের আপত্তি সত্ত্বেও শহীদ জিয়া ‘বন্ডেড ওয়্যারহাউস’ এবং ‘ব্যাক টু ব্যাক’ এলসির বিশেষ ব্যবস্থা করেন। দ্রুত বিকশিত হতে থাকে গার্মেন্টশিল্প। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত, কম শিক্ষিত পরিবারের নারী সদস্যরা পরিবারের বোঝার পরিবর্তে পরিবারের স্বস্তিতে পরিণত হয়। দেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিশেষ প্রণোদনার ফলে পাটশিল্প বহুমুখী উৎপাদনে যায়, বাড়ে শিল্পভিত্তিক কর্মসংস্থান। রপ্তানিতে আসে বর্ধিত বৈশিক মুদ্রা।
উদার নীতিমালা তৈরি করার কারণে ডকইয়ার্ড নির্মাণে জমি বরাদ্দ সহজ হয়। বেসরকারি উদ্যোগে বহু ছোটবড় জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, যা আজ দেশে তৈরি জাহাজ বিদেশি ওয়ার্ক অর্ডারে নির্মাণ করে দিয়ে খ্যাতি অর্জন করছে। জেলা এবং তৎকালীন মহকুমাভিত্তিক বিসিকের মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয় এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সমন্বিত প্রচেষ্টায় শত শত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। হস্তশিল্প, নকশিকাঁথা, জামদানিশিল্প পুনর্জীবন পায়। অর্থনীতির চাকা সচল ও গতিপ্রাপ্ত হয়। শিল্পকারখানায় বিশেষ ব্যবস্থায় স্বল্প সময়ে এবং স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তার জন্য ‘বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক’ এবং আইসিবি (ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠার পর বিশেষ সেল গঠন করে শিল্প উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়। উদ্যোক্তাদের মেইনটেন্যান্স খরচ সাশ্রয়ে বড় বড় জেলা শহরে শিল্প ব্যাংকের শাখা খোলা হয়। ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের শাখা বৃদ্ধি করে প্রয়োজনীয় কারিগরি প্রশিক্ষণ সুবিধা বাড়িয়ে যুবক-তরুণদের স্বনির্ভর ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে উৎসাহিত করে আত্মকর্মসংস্থানভিত্তিক কারিগরি শিক্ষক ও উদ্যোক্তা গোষ্ঠী তৈরি করা হয় জিয়ার উদ্যমী প্রচেষ্টা ও কর্মতৎপরতায়।

শহীদ জিয়াউর রহমানই প্রথম বাংলাদেশ থেকে আধা দক্ষ, অদক্ষ ছয় হাজার শ্রমশক্তি রপ্তানি করেন ইরাকে। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবসহ আরো কিছু দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন তিনি ব্যক্তিগত কূটনৈতিক প্রচেষ্টায়। বাংলাদেশের বৈদেশিক মিশনগুলোতে ‘লেবার অ্যাটাশে পদ সৃষ্টি করে প্রশিক্ষিত কর্মসংস্থান এবং তাদের মাধ্যমে শ্রমশক্তি রপ্তানি করে জনসংখ্যার সমস্যাকে মানবসম্পদে পরিণত করেন জিয়াউর রহমান।

ভারতের সঙ্গে ফারাক্কা সমস্যার সমাধানে অগ্রগতি সাধিত হয় জগজীবন রামের সঙ্গে বন্ধুসুলভ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায়। অভিন্ন নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা পেতেও যা সহায়ক হয়। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা জনস্রোত ফেরত পাঠানো জিয়ার সফল পররাষ্ট্রনীতির মাইলফলক। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগী তথা কানেকটিভিটি বাড়াতে আঞ্চলিক সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর ঐকান্তিক পরিশ্রমে গঠিত হয় ‘দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক উন্নয়ন সংস্থা’ (সার্ক)।
মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে দেশের ট্রেড ব্যালান্স পক্ষে আনেন জিয়াউর রহমান। ইরান-ইরাক যুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তিনি মধ্যস্থতাকারী হওয়ার সম্মান পান। আল কুদস কমিটির সদস্য হয় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গভীর করে দেশের বিশাল উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে আনতে সক্ষম হন তাদের। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বৃহৎ উন্নত দেশ জাপানকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করেন। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮০ সালে প্রথমবার এই সদস্য পদ লাভ করে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সদস্য পদ লাভ করে ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৮-এ এবং ১৯৮১-তে।

একটি দেশের সামগ্রিক টেকসই উন্নয়নে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার শ্রমকে পুঁজি করা হচ্ছে আসল মুনিশয়ানার পরিচয়ে। এই মুনিশয়ানার প্রমাণ হচ্ছে দেশে প্রথম মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, যা নারীর ক্ষমতায়ন ও জাতীয় উন্নয়নে তাদের অবদান রাখার রাষ্ট্রের সুযোগ তৈরি করে দেয়। আজ দেশের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে অবদানের ক্ষেত্রে তারাও বিশাল অংশীদার।
সাংস্কৃতিক নেতৃত্বে শিশু-কিশোরদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। সরকারি টেলিভিশনে যখন রঙিন সম্প্রচার শুরু হয় তখন কিন্তু বৃহৎ প্রতিবেশী ভারত ও সাদাকালো টেলিভিশনে নতুন কুঁড়ি অনুষ্ঠান চালু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিশু-কিশোর প্রতিভা ও জাতীয় পর্যায়ে বিকাশের সুযোগ তৈরি করেন জিয়া। বোর্ডের মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘হিযবুল বহর’-এ বঙ্গোপসাগরবক্ষে ভ্রমণ তথা দেশরত্ন হওয়ার মানসিক বীজ বপন করে দিয়েছিলেন। রেডিও স্টেশনের অনুষ্ঠানে মেধাবী শিশুদের এবং রাষ্ট্রপতি জিয়ার হাসিমুখে পরস্পর ফুল ছড়াছড়ির দীর্ঘ আনন্দঘন সময় এ দেশের শিশুরা আর পেয়েছে কি?

বীর-উত্তম জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এবং রেমিট্যান্স উন্নয়নের রোল মডেলের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে খালেদা জিয়ার মাধ্যমে। বীর-উত্তম জিয়াউর রহমান আজও প্রতিচ্ছবি হয়ে জেগে আছেন

‘বাংলাদেশের ধানের শীষে জিয়া তুমি আছ মিশে’— এই পঙক্তিতে।

— লেখক যুগ্ম মহাসচিব, বিএনপি এবং সাবেক এমপি

Share this:

  • Click to print (Opens in new window) Print
  • Click to email a link to a friend (Opens in new window) Email
  • Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
  • Click to share on X (Opens in new window) X
  • More
  • Click to share on Reddit (Opens in new window) Reddit
  • Click to share on LinkedIn (Opens in new window) LinkedIn
  • Click to share on Pinterest (Opens in new window) Pinterest
  • Click to share on Tumblr (Opens in new window) Tumblr
Categories: News

The Bangladesh Chronicle

Back to top
Exit mobile version