Site icon The Bangladesh Chronicle

যুক্তরাষ্ট্রে এক বাড়িতে ৬ বাংলাদেশীর লাশ, হত্যার ধারাবিবরণী

সোমবার ভোর থেকেই ডালাসে বসবাসরত বাংলাদেশী অনেকে বাড়িটির সামনে জমায়েত হয়েছেন – ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরের একটি বাড়ি থেকে ছয়জন বাংলাদেশীর লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে ফোনকল পেয়ে পুলিশ ডালাসের একটি বাড়ি থেকে লাশগুলো উদ্ধার করে। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা সবাই বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ও একই পরিবারের সদস্য।

পুলিশের বক্তব্য, ওই দু’ভাই বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন ছিলেন। ঘটনার আগে তাদের একজন ফেসবুক নোটে তা উল্লেখ করেছেন। দু’ভাইয়ের মধ্যে ছোটজন ফেসবুকে দীর্ঘ নোটে তাদের বিষণ্ণতায় ভোগার ইতিহাস, হত্যার পরিকল্পনা ও ঘটনা সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন।

নাহিদা আলী আরো বলেন, বিষণ্ণতার জন্য তারা দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসাও নিয়েছে বলে ছোট ছেলেটি তার নোটে লিখেছেন। যদিও পরিবার থেকে এসব কখনো অন্যদের সাথে শেয়ার করেনি।

বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকালে নিউইয়র্ক থেকে বিবিসির সংবাদদাতা লাবলু আনসার জানান, কিছুক্ষণ আগে ঘটনাস্থল থেকে লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেয়া হয়েছে। এ সময় স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে যে গত শনিবার এই হত্যাকাণ্ড ও আত্মহত্যার সংঘটিত হয়েছে বলে তাদের ধারণা।

পরিবারের ছোট ছেলে ফেসবুকে তাদের আত্মহত্যা ও অন্যদের হত্যার ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে উল্লেখ করে টেক্সাসের পুলিশ এটিকে হতাশার ধারাবিবরণী হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ওই নোটে ছোট ছেলে লিখেছেন যে তিনি ২০১৬ সাল থেকে বড় ধরনের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত। এমনকি এর জের ধরে কখনো কখনো নিজেই নিজের হাত পা কেটে স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তার বড় ভাইও বিষণ্ণতায় আক্রান্ত বলেও নোটে উল্লেখ করা হয়।

লাবলু আনসার জানিয়েছেন, ফেসবুকে ছোট ছেলে যা লিখে গেছেন তাতে তারা দু’ভাই মিলেই হত্যার পরিকল্পনা করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আত্মহত্যাকারী দু’ভাই ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অস্টিনের শিক্ষার্থী ছিলেন।

তারা তাদের বোনকে নিউইয়র্ক থেকে ডেকে নেয় পারিবারিক গেট টুগেদারের জন্য। আর তার নানী গত মাসে বাংলাদেশে ফেরার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ফেরতে পারেননি।

লাবলু আনসার জানান, পুরনো ঢাকার এই পরিবারটি আট বছর ধরে টেক্সাসে বসবাস করছিল। এর আগে তারা নিউইয়র্কে থাকতো। তাদের পরিবারের আরো সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। হত্যার খবর পেয়ে তারা ডালাস শহরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

লাবলু আনসার বলেন, ফেসবুক নোটে এমনকি ছোট ছেলে বর্ণনা করেছেন যে কিভাবে তারা বন্দুক সংগ্রহ করেছেন। নোটে উল্লেখ করা হয়েছে, বড় ভাই গেলেন দোকানে। বললেন যে বাড়ির নিরাপত্তার জন্যে বন্দুক দরকার। দোকানদার কয়েকটি ফরম ধরিয়ে দিলেন। স্বাক্ষর করলেন ভাই। এরপর হাতে পেলাম কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি, যা দিয়ে নিজের কষ্ট ও পরিবারের কষ্ট সহজে লাঘব করা যাবে।

এ দিকে এ ঘটনা জানাজানির পর সোমবার ভোর থেকেই ডালাসে বসবাসরত বাংলাদেশী অনেকে ঘটনাস্থলে বাড়িটির সামনে জমায়েত হয়েছেন।

নাহিদা আলী বলেছেন, ময়নাতদন্তের পর পুলিশের কাছ থেকে লাশ ফেরত পাওয়ার পর তাদের দাফনসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।

সূত্র : বিবিসি

Exit mobile version