Site icon The Bangladesh Chronicle

মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিতে বাংলাদেশের জন্য ৩০১টি সুপারিশ

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার পর্যালোচনায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ১১০টি দেশের তুলে ধরা সুপারিশমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩০১টি সুপারিশ প্রতিবেদন আকারে ইউপিআর সভায় উপস্থাপন করা হয়। অনেকগুলো দেশ থেকে একই বিষয়ে একই ধরনের সুপারিশ আসায় সংখ্যাটি এত বড়। প্রকৃত সুপারিশ এত বেশিসংখ্যক হবে না।

এই পর্যালোচনা সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিলেও সুপারিশমালা অনুমোদনের সভায় তিনি ছিলেন না। তাঁর পরিবর্তে সভায় বক্তব্য দেন জেনেভায় জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমান। সুফিউর রহমান যেসব দেশ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করেছে, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ এসব সুপারিশ পর্যালোচনা করে তার সিদ্ধান্ত আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় মানবাধিকার পরিষদের ৫৫তম অধিবেশনের আগেই জানিয়ে দেবে।

জেনেভায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে সর্বজনীন নিয়মিত পর্যালোচনার (ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ-ইউপিআর) চতুর্থ চক্রে এসব সুপারিশের মধ্যে আছে, বহুল আলোচিত গুমবিষয়ক সনদ ও নির্যাতনবিরোধী সনদের অতিরিক্ত চুক্তি অনুমোদন, গুমের ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত এবং দোষীদের বিচার ও সাজার ব্যবস্থা করা।

সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলোপ ও সব ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া, সাইবার নিরাপত্তা আইনের সংশোধন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সভা ও সংগঠনের অধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, মানবাধিকাররক্ষী, নাগরিক সমাজ বা এনজিও সদস্যদের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ, নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধে আইন সংশোধন।

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা, বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়ন, ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ঘোষণা, শ্রমিকদের আইএলও স্বীকৃত সব অধিকার নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

আরও পড়ুন
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলোর পক্ষ থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, ভিন্নমত দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহি না থাকার বিষয়গুলোতে বেশি জোর দিতে দেখা গেছে। তবে আইনমন্ত্রী শুধু কানাডা ও স্লোভাকিয়া বাংলাদেশের কঠোর সমালোচনা করেছে উল্লেখ করে মন্তব্য করেছেন যে ৯০ শতাংশ দেশ বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।
প্রথম আলো
Exit mobile version