নতুন ও পুরাতন বিভিন্ন মামলায় বছরজুড়েই গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। তবে ২৮শে অক্টোবর বিএনপি’র মহাসমাবেশে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের পর ডজন ডজন মামলায় শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতাসহ, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হন। বাদ যাননি মাঝারি ও নিচের সারির নেতাকর্মীরা। এসব নেতাকর্র্মীদের অনেকেই এখন কারাবন্দি।
গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেক নেতা এখনো ঘরবাড়ি ছাড়া। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পুলিশের নজর এড়াতে। জাতীয় নির্বাচনের আগে কারাবন্দি নেতাকর্মীরা একাধিকবার জামিনের আবেদন করে সফল হননি। বার বারই তাদের জামিন নাকচ করা হয়। নেতাকর্মীদের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে ব্যানার, পোস্টার টানিয়ে তাদের প্রিয় নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছেন।
গতকাল সরজমিন দেখা যায়, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রবেশমুখে মাথার উপর টানানো হয়েছে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নার মুক্তির দাবিতে বড় একটি ব্যানার। গুলশান থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়ার পক্ষ থেকে এটি টানানো হয়েছে। তার পাশেই আরেকটি ব্যানার বনানী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. আলাউদ্দীন আহম্মেদ। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মুছাব্বিরের মুক্তির দাবি করে ব্যানারটি টানিয়েছেন। হাতিরঝিল থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের মো. মহসিনের ব্যানারেও মুছাব্বিরের মুক্তির দাবি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র কিছুদিন আগের ছবি সম্বলিত পোস্টারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, মোহাম্মদ মোহন, ইউনুস মৃধা, আব্দুস সাত্তার, তানভীর আহমেদ রবিন, হাজী মনির হোসেন, আরিফুর রহমান নাদিমসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি করা হয়েছে।
২০ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের মুক্তির দাবি করে ব্যানার লাগিয়েছেন। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর থানা বিএনপি, মহানগর উত্তর বিএনপি’র একাধিক ব্যানারে এই দুই নেতার মুক্তির দাবি করা হয়েছে। কামরাঙ্গীচর থানা যুবদলও আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে সরকারের ফরমায়েশি রায় মানি না, মানবো না, অবিলম্বে মুক্তির দাবি লেখা একটি ব্যানার টানিয়েছেন। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকনসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবি করে ব্যানার টানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের কিছুদিন আগের একটি ব্যানারে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদের মুক্তির দাবি করতে দেখা গেছে। তারেক জিয়ার প্রজন্ম দল কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যানারে বিএনপি’র সকল কেন্দ্রীয় নেতার ছবি দিয়ে মুক্তির দাবি করা হয়েছে।
সরজমিন দেখা যায়, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক আঃ করিম সরকারের মুক্তির দাবি করে ব্যানার টানিয়েছে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি। কানাডা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আসিফ যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন দেওয়ানের বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে একটি ব্যানারে। এ ছাড়া যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, ছাত্রদল মহানগর পূর্বের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জাকিরসহ আরও একাধিক নেতার মুক্তি চাই ব্যানার চোখে পড়েছে। ফেনী জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দাউদুল ইসলাম মিনার চেয়ারম্যান ও মোড়লগঞ্জ শরণখোলার কাজী খায়রুজ্জামান শিপন এবং বিএনপি’র মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের মুক্তির দাবি করে ব্যানার টানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
মানব জমিন