মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে স্বপ্নের একটা টেস্ট ম্যাচই গেছে বাংলাদেশের। বিশেষ করে পেস বোলারদের পারফরম্যান্স ছিল গর্ব করার মতো। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের সেই সাফল্যে উজ্জীবিত পেসাররা আজ শুরু ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের সবুজ উইকেটে আরও ভালো কিছুর আশাই করছিলেন।
টসে জিতে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক তাই ফিল্ডিং করারই সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে যেন আজ প্রথম দিনে মুদ্রার আরেকটা পিঠও দেখে ফেললেন তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলামরা। কথাটা বলেছেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন।
পিচে সবুজ ঘাস আছে। এটা দেখে ম্যাচ শুরুর আগের দিন বাংলাদেশ দল ধরেই নিয়েছিল, এখানে বল বাউন্স করবে, বল একটু এদিক-সেদিক করবে। কিন্তু পিচ ‘ধোঁকা’ দিয়েছে বলেই মনে করেন গিবসন, ‘আমরা যেমন আশা করেছিলাম, পিচ সে রকম ছিল না।’
এটুকু বলে আবার বোলারদের একটু সমালোচনাও করেছেন তিনি, ‘এটাও ঠিক যে যতটা ভালো বোলিং করার কথা ছিল, তা আমরা করতে পারিনি। যখনই আমরা ফুল লেংথে বোলিং করেছি, বল এদিক–ওদিক করেনি।’
ক্রাইস্টচার্চে ইনিংসের শুরু থেকেই বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। কিউইরা এ ম্যাচে তুলনামূলক ভালো ব্যাটিং করেছেন বলে মনে করেন গিবসন, ‘আমি মনে করি, তারা অনেক ভালো খেলেছে। অন্যদিকে আমরা গত সপ্তাহে যতটা ভালো খেলেছিলাম, আজ সেটা পারিনি। ল্যাথাম তো অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। সকালে ইনিংসের শুরুতে বল ছাড়ার কাজটা ও ভালো করেছে। সে আমাদের এমন বল করতে বাধ্য করেছে, যে রকম বল ওরা খেলতে পারে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা গত সপ্তাহের মতো চাপ তৈরি করার জন্য যথেষ্ট ভালো বোলিং করতে পারিনি। কনওয়েও অবিশ্বাস্য ছন্দে আছে।’
অল্প সময়ের ব্যবধানে তাই বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কঠিন রূপটাও দেখে ফেলেছে বলে মনে করেন গিবসন, ‘আজ আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনের উত্থান–পতন দুটিই দেখে ফেলেছি।’
কেন এমন হলো, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে গিবসন যোগ করেছেন, ‘গত সপ্তাহে আমরা উত্থান দেখেছি। আমরা সম্ভবত গত সপ্তাহের মানসিক ও শারীরিক ধকলটা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমরা আজ জায়গা মতো বল ফেলতে পারিনি। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড গত সপ্তাহে ধাক্কা খেয়েছে। আজ দেখিয়েছে, ওরা বিশ্বের সেরা দল।’
তবে প্রথম দিনের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীকাল ইবাদত–তাসকিনরা ভালো বোলিং করবেন বলে আশা গিবসনের।
এর জন্য শিষ্যদের কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তিনি, ‘আজ যা হয়েছে, তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে আমাদের। আমরা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে বেশি বল করেছি। যখনই আমরা লেংথ মিস করেছি, ওরা কাট শট খেলেছে। আবার যখন বেশ ফুল লেংথে বল করেছি, ওরা ড্রাইভ খেলেছে।’ দ্বিতীয় দিনের জন্য গিবসনের পরামর্শ, ‘আমার একটা মন্ত্র এ রকম, লেংথ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আপনি রানও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।’
কুঁচকির চোটে পড়ায় এই টেস্টে খেলছেন না অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। তবে মুশফিকের না থাকাটা দলে খুব একটা প্রভাব ফেলছে না বলেই মনে করেন গিবসন, ‘গতকাল সে কুঁচকিতে চোট পেয়েছে। তবে তার অনুপস্থিতিতে আমাদের মনোযোগ বিচ্যুত হয়েছে বলে মনে হয় না।’
মুশফিককে দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় মেনেও গিবসন বলেছেন, ‘পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট খেলোয়াড় আমাদের আছে।’