Site icon The Bangladesh Chronicle

যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্বেচ্ছা নির্বাসনে’ সাকিব

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান যুক্তরাষ্ট্রে একটি হোটেলে করোনাভাইরাস সংক্রামক রোধ করতে স্বেচ্ছা নির্বাসন গ্রহণ করেছেন। এসময়ে তিনি নিজের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করবেন না বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়ক তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিওবার্তায় শনিবার এসব তথ্য দিয়েছেন। বার্তায় তিনি এ ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন সবাইকে।

সাকিব বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাসকে মহামারী বলে আখ্যায়িত করেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আপনারা এরই মধ্যে জেনেছেন, আমাদের দেশে কয়েকজন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। আমাদের এখনই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সতর্কতাই পারে দেশকে আর আমাদের সুস্থ রাখতে।

তিনি বলেন, কিছু সহজ পদ্ধতি মেনে চললে আমরা এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারব। আমাদের দেশকেও মুক্ত রাখতে পারব। যেমন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় সঠিক শিষ্টাচার মেনে চলা। বিদেশফেরত যদি কেউ থাকে, তবে তার নিজেকে ঘরে রাখা এবং যেন ঘরের বাইরে না যান, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে, আত্মীয় স্বজন বা বাইরের মানুষ আপনার সঙ্গে এসে যেন দেখা করতে না পারেন। ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে যা খুবই জরুরি।

করোনা সতর্কতার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হোটেলে নিজেকে ‘আইসোলেটেড’ করে রেখেছেন উল্লেখ সাকিব বলেন, আমি এইমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছালাম। যদিও প্লেনে সবসময় ভয় কাজ করেছে। তবুও চেষ্টা করেছি, নিজেকে কিভাবে জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। যখন এখানে পৌঁছালাম, আমি সোজা একটি হোটেলের রুমে উঠেছি। আমি ওদেরকে অবগত করেছি, এখানে থাকব কিছুদিন। আমি যেহেতু ফ্লাই করে এসেছি, আমার একটু হলেও রিস্ক আছে। তাই আমি নিজেকে আইসোলেটেড করে রেখেছি। যে কারণে আমি আমার বাচ্চার সঙ্গে দেখা করিনি। এটা অবশ্যই আমার জন্য কষ্টের।

তিনি আরও বলেন, তবুও আমার কাছে মনে হয়, আমার এ সামান্য স্যাক্রিফাইসটুকু করতে পারলে অনেক দূর এগুতে পারব। সো, এ কারণেই আমাদের দেশে যারা বিদেশ থেকে এসেছেন, তাদের সবারই ছুটি অনেক কম থাকে। তারা চায় আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে, ঘোরাফেরা করতে, আড্ডা দিতে কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে একত্রিত হতে। যেহেতু আমাদের সময়টা অনুকূলে নয়, আমি সবাইকে রিকোয়েস্ট করব এ নিয়মগুলো যেন সবাই মেনে চলেন। কারণ, এ সামান্য স্যাক্রিফাইসটুকু পারে আমাদের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে, সুস্থ রাখতে এবং আমাদের নিজেদেরকেও সুস্থ রাখতে। আশা করি, সবাই আমার এ কথাগুলো শুনবেন এবং কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে, এগুলো সম্পর্কেও অবগত হবেন এবং সেভাবে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবেন।

তবে, মানুষকে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ করেছেন সাকিব। তিনি বলেন, আর একটা কথা অবশ্যই বলতে চাই, কেউ আতঙ্কিত হবেন না। আমার মনে হয় না এটা কোনো ভালো ফল বয়ে আনতে পারবে। আমি খবরে দেখেছি, অনেকে ৩, ৪, ৫ বা ৬ মাস পর্যন্তও খাবার সংগ্রহ করছেন। আমার ধারণা, খাবারের সংকট কখনই হবে না, ইনশাআল্লাহ্‌। আমরা কেউ না খেয়ে মারা যাব না। তাই আমরা আতঙ্কিত না হই। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্তই পারে এ থেকে রক্ষা করতে। সেটা আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই সম্ভব। আশা করি, সবাই ভালো থাকবেন এবং প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভ্রমণ বা বাড়ির বাইরে বের হবেন না।

জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় এখন সবধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ আছেন সাকিব। গেল অক্টোবরে তাকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয় আইসিসি। তবে দোষ স্বীকার করায় এক বছর স্থগিত করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবরেই ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি।

Source: Jugantar

Exit mobile version