দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএসে তাঁর বাসভবনে আজিজ আহমেদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাদির কল্লোল।
জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ: সকালে আমার একজন শুভাকাঙ্ক্ষী আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এরপর আমি দেখলাম যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের তাদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এতে আমি অবাক ও মর্মাহত হয়েছি। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক।
আজিজ আহমেদ: এ অভিযোগ সত্য নয়। আমার কথা হলো আল-জাজিরা (কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ) ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামে তথ্যচিত্র প্রচার করেছিল। সেখানে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, এখন যুক্তরাষ্ট্র একই অভিযোগ এনেছে। ফলে এ দুটি একই সূত্রে গাঁথা বলে আমি মনে করি।
আজিজ আহমেদ: এ দুটি অভিযোগই আল-জাজিরা প্রচার করেছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র এখন আনল। আমি সে সময়ও বলেছি এবং এখনো বলছি, এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমার যে ভাইয়ের কথা বলা হচ্ছে, সে ২০০২ সালের পর থেকেই বাংলাদেশে নেই। তাকে আমি সরকারি পদ ব্যবহার করে সাহায্য করেছি, বিষয়টা আমি মানতে নারাজ। আর আমার এই ভাই যখন রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পায়, তখন সেই চিঠিতে বলা ছিল, তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশে মামলা ছিল। সে আওয়ামী যুবলীগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যার জন্য তাকে ক্ষমা করার ক্ষেত্রে ওই রাজনৈতিক উদ্দেশে মামলা করার বিষয়টা লেখা ছিল। এটা হয়েছিল আমি সেনাপ্রধান হওয়ার কয়েক মাস পর। আমার আরেক ভাইকে ক্ষমা করা হয়েছিল আমি সেনাপ্রধান হওয়ার আগে। এগুলোর সঙ্গে আমার পদ ব্যবহার করে প্রভাব খাটানোর কোনো বিষয় ছিল না।
আজিজ আহমেদ: না না, আমি সহযোগিতা করিনি। আমি সেনাপ্রধান হওয়ার অনেক আগে এগুলোর প্রক্রিয়া হয়েছে। অভিযোগ তো অনেক কিছু করা যেতে পারে। কিন্তু সেই অভিযোগের কোনো ভিত্তি বা প্রমাণ নেই। কেউ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
প্রথম আলো :
আপনি সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে এবং এর আগে বিজিবির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু আপনাকে ঘিরে কেন এমন বিতর্ক সৃষ্টি হলো।
আজিজ আহমেদ: দেখেন, এই বিতর্ক ব্যক্তিকেন্দ্রিক। এটা ব্যক্তি হিসেবে আমাকে বিতর্কিত করার জন্য করা হয়েছে।
আজিজ আহমেদ: কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। তবে হতে পারে আমি দুইটা সময় দুইটা বাহিনীর প্রধান ছিলাম। একটা হলো আমি ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনসহ দেশে অনেক কিছু হয়েছে। এরপর ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আমি সেনাপ্রধান ছিলাম। তখন দেশে করোনাভাইরাস মহামারি এবং নির্বাচন হলো। এ বিষয়গুলোও কারণ হতে পারে।
আজিজ আহমেদ: না, এখানে নৈতিক দায় আমি কেন নেব। এখন কেউ যদি আমাকে পছন্দ না করে কোনো অভিযোগ আনে, তার দায় আমি কেন নেব।
আজিজ আহমেদ: আমি কারও দিকে বিষয়টা নিতে চাই না। তবে সরকার যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন সময় আমাকে দুটি বাহিনীতে নিয়োগ করেছিল। ফলে হয়তো সরকারকেও বিব্রত করে বা কিছুটা হেয় করে। কোনো প্রমাণ ছাড়া যখন আমাকে নিয়ে এমন অভিযোগ এনেছে, সেটা হয়তো–বা সরকারকে বিব্রত করে।
prothom alo