মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলে ছিনতাই, ঢেকে রাখে গাড়ির নম্বর প্লেট

সপ্তাহে একদিন ভাড়া করা প্রাইভেটকার নিয়ে বের হয় দলটি। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলে ছিনতাই ও ডাকাতি। টার্গেট প্রতি রাতে অন্তত ৪ থেকে ৫টি ছিনতাই।

মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলে ছিনতাই, ঢেকে রাখে গাড়ির নম্বর প্লেট
মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলে ছিনতাই, ঢেকে রাখে গাড়ির নম্বর প্লেট

বুলবুল রেজা     29 January 2022

 রাজধানীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দুই ভারতীয় শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মালামাল উদ্ধার ও ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দারা বলছেন, চক্রটির সদস্য সংখ্যা ১০ থেকে ১২ জন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। গতকাল শুক্রবার রাজধানী ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করে।
তারা হলেন- মো. ফখরুল ইসলাম, মো. আলমাস, মো. সামুন, মো. আবদুল্লাহ আল ইউসুফ আহম্মেদ, মো. শাহিন, মো. বাবু ও মো. শফিকুল ইসলাম।

২৩ জানুয়ারি। ভোর ৫টা। রাজধানীর মালিবাগের সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কে থামে একটি প্রাইভেট কারটি। গাড়ি থেকে নামে তিন থেকে চারজন। ফুটপাথ ধরে এগিয়ে আসা দুইজনের পথরোধ করা হয়। সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে আবারও প্রাইভেটকার যোগে পালিয়ে যায় তারা।

পুলিশ বলছে, ওই দুই শিক্ষার্থীর নাম শাহীল আহমেদ ও আসিফ ইকবাল। তারা রাজধানীর মগবাজার এলাকার সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থী। ২৩ জানুয়ারি ভোরে ছুটি কাটাতে দুই সপ্তাহের জন্য ভারতে যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন তারা।

এ বিষয়ে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম। বলেন, ছিনতাইয়ের মামলা হলেও ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন ডাকাত চক্রের সদস্যরা। এই চক্রের মূল হোতা আবদুল্লাহ আল ইউসুফ আহমেদ। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় আটটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, একজন চিকিৎসকের গাড়িচালক রাতের জন্য গাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন ছিনতাই চক্রের সদস্য ফখরুল ইসলামকে। ২৩ জানুয়ারি হোস্টেল থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় মগবাজারে একটি সাদা রঙের গাড়ি তাদের গতিরোধ করে। পরে মুখোশধারী ৪ জন গলায় চাপাতি ধরে তাদের সঙ্গে থাকা ১টি ট্রলি, ১টি হাতব্যাগ, ১টি ল্যাপটপ, ২টি মুঠোফোন, ৫৭ হাজার ভারতীয় রুপি ও সাড়ে ৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।

যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, চক্রের সদস্যরা সপ্তাহে এক দিন গাড়ি নিয়ে ছিনতাই করতে বের হন। যেদিন তারা বের হন সেদিন তিন থেকে চারটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান। বলেন, ছিনতাইকালে গাড়ির নম্বর প্লেট ঢেকে রাখা হয়, যাতে ধরা না পড়েন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গাড়িমালিককে চালক না জানিয়ে গাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যদের কাছ থেকে ১৮টি মুঠোফোন, ১টি ল্যাপটপ ও ২টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। এসবের মধ্যে একটি মুঠোফোন ও একটি ল্যাপটপ একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর। বাকিগুলোর মালিক খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। ভোরের ফাঁকা রাস্তায় টার্গেট খোঁজেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবি জানায়, ভোরে যখন রাস্তা ফাঁকা থাকে, তখন ছিনতাই করতে নামেন এই চক্রের সদস্যরা। বিশেষ করে, পুলিশের টহল দল নেই এমন স্থানকে ছিনতাইয়ের জন্য বেছে নেন তারা। যাতে ছিনতাই করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পারেন তারা।

পুলিশের নজরদারি কম থাকার কারণে রাতে প্রায়ই এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন চক্রের সদস্যরা। টহল পুলিশ থাকে না এমন স্থানে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে।

00:45
-02:20