Site icon The Bangladesh Chronicle

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের জিজ্ঞাসা : সমঝোতার সুযোগ আছে কিনা?

ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষকদলের প্রতিনিধিরা  সোমবার সিরিজ বৈঠক করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে। এসব বৈঠকে তারা জানতে চেয়েছেন আগামী নির্বাচন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো সুযোগ আছে কিনা। বিদ্যমান ব্যবস্থার বাইরে নির্বাচনকালীন সরকার হতে পারে কিনা এমন বিষয়ও তারা নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। গতকাল সকালে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। বিকালে বৈঠক করেন সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক দল আওয়ামী লীগের কাছে জানতে চেয়েছে নির্বাচন ইস্যুতে সমঝোতার সুযোগ আছে কিনা। জবাবে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধান লঙ্ঘন করে সমঝোতার সুযোগ নেই। ওদিকে জাতীয় পার্টির নেতাদের কাছেও তারা জানতে চেয়েছেন বিদ্যমান ব্যবস্থার বাইরে নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো সুযোগ আছে কিনা।

তারা বলেছেন, অতীতে এমন সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকারে আমন্ত্রণ জানানো হলে জাতীয় পার্টি বিবেচনা করবে বলেও দলটির নেতারা বলেছেন।

সমঝোতার সুযোগ আছে কি না আওয়ামী লীগের কাছে জানতে চেয়েছে মার্কিন প্রতিনিধিদল: 
নির্বাচনের প্রশ্নে ছাড় দেয়া বা সমঝোতা করার সুযোগ আছে কিনা এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছে মার্কিন প্রতিনিধিদল। সংবিধান লঙ্ঘন করে কোনো ছাড় বা সমঝোতার সুযোগ নেই বলে তাদের জানানো হয়েছে। রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া বৈঠক চলে আড়াইটা পর্যন্ত।  বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়া দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত অংশ নেন। বৈঠক শেষে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের পক্ষ থেকে সেখানে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কিছু বলা হয়নি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৈঠকে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা তুলে ধরেন। বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধিদল এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা অন্যদের মতো আমাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন ১২ সদস্যবিশিষ্ট এই প্রতিনিধিদল। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা হয়েছে।

বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা আমাদের থেকে জানতে চেয়েছে, নির্বাচন এর প্রশ্নে কোনো কমেপ্রামাইজ অ্যান্ড অ্যাডজাস্টমেন্টের সুযোগ আছে কিনা? আমরা বলেছি, বিরোধীদের দাবি শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিতে হবে- সংবিধান লঙ্ঘন করে এসব দাবি মানা সম্ভব নয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে ছাড়, সমঝোতা বা আপস সম্ভব নয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়। প্রতিনিধিদলকে জিজ্ঞাসা করেছি, কেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন? তিনি কি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন, নাকি জনগণের ঢল নেমেছে রাস্তায় যে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় নিতে হবে। তিনি বলেন, তাদের কথাবার্তা পজিটিভ মনে হয়, বায়াস মনে হয়নি। আমরা দেখেছি, টেলিভিশন টকশোতে উপস্থাপক পক্ষ নিয়ে ফেলেন, কিন্তু এ প্রতিনিধিদল কারও পক্ষে মনে হয়নি। ভায়োলেন্সের আশঙ্কা আছে কিনা পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিসহ বিভিন্ন দল যা বলেছে, আমরা তাদের জানিয়েছি। আইনের ভুল ব্যাখ্যা ও তথ্যের সঠিকতা নিয়েও জানিয়েছি। এমন গুজব তারা ছড়িয়েছে, তার জবাব তো আমাদের দিতেই হয়। তারা এখানে মধ্যস্থতা করতে আসেনি। একটা অবাধ সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন চায়। আমরা বলেছি, এটা আমরাও করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য এসেছেন। অন্যদের মতো আমাদের সঙ্গে বসেছে। নির্বাচন নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। তাদের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা বলেছি।  আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে চায়, তা প্রতিনিধিদলকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, সরকার গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে ৮২টি সংস্কার করেছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে জাতির কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে অঙ্গীকার, সে বিষয়েও প্রতিনিধিদলকে বলেছেন। দেশের ৭০ ভাগ ভোটার শেখ হাসিনাকে ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে বলে আইআরআইয়ের জরিপে উঠে এসেছে, সেই তথ্য বৈঠকে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক?-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টার ওই বৈঠক হয় ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে তাদের একদফা দাবির সমর্থনে যুক্তি তুলে ধরেন বিএনপি’র নেতারা। বৈঠকে আলোচনার মধ্যে বিএনপি’র দাবির বিষয়টি এসেছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। বিএনপি’র দাবির প্রসঙ্গে প্রতিনিধিদলকে কী জানিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রথমত: বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো মৃত একটি ইস্যুকে সামনে এনেছে। তাদের একদফা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি, নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে। এসব দাবির মুখে কীভাবে সমঝোতা হবে। বিএনপি বা বিরোধী দলের যেসব দাবি এখন চলছে, সে বিষয়ে প্রতিনিধিদল একটি কথাও বলেনি।

শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: বিএনপি 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে ঢাকা সফররত মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলকে জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল সকালে গুলশানস্থ চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেড় ঘণ্টাব্যাপী মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান বিএনপি’র প্রতিনিধি দলের সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আজকে বাংলাদেশের নির্বাচন শুধু দেশের মধ্যে নয়, সারা বিশ্বেই প্রশ্নবিদ্ধ। বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়, সারা বিশ্বও একইভাবে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়। এরই অংশ হিসেবে এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল এসেছিল, সবার সঙ্গে কথা বলেছে। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নিলো আগামী নির্বাচনে তারা পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না। কারণ, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। আমরা বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলেছি, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতির কোনো উন্নয়ন হয়নি, বরং আরও অবনতি হয়েছে। গত কয়েকটি নির্বাচনে তারা ভোটাধিকার হরণ করেছে। এখন ভোট চুরির প্রকল্প আরও শক্তিশালী হয়েছে। দমন-নিপীড়ন আরও বেড়েছে।

বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদল কী জানতে চেয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ঘুরেফিরে একটাই প্রশ্ন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও আন্তর্জাতিকমানের বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে কিনা, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হলে কী প্রয়োজন? শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা ভোট চুরির একটি প্রকল্প নিয়েছে, যেটিকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এখান থেকে মুক্ত হতে হলে শেখ হাসিনার অধীনে যে নির্বাচন হবে, সেটি বাতিল করতে হবে।

বৈঠকে আসলে আলোচনা কী হয়েছে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্ব তো একটা কথা বলেই যাচ্ছে গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিকমানের নির্বাচন। তাদের এই কথা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি একই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্ব সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেই কাজ শেষ করছে না, তারা অ্যাকশনে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তারা তো এসেছে পর্যবেক্ষণের জন্য। যেমন এসেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা এ দেশের জনগণের মতামত নেবে। পরে সিদ্ধান্ত জানাবে।

বিএনপি’র প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা: 
জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। বৈঠকে বারবার নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি উঠে আসে। পর্যবেক্ষক দল নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে জাতীয় পার্টির কাছে জানতে চায়। বৈঠক শেষে পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়নি। প্রস্তাব পেলে বিবেচনা করা হবে।

জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন দলটির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর রানা মোহাম্মদ সোহেল (অব.), ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরুর মওলা।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে রানা মোহাম্মদ সোহেল মানবজমিনকে বলেন, তারা এসেই আমাদের প্রথমে জানিয়ে দিলেন, বৈঠকের উদ্দেশ্য সরকারকে পরামর্শ দেয়া। তারা বললেন, বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এজন্য নির্বাচনের বিষয়য়ে কী পরামর্শ দিলে ভালো হয় এজন্যই তিন দলের (আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি) সঙ্গে বৈঠক করছি। এরপর আমাদের কাছে নির্বাচন বিষয়ে তারা জানতে চাইলেন। আমরা বললাম, বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। মানুষের ভোটের যে অধিকার তা নিয়ে আস্থাহীনতা তৈরি হবে সেটা আমরা বলেছি। তারা বলেন, জাতীয় সরকারের বিষয় সংবিধানে আছে কিনা? তখন আমরা বলেছি, কখন জাতীয় সরকার সংবিধানে ছিল। কখন বাদ পড়লো এসব।

আলোচনা শেষে জিএম কাদের বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা আছে। বিএনপি নির্বাচন করবে না, তারা আন্দোলন করবে- সেখানে সহিংসতা হতে পারে। নির্বাচন নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। এসব বিষয় নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ কীভাবে নিশ্চিত করা যায় এসব বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছেন। তারা ইনক্লুসিভ নির্বাচন চাচ্ছেন। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে ফেয়ার বা আন ফেয়ার হলো তা বোঝা যায় না।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে যাবো না, এমন সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে, আমরা পরিবেশ-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা সামনের অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেবো। দলীয় ফোরামে আমাদের আলোচনা হয়েছে, আমরা সুুুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের এমন কোনো প্রস্তাবের কথা আমরা জানি না। এমন প্রস্তাব এলে তা যদি গ্রহণযোগ হয়, তবেই আমরা বিবেচনা করবো। আমাদের সর্বশেষ প্রেসিডিয়ামের সভায়ও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা আরও কিছুদিন পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে চাই।
জিএম কাদের বলেন, এনডিআই (ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট) এবং আইআরআই (ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট) প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা কথা হয়েছে। তারা আমাদের নির্বাচনপূর্ব পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে এসেছেন। নির্বাচনে কোন কোন ক্ষেত্রে অনিয়ম হয় এবং তা কীভাবে রোধ করা যায় সে বিষয়ে আমাদের মতামত জানতে চেয়েছেন। আমাদের দেশে কখন কীভাবে নির্বাচন হয়েছে তাও জানতে চেয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা, তা যাচাই করতে এই প্রতিনিধিদলটি ঢাকা সফরে এসেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক-নির্বাচন সমীক্ষা মিশন (পিইএএম) পরিচালনা করছে।

পর্যবেক্ষণকারী প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক পর্যবেক্ষক, নাগরিক সংগঠন এবং নারী ও তরুণদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবে। বাংলাদেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আলোচনা করবেন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রতিনিধি দলটির আজ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

Exit mobile version