Site icon The Bangladesh Chronicle

রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা একদমই কম বাংলাদেশে, বলছে বৈশ্বিক প্রতিবেদন

ছবির ক্যাপশান,সম্প্রতি ঢাকার প্রেসক্লাবে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের বিক্ষোভে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অধিকার চর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতা একদমই কম বলে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফ্রিডম হাউজ নামের ওই সংস্থাটির ২০২১ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ”আংশিক স্বাধীন” দেশগুলোর মধ্যে তলানিতে বাংলাদেশের অবস্থান।

এ বছর বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৩৯ (১০০ এর মধ্যে)। এর মধ্যে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অধিকারে ৪০-এ ১৫ এবং নাগরিক স্বাধীনতায় ৬০ এর মধ্যে ২৪ পেয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হচ্ছে।

গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে একই অবস্থানে থাকলেও ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪১, ও তার আগের বছর ২০১৮ সালে ছিল ৪৫ এবং ২০১৭ সালে ছিল ৪৭।

তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এটিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে।

“রিপোর্টটি অ্যাবসুলেটলি বায়াসড ও আনসাবস্টেনশিয়েটড (পুরোপুরি পক্ষপাতমূলক ও ভিত্তিহীন),” বিবিসিকে বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

Getty Images

বৈশ্বিক স্বাধীনতা সূচক ২০২১-এ বাংলাদেশ

  • ৩৯/১০০স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের স্কোর
  • রাজনৈতিক অধিকার সূচকে স্কোর১৫/৪০
  • নাগরিক স্বাধীনতা সূচকে স্কোর২৪/৬০

সূত্র: ফ্রিডম হাউজ

এই স্কোরের অর্থ কী – ‘স্বাধীন নয়’, ‘আংশিক স্বাধীন’ ও ‘স্বাধীন’

যেসব দেশ ও অঞ্চলের স্কোর গড়ে ১ থেকে ৩৪ এর মধ্যে, তাদের ‘স্বাধীন নয় (not free)’, ৩৫ থেকে ৭১ হলে তাদের ‘আংশিক স্বাধীন (partly free)’ এবং ৭২ এর বেশি হলে তাদেরকে ‘স্বাধীন (free)’ হিসেবে রিপোর্টে বলা হচ্ছে।

যেমন তিব্বত অঞ্চল, সিরিয়া ও দক্ষিণ সুদান ১ স্কোর নিয়ে, ইরিত্রিয়া ২ স্কোর নিয়ে, উত্তর কোরিয়া ৩ স্কোর, সোমালিয়া ও সৌদি আরব ৭ স্কোর নিয়ে ‘স্বাধীন নয়’ দেশের তালিকায় নিচের দিকে রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ২৭ স্কোর নিয়ে আফগানিস্তান, ২৭ ও ২৮ স্কোর নিয়ে যথাক্রমে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অঞ্চল ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অঞ্চল ‘স্বাধীন নয়’ তালিকায়। আর ৩৭ স্কোর নিয়ে পাকিস্তান ‘আংশিক স্বাধীন’ দেশের তালিকায় তলানিতে স্থান পেয়েছে। এরপরেই বাংলাদেশের অবস্থান (স্কোর ৩৯)।

তবে সবচেয়ে ‘স্বাধীন’ দেশ হিসাবে তালিকায় রয়েছে সুইডেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড (স্কোর ১০০)। এরপরে ৯৯ স্কোর নিয়ে আছে নিউজিল্যান্ড, ৯৮ স্কোর নিয়ে আছে কানাডা, উরুগুয়ে ও নেদারল্যান্ড।

এছাড়া ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির স্কোর ৯৪, যুক্তরাজ্যের স্কোর ৯৩, ফ্রান্সের স্কোর ৯০, যুক্তরাষ্ট্রের স্কোর ৮৩, ভারতের স্কোর ৬৭, তুরস্কের স্কোর ৩২, রাশিয়ার স্কোর ৩২, ইরানের স্কোর ১৬, এবং চীনের স্কোর ৯।

আরো পড়ুন:

কীভাবে এই স্বাধীনতার মূল্যায়ন?

সংস্থাটির গবেষণা প্রতিবেদনে দুটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে – রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতা।

রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও স্বচ্ছতা, রাজনৈতিক প্লুরালিজম বা বহুত্ববাদ ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ, সরকারের কার্যকারিতা, নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থা, ক্ষমতার ব্যবহার ও স্বচ্ছতা সম্পর্কিত নানা বিষয়।

অন্যদিকে নাগরিক স্বাধীনতার মধ্যে রয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিশ্বাস, মানবাধিকার সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা, আইনের শাসন ও বিচার ব্যবস্থা, ব্যক্তি স্বাধীনতা।

এসব বিষয় পর্যালোচনা করে এমন মূল্যায়ন করা হয়েছে।

Exit mobile version